আয়না ২৪ স্বাস্থ্য
অনেকেই আছেন যারা তদের পাতলা ও রোগা শরীর নিয়ে চিন্তিত। আর লিকলিকে চিকন ও পাতলা শরীর কারোই কাম্য নয়। দেখতেও মানানসই হয় না। কীভাবে যে মোটা হওয়া যায়, এত খাই কিন্তু মোটা হতে পারি না, এই কথা শারীরিকভাবে ক্ষীণকায় ব্যক্তিদের কাছ থেকে প্রায়ই শোনা যায়। আমাদের এই স্বাস্থ্য প্রকৃতিগত ভাবে পাওয়া। আপনার নিয়মিত অনুশীলন, চেষ্টা ও ধৈর্য চাওয়াকে পাওয়াতে পরিণত করবে। যদি আপনি নিয়মিত শরীর চর্চার করেন তাহলে সব অসম্ভবকে সম্ভব করা আপনার কাছে কাম্য হবে। চাইলেই যদি আপনি সব পেয়ে যেতেন তাহলে নিজের ইচ্ছেমত মতো শরীরটাকে বদলে দিতে পারতেন। কিন্তু তা কোনদিন সম্ভব নয়। সম্ভভ যদি আপনার মন থাকে দৃঢ়, ইচ্ছা থাকে অনুশীলন ও চেষ্টার। আমরা আপনাদের সামনে মোটা হওয়ার ১০ টি টিপস তুলে ধরবো। আশা করি টিপস গুলো অনুসরন করলে আপনাদের কিছুটা হলেও উপকারে আসবে।
১। খাবারের পরিমাণ বাড়াবেন।
আমরা সবাই এক রকম খেতে পারি না। আর খাওয়ার মতো সব সময় মন ও থাকে না। খাবার যদি আমাদের কাছে খাবার সুস্বাাদু হয় তাহলে আমরা আমাদের খাবার খাওয়ার পরিমান এর থেকে কিছুটা হলেও বেশি খেয়ে ফেলি। আপনাকে নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে আর সেই খাবার রুটিন অনুযায়ী খাবেন। খাবারের পরিমাণ বাড়ানো মানেই একগাদা খেয়ে ফেলা নয়। স্বাভাবিকভাবে আপনি যা খান, প্রতিদিন তার ৪ ভাগের ১ ভাগ পরিমাণ খাবার বাড়িয়ে খাবেন। তাহলে প্রতিদিন একটু একটু করে খাবারের পরিমান বাড়াতে পারবেন। যা আপনাকে মোটা হতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
২। প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমাবেন।
আপনার স্বাস্থ্য মোটা করতে ঘুম এর অনেক প্রয়োজন আছে। ঘুম আপনার শরীর এর ক্লান্তি দূর করে। ঠিক মতো না ঘুমাতে পারলে আপনার শরীর ক্যালরি ধরে রাখতে পারে না। রাতের বেলা ঘুমাবার আগে অবশ্যই পুষ্টিকর কিছু খাবেন। ঘুমাবার আগে প্রতিদিন এক গ্লাস ঘন দুধের মাঝে বেশ অনেকটা মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে শরীর এ ক্যালরি বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
৩। সকালে ঘুম থেকে উঠার পর বাদাম ও কিসমিস খাওয়ার অভ্যাস করুন।
বাদাম আর কিসমিসের বিকল্প নেই আপনার ওজন বাড়াতে। রাতে ঘুমাবার আগে অল্প পানিতে আধ কাপ কাঠ বাদাম ও কিসমিস ভিজিয়ে রাখুন। সকালে ঘুম থেকে উঠার পর দেখবেন সেগুলো ফুলে গেছে তারপর খেয়ে নিন।
৪। পর পর খাওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করুন।
আমাদের ওজন তখন কমে যায় যখন আমরা কিছুখন পর পর খাই। আর এটা অনেকেই পছন্দ করেন থাকেন। আর অনেকেই ভাবেন যে বারবার খেলে বুঝি ওজন বাড়বে। এটা মোটেও সঠিক ধারনা নয়। অল্প অল্প করে বারবার খাওয়াটা মেটাবলিজম বাড়িয়ে দেয়, ফলে আমাদের ওজন কমে যায়। বরং নিয়ম মেনে পেট পুরে খাওয়ার অভ্যাস করুন। পেট পুরে খাওয়া হলে মেটাবলিজম হার কমে যায়, ফলে খাবারের ক্যালোরির অনেকটাই বাড়তি ওজন হয়ে শরীরে জমবে।
৫।বিশেষ খাবার যা আপনাকে খাদ্য তালিকায় যোগ করতে হবে।
আপনার খাবারের পাশাপাশি নিয়মিত অবশ্যই কিছু উচ্চ ক্যালোরি সম্পন্ন খাবার যোগ করুন উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা না থাকলে এই খাবার গুলো খেতে পারেন অনায়াসে। যেমন- ঘি/ মাখন, ডিম, চিজ/ পনির, কোমল পানীয়, গরু-খাসির মাংস, আলু ভাজা, মিষ্টি জাতীয় খাবার, চকলেট, মেয়নিজ ইত্যাদি।
৬। প্রচুর ফল খান।
ফল হলো পুষ্টিকর খাবার এতে প্রচুর ক্যালরি পাওয়া যায়। প্রতিদিন আপনি ফল এবং ফলের রস খাবেন। ফলের তৈরি বিভিন্ন সিরাপ, কুবিথ, গাম, জ্যাম, জ্যালি খান এতে ফ্যাট আছে যা আপনার স্বাস্থ্য মোটা করবে।
৭।প্রচুর শাক সবজি ও ফল খাবেন।
ফল আর সবজি যা আপনাকে ওজন কমাতে সাহায্য করবে। এমন অনেক ফল আর সবজি আছে যা উচ্চ ক্যালোরি যুক্ত যেমন-আম, কাঁঠাল, লিচু, কলা, পাকা পেঁপে, মিষ্টি কুমড়া, মিষ্টি আলু, কাঁচা কলা ইত্যাদি ফল ও সবজি খেলে ওজন বাড়বে।
৮।কমান মেটাবলিজম হার।
ধীর গতির মেটাবলিজম যা মোটা হবার পেছনে দায়ী, তেমনি রুগ্ন স্বাস্থ্যের পেছনে দায়ী উচ্চ মেটাবলিজম হার। সুতরাং মোটা হতে গেলে প্রথমেই এই মেটাবলিজম হার কমাতে হবে।মেটাবলিজম হার কম রাখার জন্য প্রতিবেলা খাবারের পর লম্বা সময় বিশ্রাম করুন। তাতে আপনি যে খাবারটা খাবেন, সেটা বাড়তি ওজন রূপে আপনার শরীরে জমার সুযোগ পাবে। খাবার পর কমপক্ষে ১ ঘণ্টা কোনও কাজ করবেন না।
৯।টেনশনমুক্ত থাকুন।
নিয়মিত ব্যায়াম করুন। ব্যায়াম করলে ক্ষুধা বেড়ে যায় টেনশন দূর করে।
১০।নিয়মিত জিমে যাওয়া অভ্যাস করুন
আপনি যদি উপরের ৯টি নিয়ম মেনে দৃঢ় মনবল নিয়ে মেনে চলতে পারেন তাহলে আপনি মোটা হবেনই তো আপনার স্বাস্থ্য ও অনেক ভাল হবে। আর আপনার স্বাস্থ্য কে যদি আপনি ভাল রাখতে চান তাহলে আপনাকে নিয়মিত শরীরচর্চা করতে হবে।এক্ষেত্রে আপনি জিমে যেতে পারেন। কেবল মোটা হলেই হবে না। সাথে তৈরি করতে হবে সুগঠিত শরীর তাই না? আর এই সুগঠিত শরীর এর জন্য আপনাকে আপনি জিমে যাবেন পেশী তৈরি করতে, এবং পুরুষেরা ওজন বাড়াতে চাইলে এই জিমে যাওয়া আসলে খুবই ফলদায়ক। তাছাড়া ব্যায়ামের ফলে খিদেও পাবে আর মন ভরে খেতে পারবেন। তবে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ ট্রেনারের নির্দেশে ব্যায়াম করতে হবে। নাহলে হিতে বিপরীত হবার আশঙ্কা।
এরপরেও যদি ওজন না বাড়াতে পারেন তাহলে চিকিৎকের সাহায্যে শরীর পরীক্ষা করে্ন। যদি কোনো রোগ পাওয়া যায়, তার চিকিত্সা করাতে হবে আপনাকে। এভাবে মোটা হতে আপনার ছয় মাস থেকে একবছর লাগতে পারে…ধৈর্য্য হারাবেন না। আপনি খুব দ্রুত মোটা হয়ে যাবেন। আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না কিভাবে এত দ্রুত মোটা হওয়া সম্ভব।
এই টিপস গুলো আনুসরন করতে থাকুন আমরা আশা করি আমাদের এই ১০ টি টিপস কিছুটা হলেও আপনার কাজে দিবে।
এরকম নিত্য নতুন মজার মজার তথ্য পেতে আমাদের সাথেই থাকুন।