ব্লক সরে যাচ্ছে, ভয়াবহ ভাঙনের মুখে আমতলী পৌর শহর

সেপ্টেম্বর ১, ২০১৮
Spread the love

আমতলী প্রতিনিধি
পায়রা নদীর ভাঙনে আমতলী শহর রক্ষা বাঁধের সিসি ব্লক সরে যাচ্ছে। এতে ভয়াবহ হুমকির মুখে পড়েছে বরগুনার আমতলী পৌর শহর। ভাঙ্নের তীব্রতা বৃদ্ধিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের র বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে। দ্রুত সংস্কার করা না হলে বিলীন হয়ে যাবে পাউবো অফিস, খাদ্যগুদাম, মুক্তিযোদ্ধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, লঞ্চঘাট ও ফেরিঘাটসহ বহু স্থাপনা।
জানাগেছে, ১৯৯৮ সালে আমতলী পৌর শহরকে পায়রা নদীর ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষায় ফেরিঘাট থেকে পাউবোর অফিস পর্যন্ত ১২০০ মিটার শহর রক্ষা বাঁধ প্রকল্পের অধীনে সিসি ব্লক ফেলে শহর রক্ষাবাঁধ নির্মাণ করা হয়। ওই সময় নিম্নমানের কাজ করায় অল্পদিনে মধ্যেই ব্লক সরে যেতে থাকে। ঘূর্ণিঝড় সিডর, আইলা, মহাসেন ও রোয়ানুর প্রভাবে আমতলী পৌর শহর সংলগ্ন পায়রা নদীর সিসি ব্লক সরে ও ভেঙে যায়। এতে ফেরিঘাট, লঞ্চঘাট, কাঠপট্রি, পুরাতন লঞ্চঘাট ও পানি উন্নয়ন বোর্ড এলাকা নদী বক্ষে বিলিন হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ড ২০১৪ সালে সিডর প্রকল্পের আওতায় আমতলী পৌরশহরকে পায়রা নদীর ভাঙনের হাত থেকে রক্ষায় ১২০০ মিটার ব্লক মেরামতের কাজ অন্তর্ভুক্ত করে। বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমবিইএল ১১৫ মিটার পায়রা নদীর তীর সংরক্ষণে সিসি ব্লক সংস্কার করে অবশিষ্ট কাজ না করেই চলে যায়। এতে আরো হুমকির মুখে পড়ে পৌর শহর।
শনিবার পায়রা নদী সংলগ্ন শহর রক্ষা বাঁধ এলাকা ঘুরে দেখাগেছে, পায়রা নদীর অস্বাভাবিক জোয়ারের  স্রোতের ঢেউ তীরে আঘাত হানে। এতে ব্লকগুলো সরে যাচ্ছে এবং দুর্বল অনেক ব্লক ভেঙে নদীতে বিলীন হচ্ছে। আমতলী স্লুইজগেট এলাকায় দুপাশের ব্লক সরে গেছে। বাড়ি-ঘর ভেঙে যাচ্ছে। ফেরিঘাট, শ্বশ্মানঘাট, সবুজবাগ মুক্তিযোদ্ধা প্রাথমিক বিদ্যালয়, লঞ্চঘাট ও খাদ্যগুদাম হুমকির মুখে পড়েছে।
শহর রক্ষা বাঁধ এলাকায় বসবাসকারী আবদুর রাজ্জাক হাওলাদার জানান, পূর্ব থেকেই নদী ভেঙে ব্লক সরে যেত। সিডরের প্রভাবে ব্লক সরে গিয়ে নদী ভাঙ্গনের তীব্রতা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে এ এলাকায় বসবাসরত মানুষের দূর্ভোগ আরও ঘনিভূত হয়েছে।
কালাম শিকদার বলেন, ব্লক সরে পায়রা নদীতে বিলীন হওয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ড এলাকাসহ পৌর শহর হুমকির মুখে পরেছে। অতিদ্রুত ব্লক সংস্কার করা না হলে তীর ভেঙ্গে বাড়ি-ঘর নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।
আমতলী পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান বলেন, পায়রা নদীর ভাঙনে প্রতিদিনই পৌরশহরের আয়তন ছোট হচ্ছে।  বহু স্থাপনা হুমকির মুখে পড়েছে। পুরান সিসি ব্লক সরে নদীতে বিলীন হচ্ছে। দ্রুত শহর রক্ষা বাঁধ সংস্কার করা না হলে ভয়াবহতা আরো বৃদ্ধি পাবে। তিনি আরো বলেন, এ শহরকে রক্ষায় তিন কিলোমিটার পায়রা নদীর তীরে সিসি ব্লক নির্মাণ করা প্রয়োজন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের কাছে দ্রুত সিসি ব্লক নির্মাণের দাবী জানাই।


বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহ আলম বলেন, শহর রক্ষা বাঁধের পঞ্চম স্তরের প্রজেক্টে আমতলী পৌর শহর রক্ষায় পায়রা নদীর ব্লক সংস্কারের প্রস্তবনা দিয়েছি।
পাউবোর বরগুনার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মশিউর রহমান বলেন, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ে পৌর শহর রক্ষায় প্রস্তবনা দেয়া হয়েছে। বাজেট পাওয়া গেলে কার্যক্রম শুরু করা হবে।