মানসিক দুশ্চিন্তা কতটুকো ক্ষতির কারন হতে পারে

Spread the love

আয়না২৪ সংবাদদাতা 

অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার প্রভাব শরীরে পড়ে। আর চিন্তা করা সত্যিকার অর্থেই একটি মানসিক ব্যাধি। প্রত্যেকেই বিভিন্ন কারণে নানান সময়ে দুশ্চিন্তা করে থাকেন। ঘরে কাজ থেকে শুরু করে, অফিসে কাজের ডেডলাইন, ভালোবাসার সম্পর্ক কিংবা ব্যংক ব্যালেন্স- সবকিছু নিয়েই মাথার মধ্যে ঘুরতে থাকে নানান রকম দুশ্চিন্তা এবং চিন্তাভাবনা।  কিছু কিছু ক্ষেত্রে চিন্তা করে কাজ করা অবশ্যই ভালো। কিন্তু সব ক্ষেত্রে অহেতুক চিন্তা করা শুধুমাত্র মনের শান্তি নষ্ট করা বাদে কিছুই নয়। আপনি যদি সব ক্ষেত্রে অনেক বেশি চিন্তা ভাবনা করে কাজ করেন তবে আপনার কাজে ভুলের মাত্রা সাধারণের চাইতে বেশীই হবে। তাই যত দ্রুত সম্ভব এ সমস্যা কাটিয়ে ওঠা উচিত। কিন্তু কী করে এর হাত থেকে রেহাই মিলবে?

আমরা অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার কুফল এবং এর থেকে পরিত্রাণের উপায় নিয়ে আলোচনা করবো

 

অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার যত কুফল

# প্রবাদ আছে, ‘একবেলা আহার না পেলে মানুষ যতটা ভেঙে পড়ে তার চেয়ে দ্বিগুণ ভেঙে পড়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হলে।’ মানসিক সমস্যা তো রয়েছেই, সেই সঙ্গে শারীরিক বিভিন্ন সমস্যাও দেখা দেয়।

# দুশ্চিন্তার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে আপনার মস্তিষ্কও। যখন অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করছেন তখন আপনার শরীরে কারটিসল হরমোনের পরিমাণ বেড়ে যায়। ফলে আপনার মস্তিষ্কের স্মৃতিভ্রষ্টতা, বুদ্ধিবৈকল্য দেখা দিতে পারে।

# উচ্চ রক্তচাপ, ক্ষুধা, নিদ্রাহীনতা এমনকি বহুমূত্র রোগের অন্যতম উপসর্গ হলো মানসিক চাপ। কারটিসল হরমোনের তারতম্য এর জন্যও দায়ী।

# হৃদ্‌রোগের একটি প্রধান কারণ অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা। সুস্থ থাকার একটি উপায় হলো হাসিখুশি থাকা। কিন্তু অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা আপনার প্রাণবন্ত জীবন নষ্ট করে দেয়। আর ক্ষতিগ্রস্ত হয় আপনার হার্ট।

# বেঁচে থাকার জন্য নিত্যদিন সংগ্রাম করতে হয়। আর আপনি যদি কোনো কিছুতে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েন, তাহলে সাহসের সঙ্গে বেঁচে থাকার প্রবণতাটাই নষ্ট হয়ে যাবে, যা আপনার ব্যক্তিত্বের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।

 

এর থেকে পরিত্রাণের উপায়

# শরীরে স্বাভাবিকভাবে রক্ত চলাচলের জন্য ব্যায়ামের কোনো বিকল্প নেই। তাই চেষ্টা করুন প্রতিদিন এক ঘণ্টা ব্যায়াম করার। অন্তত হাঁটার অভ্যাস করুন। সকালে অনেকেরই অফিস কিংবা বাচ্চার স্কুলের তাড়া থাকে। আপনি চাইলে সন্ধ্যাবেলাটা বেছে নিতে পারেন। আর মনকে প্রসন্ন রাখার জন্য ব্যায়ামের পাশাপাশি যোগব্যায়ামও করে নিতে পারেন ঘরে বসেই।

# অতিরিক্ত আবেগ ক্ষতির কারণ। আর কথায় কথায় রেগে যাওয়া আপনার ব্যক্তিত্বের জন্যই নেতিবাচক। তাই যেকোনো পরিস্থিতিতেই হোক, আবেগ নিয়ন্ত্রণ করুন। প্রয়োজনে কিছুটা সময় নিয়ে ব্যাপারটি নিয়ে ভাবুন।

# পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার এবং ঘুম দুটোই সুস্থ মন ও শরীরের জন্য দরকার। তাই খাদ্যতালিকাটাও হওয়া প্রয়োজন যথার্থ। খাদ্যতালিকায় মাংসের চেয়ে শাকসবজি, ফল বেশি পরিমাণে রাখুন। আর যত কাজই থাকুক ছয় থেকে আট ঘণ্টা ঘুমিয়ে নিতে ভুলবেন না। কেননা সারা দিনে আমাদের যেই কোষগুলোর ক্ষয় হয় সেগুলোর বৃদ্ধি ঘটে এই সময়টাতে।

# পারিবারিকভাবে অনেকেই এই সমস্যাটি পেয়ে থাকেন। তাই নিজের সমস্যাকে চিহ্নিত করে নিন আগে। বুঝতে শিখুন, আপনার পরিবারের সদস্যটির এই আচরণ সঠিক নয়। নিজের জীবনে এই বিষয়গুলোই এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। সবকিছুকে হালকাভাবে নিতে শিখুন।

# ক্যাফেইন যেমন খুব দ্রুত আপনার ইন্দ্রিয়কে সজাগ করে তুলতে পারে তেমনি শরীরে কারটিসল হরমোনের পরিমাণও বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই ঘন ঘন চা-কফি খাওয়ার অভ্যাস ছেড়ে দিন।