আয়না২৪ প্রতিবেদক
নদী ও পানির অধিকার রক্ষায় বাংলাদেশে এখনও জনঅংশগ্রহণ নিশ্চিত করা যায়নি। আইনের সীমাবদ্ধতা, সাধারণ মানুষের চিন্তা ও মতামতকে কম গুরুত্ব দেওয়ার করণে এই পরিস্থিতি। ফলে দেশের ভেতরে পানির জন্য হাহাকার, দখল ও দূষণ। আঞ্চলিকভাবে পানি অধিকার বঞ্চিত বাংলাদেশ।
বুধবার পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় দুদিনব্যাপী ‘জল ও জনতন্ত্র’সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পানি ও নদী বিশেষজ্ঞরা এমন মন্তব্য করেন বলে গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পানির রাজনীতিতে পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। এই পরিস্থিতির উন্নতিতে নদীকে থাকতে দিতে হবে নদীর মতো। পানিকে তার প্রাকৃতিক সত্ত্বায় চলতে দিতে হবে। আর এটি করতে হলে দরকার জনঅংশগ্রহণমূলক পানি ও নদী ব্যবস্থাপনা। তাই জলের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠাতেই নদী ও পানির ভবিষ্যৎ বলে জানান বক্তারা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ‘জল ও জনতন্ত্র’-এর ধারণাপত্র এবং সাম্প্রতিক একটি গবেষণার চিত্র তুলে ধরেন অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের ম্যানেজার শমসের আলী।
গবেষণায় বলা হয়, পানির কৃত্রিম সংকটের ফলে নদীপাড়ের মানুষ তাদের জীবিকা হারাচ্ছে, জীববৈচিত্র্য হুমকির সম্মুখীন। বৃদ্ধি পাচ্ছে লবণাক্ততা, পরিবর্তন হচ্ছে জলবায়ু। ফলে কৃষি, মৎস্যসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে খারাপ উদাহরণ তৈরি হচ্ছে। তার থেকে ভয়ংকর পরিস্থিতি হলো, নদী মরে যাওয়া, মেরে ফেলা এবং পনির অধিকার ক্ষুণ্ন করা।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালক অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির বলেন, বাংলাদেশে যত উন্নয়ন বা উন্নয়ন চিন্তা হয়েছে, তার পুরোটাই জমিকেন্দ্রিক। উন্নয়ন ভাবনায় পানি কিংবা নদীর গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। ফলে নদী মরে যাচ্ছে, ভাঙছে ও হারিয়ে যাচ্ছে। আর সমস্যায় পড়ছেন নদীপাড়ের মানুষরা। প্রভাব পড়ছে গ্রাম থেকে শহরে।
নেপালের মহিলা অধিকার মঞ্চের উপদেষ্টা সাবিত্রি পোখারেল বলেন, অধিকারের বিষয়টি খুবই গভীর একটি বিষয়। এর সঙ্গে প্রতিটি জীবন জড়িত। তাই সবাই মিলে কাজ না করলে পানি অধিকারের বিষয়ে আমরা সফল হব না। সবাই মিলে কাজ করার ক্ষেত্রে তৃণমূল পর্যায় থেকে সংগঠিত হয়ে, দক্ষিণ এশিয়ার আন্তঃদেশীয় সংগঠনগুলোকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে সাধারণ মানুষদের সম্পৃক্ত করার পরামর্শও দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস্-এর শিক্ষক মেহেরুন্নেসা, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত প্রমুখ।