ইবনে সিনার নাম আমাদের সবারই কমবেশি জানা। কিন্তু তিনি কত বড় প্রতিভাধর ব্যক্তি ছিলেন তার পুরোদস্তুর হয়তো আমাদের অনেকেরই অজানা। আসুন আজ তাঁর জীবন, কর্ম এবং অন্যান্য দিকগুলো সবিস্তারে জানার চেষ্টা করি। মহান ইবনে সিনা সম্পর্কে জানাচ্ছেন–অনিন্দ্য আফরোজ।
পুরো নাম আবু আলী হোসাইন ইবনে আব্দুল্লাহ আল হাসান ইবনে আলী ইবনে সিনা।তবে তিনি ইবসে সিনা নামেই অধিক পরিচিত। তিনি ছিলেন পৃথিবীর অন্যতম এক মহান জ্ঞানী। যিনি কেবল চিকিৎসা বিজ্ঞান নয়, জ্ঞান-বিজ্ঞানের এমন কোনো ক্ষেত্র নেই, যেখানে তিনি বিচরণ করেন নি।আধুনিক যুগে পদার্পনের যে ভীত মধ্যযুগে স্থাপন হয়েছিল ইবনে সিনা সেই ভীত রচনাকারীদের অন্যতম ছিলেন। এজন্য আরব বিশ্বে তিনি করেছে আল-শায়খ আল রাঈস বা জ্ঞানীকূল শিরোমণি হিসেব অ্যাখ্যায়িত। আর পশ্চিমা বিশ্বে তিনি আভিসেনা(Avicenna) নামে সমধিক পরিচিত।
জ্ঞানের প্রতিটি শাখায় বিচরণ করলেও মূলত চিকিৎসা শাস্ত্রে তাঁর অবদান সবচেয়ে বেশি। এজন্য তাই তাঁকে Father of Modern Science বলা হয়। তবে. ইবনে সিনা কেবেই একজন চিকিৎসক ছিলেন না, তিনি একাধারে গণিতজ্ঞ, জ্যোতির্বিজ্ঞানী এমনকি দূরদৃষ্টি সম্পন্ন এক মহান দার্শনিকও ছিলেন। তিনি সারাজীবন অতিবাহিত করেছেন কেবল জ্ঞান অন্বেষণ করতে। কঠোর অধ্যবসায়ের কারণেই তিনি বিশ্বসেরা জ্ঞানী ব্যক্তিদের একজন হয়ে ওঠেছিলেন।
জন্মগ্রহণ
ইবনে সিনার জন্ম ৯৮০ খৃস্টাব্দে।বর্তমান উজবেকিস্তানের বুখারার অন্তর্গত খার্মাতায়েন জেলার এক গ্রামে তিনি জন্ম নিয়েছিলেন। তার পুরো নাম আবু আলী হোসাইন ইবনে আব্দুল্লাহ আল হাসান ইবনে আলী ইবনে সিনা। ইবনে সিনা নামের অর্থ সিনার পুত্র হলেও, তাঁর বাবা ছিলেন আবদুল্লাহ এবং মায়ের নাম সিতারা বিবি।ইবনে সিনার বাবা ছিলেন বুখারার সামানীয় সম্রাটের সরকারি কর্মকর্তা।
শিক্ষা জীবন
ছোট বেলা থেকেই তিনি ছিলেন তুখোড় মেধাবী। তাঁর মনন ও চিন্তাভাবনা ছিল সূক্ষ্ণ ও জটিল বিষয় নিয়ে। ইবনে সিনা ১০ বছর বয়সে কোরআনের হাফেজ হন। তাঁর অনন্য প্রতিভা দেখে তার বাবা তাঁকে পড়াশোনার জন্য তিন জন গৃহশিক্ষক ঠিক করে দেন। এদের মধ্যে ইসমাইল সূফি নামে এক গৃহশিক্ষক তাঁকে ধর্মতত্ত্ব, ফিকাহ শাস্ত্র আর তাফসীর বিষয়ে শিক্ষা দেন ।
ওই সময়ে ভারতীয় গণিত শাস্ত্রে বিশেষভাবে পণ্ডিত ছিলেন মাহমুদ মসসাহ নামে এক শিক্ষক। তাঁর কাছে ইবনে সিনা গণিত শাস্ত্র সম্পর্কে শিক্ষা নেন। এরপর তিনি ইসমাইলী শাস্ত্রের আইনের বিষয়ে পড়াশোন করে এতেও সমান দক্ষতা অর্জন করেন।
জ্ঞানরাজ্যে ইবনের সিনা
সমকালীন সময়ের ওই দেশের আরেকজন অন্যতম জ্ঞানী ব্যক্তি ছিলেন আল নাতেলী। ইবনে সিনা তাঁর কাছে ফিকহ শাস্ত্র, ন্যায়শাস্ত্র, জ্যামিতি এবং জ্যোতিষ শাস্ত্র বিষয়ে বিদ্যা অর্জন করেছিলেন। কিন্তু তাঁর ছাত্র ইবনে সিনার প্রতিভা ও জ্ঞানার্জনের তুমুল আগ্রহের কাছে আল নাতেলীর মত বিদ্যান ব্যক্তিও হার মানেন।
দেখা গেল জ্ঞানী শিক্ষক আল নাতেলীর কাছে এমন কোনো জ্ঞান আর অবশিষ্ট রইল না, যা তিনি তাঁর ছাত্র ইবনে সিনাকে শিক্ষা দিতে পারেন। ফলে শিক্ষক আল নাতেলী ইবনে সিনাকে স্বাধীনভাবে গবেষণা করার পরামর্শ দেন।
জ্ঞানের খুধা ইবনে সিনাকে সব সময় তাড়া করতো। জানার আগ্রহ এবং গভীর মনোনিবেশ ইবনে সিনাকে জ্ঞান সমুদ্রের অতলান্তে নিয়ে গিয়েছেল। ইউক্লিড ও টলেমির মত বিজ্ঞানীর লেখাও পড়ে তিনি ফেলেছিলেন। অ্যারিস্টটলের মেটাফিজিক্স, দর্শন শাস্ত্রও সম্পূর্ণ আত্মস্থ করে ফেলেন তিনি।তাঁর জীবনের একটি অন্যতম দিক ছিল তিনি যখন কোনো বিষয় বুঝতে পারতেন না তখন তিনি মসজিদে নফল নামাজ আদায় করতেন। যতক্ষণ না সমস্যার সমাধান পেতেন ততক্ষণ নামাজে থাকতেন।
চিকিৎসক ইবনে সিনা
তাঁর বয়স যখন ১৬, তখন ইবনে সিনার চিকিৎসক হওয়ার নেশায় বুঁদ হন। এতে তিনি সফল হলেন। মাত্র ১৮ বছর বয়সেই তিনি পুরোদস্তুর চিকিৎসক হয়ে গেলেন। চিকিৎসক হিসেবে আত্মপ্রকাশের পর তাঁর খ্যাতি দুর-দুরান্তে ছড়িয়ে পড়ে।
কিন্তু তিনি থেমে যান না। নিমজ্জন করতে থাকেন জ্ঞানের সমুদ্রে। ১৯ বছর বয়সে তিনি বিজ্ঞান, দর্শন, ইতিহাস, অর্থনীতি, রাজনীতি, গণিতশাস্ত্র, জ্যামিতি, ন্যায়শাস্ত্র, চিকিৎসা শাস্ত্র, কাব্য, সাহিত্য প্রভৃতি বিষয়ে অসীম জ্ঞানের অধিকারী হয়ে ওঠেছিলেন।
লেখক, বিজ্ঞানী
ইবনে সিনা জীবদ্দশায় অনেক দেশ ভ্রমণ করেছেন। সেই সঙ্গে প্রচুর অভিজ্ঞতাও অর্জন করেন। বিভিন্ন বিষয়ে তিনি প্রায় শতাধিক গ্রন্থ রচনা করেছিলেন।
তাঁর বয়স যখন ২১ বছর তখন তিনি ‘আলমুজমেয়া ’নামে একটি বিশ্বকোষ রচনা করেন। এই বিশ্বকোষে গণিত শাস্ত্র ছাড়া প্রায় সকল বিষয়া তিনি লিপিবদ্ধ করেন।
চিকিৎসা বিজ্ঞান নিয়েও লেখেন আরেক গ্রন্থ‘ আল কানুন ফিত-তিব’ । তাঁর এই গ্রন্থ আল কানুন পাঁ খণ্ডে বিভক্ত এবং গ্রন্থটি ঊনবিংশ শতাব্দী পর্যন্ত প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও চিকিসা প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীদের পড়ানো হতো।
বর্তমানে ইউনানী চিকিৎসায় এই বইটির অবদান অসামান্য।চিকিৎসাবিজ্ঞানী ইবনে সিনা ‘হলিস্টিক মেডিসিনের’ প্রণেতা। তিনিই মানুষের চোখের সঠিক অ্যানাটমির বর্ণনা দেন। মেনিনজাইটিস রোগও প্রথম তিনি শনাক্ত করেছিলেন।
সিনার আরেকটি বিখ্যাত গ্রন্থ ‘ কিতাব আল-শিফা’।এটা দর্শনশাস্ত্র যা ২০ খন্ডে বিভক্ত। তাঁর জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থ হচ্ছে ‘ কিতাব আল ইশারাত’।
তাছাড়া ‘আরযুযা ফিত-তিব’, ‘লিসানুল আরব’, ‘আলমজনু’, ‘আল মুবাদাঊন মায়াদা’, ‘মা দুনিয়াত’(খনিজ পদার্থসমূহ), ‘Treaties of Minerals’ তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনা।
ছোট বেলা থেকেই ইবনে সিনা ছিলেন স্বাধীনচেতা ও আত্মমর্যাদা সচেতন এক ব্যক্তি। জীবনের নানা ঘা-প্রতিঘাত,উত্থান পতন, দুঃখ-দুর্দশা তাঁকে সইতে হয়েছিল। কিন্তু এতোকিছুর মধ্যেও তিনি মধ্যেও কখনো জ্ঞানচর্চা থেকে নিজেকে বিচ্যুত করেননি। জ্ঞানপিপাসু এবং ধীসম্পন্ন ব্যক্তি হিসেবে তিনি জ্ঞানের চূড়ান্ত শাখায় আরোহনের জন্য অবিরাম চেষ্টায় নিমগ্ন থেকেছেন।
রাজচিকিৎসক
গজনির সুলতান মাহমুদ এক কঠিন রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর তাঁর আরোগ্যের জন্য পৃথিবীর বহু নামকরা চিকিৎসককে আনা হলো তাঁর চিকিৎসায়। কিন্তু সবাই সুলতানের রোগ নির্নয় করতে ব্যর্থ হলেন। তখন তরুণ ইবনে সিনা রাজদরবারে হাজির হন এবং সুলতান মাহমুদের চিকিৎসার অনুমতি চান। সিনা সহসাই তিনি অনুমতি পেয়ে চিকিৎসা শুরু করেন। এতে অল্পদিনের মধ্যেই সুলতান আরোগ্য লাভ করেন। এতে সুলতান নতুন জীবন লাভ করেন এবং খুশি হয়ে তাঁকে (ইবনে সিনা) পুরস্কৃত করতে চাইলেন। কিন্তু ইবনে সিনা কোনো পুরস্কারই নিতে অপারগতা প্রকাশ করলেন। পড়ে সুলতানের পীড়াপীড়িতে ইবনে সিনা বললেন, তিনি সুলতানের রাজকীয় গ্রন্থাগারে প্রবেশ ও পড়াশোনার অনুমতি চান। সুলতান বিষ্মিত হলেন এভং তাঁর ওপর সমগ্র গ্রন্থাগারের দায়িত্ব অর্পণ করেন। কিন্তু একদিন আকষ্মিক এই গ্রন্থাগারে আগুন লেগে সব বইপত্র পুড়ে যায়।
এতে ইবনে সিনার মতের বিরোধী ও ঈর্ষাপরায়ন ব্যক্তিরা সুলতানের কাছে ইবনে সিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন এই বলে যে, এটা ইবনে সিনার কাজ। মিথ্যা অপবাদ দিয়ে তারা বললেন, ইবনে সিনা বই কণ্ঠস্থ করে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন সব বই পুড়িয়ে দিয়েছে। সুলতান এমন অদ্ভুত কথায় বিশ্বাস করলেন এবং ইবনে সিনাকে রাজ প্রাসাদ থেকে বিতাড়িত করলেন। ওই সময় মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজ্যে বিভক্ত ছিল। এই ক্ষুদ্র রাজ্যের রাজারা জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার প্রতি খুবই আগ্রহী ছিলেন। এজন্য এসব রাজ্যের রাজারা তাদের রাজসভায় বড় বড় পণ্ডিত ব্যক্তিদের রাখতে আসন করে দিতে চাইতেন। এজন্য তিনি বোখারা পরিত্যাগ করে খোয়ারিজমে গেলে সেখানকার সুলতান তাকে রাজচিকিৎসক নিয়োগ করেন।
ওই সময় খোয়ারিজমের রাজসভায় অনেক নামি-দামি পণ্ডিত ছিলেন। ঐতিহাসিক মত অনুযায়ী, আরব বিশ্বের প্রখ্যাত ঐতিহাসিক, বিজ্ঞানী ও দার্শনিক আল বেরুনি যিনি গজনীর সুলতান মাহমুদের সঙ্গে ভারতবর্ষে এসেছিলেন এবং তৎকালীন ভারতের ইতিহাস রচনা করেছিলেন। এক দিন সুলতান মাহমুদ জানতে পারেন ইবনে সিনা, আল বেরুনির প্রখর পাণ্ডিত্যের কথা। তিনি খোয়ারিজমের সুলতানের কাছে নিজ সভায় ইবনে সিনাকে পাঠানোর দাবি করেন। প্রবল প্রতাপশালী সুলতান মাহমুদের দাবিকে উপেক্ষা করতে পারলেন না খোয়ারিজমের শাসক। তিনি পণ্ডিতদের তাঁর রাজ্য থেকে সুলতান মাহমুদের রাজসভায় পাঠান। কিন্তু ইবনে সিনা ছিলেন স্বাধীনচেতা পণ্ডিত। এজন্য তিনি পুনরায় সেখানে যেতে অস্বীকৃতি জানালেন এবং সুকৌশলে নিজেকে মুক্ত করে পালিয়ে যান ।
শেষ জীবন
ইবনে সিনা পালিয়ে যাওয়ার পর গজনির সুলতান মাহমুদ তাঁকে পেতে মরিয়া হয়ে ওঠেন। সুলতান মাহমুদ তার প্রধান শিল্পী আবু নসরের মাধ্যমে ইবনে সিনার ৪০টি প্রতিকৃতি তৈরি করে আসল সিনাকে খুঁজে বের করার জন্য দেশে-বিদেশে লোক পাঠিয়ে দিলেন। এ ছাড়া তিনি খাওয়ারিজমের বাদশাহ মামুন বিন মাহমুদকে পরোক্ষভাবে এ নির্দেশ দিয়ে একটি পত্র পাঠালেন যে, তিনি যেন তার দরবারের জ্ঞানী ব্যক্তিদের সুলতান মাহমুদের দরবারে পাঠিয়ে দেন। আসলে অন্য জ্ঞানী ব্যক্তিদের সঙ্গে ইবনে সিনাকে পাওয়াই ছিল তার আসল উদ্দেশ্য। কিন্তু ইবনে সিনা পালিয়ে চলে যান ইরানের হামাদান শহরে। সেখানে হামাদানের সুলতান গুরুতর অসুস্থ হলে ইবনে সিনা তার চিকিৎসা করার পর আরোগ্য লাভ করেন সুলতান। এতে খুশি হয়ে সম্রাট ইবনে সিনাকে তাঁর প্রধানমন্ত্রীর পদে নিয়োগ করেন। কিন্তু রাজনীতিতে ইবনে সিনা বরাবরের ছিলেন অপরিপক্ব। তাই এই পদ তাঁর জীবনে এক বড় ধরনের বিড়ম্বনায় ফেলে দেয়। হামাদান রাজ্যের সেনা বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও রাজ কর্মচারীরা ভিন রাজ্যের ইবনে সিনাকে মেনে নিতে পারছিলেন না। এনিয়ে তাদের সঙ্গে সিনার বিরোধ হয়। সেনা প্রধান সিনাকে গ্রেপ্তার করার জন্য সম্রাটের কাছে আবেদন জানাতে থাকলেন। কিন্তু সেন্য প্রধানের অনুরোধ উপেক্ষা করার সাধ্য ছিল না হামাদান সুলতানের। তাই তিনি ইবনে সিনাকে নির্বাসন দণ্ড দেন।
কিন্তু এরপর হামাদান সুলতান আবার অসুস্থ হয়ে পড়লে ইবনে সিনা ‘প্রধানমন্ত্রীর’ পদ ফিরে পান, তিনি চিকিৎসক পদেও নিযুক্ত হন। এরপর হামাদান সুলতান মারা যাওয়ার পর আমিরের মৃত্যুর পর ইবনে সিনা আবার আত্মগোপনে চলে যান।
নতুন সুলতান তাঁর গোপন ডেরার খোঁজ পেয়ে সিনাকে এক দুর্গে কারাবন্দী করেন। এরপর অপর রাজ্য ইস্পাহানের সঙ্গে হামাদানের যুদ্ধ শুরু হলে ১০২৪ খ্রীস্টপূর্বাব্দে হামাদান রাজ্য দখল করে নেয় ইস্পাহান। ইবনে সিনা সুফি দরবেশের বেশ ধরে পালিয়ে ইস্পাহানে চলে যান। সেখানে তাঁকে রাজকীয়ভাবে বরণ করেন রাজ্যটির সুলতান।
এরপর মুত্যুর আগে ১০-১২ বছর কাটে আরেক রাজ্য কাকুয়িদের শাসক মুহাম্মাদ ইবনে রুস্তমের ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও উপদেষ্টা হিসেবে। এসময় তিনি যুদ্ধ অভিযানেও রণাঙ্গনে যেতেনেএমন এক যুদ্ধক্ষেত্রে সময় তিনি তলপেটের ব্যথা অনুভব করেন এবং এভাবেই যুদ্ধশিবিরে অবস্থানকালে ইবনে সিনা ১০৩৭ খ্রিস্টাব্দে মাত্র ৫৮ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।
বিতর্ক
ইবনে তাইমিয়া নামে এক আরব লেখক ইবনে সিনাকে অমুসলিম বলে অভিহিত করেছিলেন। আরেক লেখক ইবনুল কায়্যুম ইবনে সিনা কীভাবে ইসলামের স্তম্ভগুলো পরিত্যাগ করেছিলেন, সে বিষয়ে লিখেছেন। তাদের মতে, মহাবিশ্বের শুরু বা শেষ আছে কিংবা মৃত্যুর পর জীবন আছে-ইবনে সিনা এটা বিশ্বাস করতেন না। ইমাম গাজ্জালিও ইবনে সিনাকে ‘কাফির’ উপাধি দেন পুনরুত্থান অস্বীকারের কারণে! ইবনে সিনার ধর্ম কী ছিল, তিনি নাস্তিক ছিলেন কি না- সে নিয়ে অনেক বিতর্ক তুলেছেন। তবে ইবনে সিনার নিজের এই উক্তিটিই এসব বিতর্কের আগুনে ঘি ঢেলেছিল বলে মনে করেন অনেকে। তিনি
‘এ দুনিয়ার লোকেরা দুই দলে বিভক্ত- এক দলের ধর্ম নেই কিন্তু বুদ্ধি আছে, আরেক দলের বুদ্ধি নেই কিন্তু ধর্ম আছে’।