নির্বাসিতদের ট্রাক
পার হয় সীমান্ত
আর গানের মাধ্যমে প্রকাশ করে
তাদের জ্বালাময় আর্তস্বর।
বাতাস এখন প্রতিকূলে আমাদের। পৃথিবীকে ঘিরে ফেলেছে যুদ্ধের ছাই। ধারালো ক্ষুর ও বক্রাকারের হেলমেটের উপর আমাদের সমস্ত আত্মার ফ্ল্যাশ। ক্ষতের উপর লোনা বসন্ত ও শরতের লবণ ছিটানো। ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখি, সন্ত্রাসের খড়গাদার মধ্যে বন্যকাঁটার সূচ ভরে আছে। তারা যেন টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছে পরিসমাপ্তির দিকে।
এসব গল্প কোন্ লবণের নদীতে ধোবো আমরা? যেসব পুরাতন গৃহকর্মী ও বিধবারা হজ্ব থেকে ফেরে, তাদের গায়ে মামুলি গন্ধ। দরবেশদের কোমরের ঘাম ঝরিয়ে আমাদের ইতিহাস হয়ে আছে দাগি। এটা বসন্তকাল, পঙ্গপালের আনন্দ উৎসব।
নতুন দিনে ঘুটঘুটে অন্ধকার রাতে মৃত চড়ুইয়েরা হামাগুড়ি দেয়। দরোজায় খটখট শব্দ হয় কিন্তু খোলে না কেউ। আমরা কান্নার স্বপ্ন দেখে চিৎকার করে কেঁদে উঠি। তবুও চোখ দিয়ে কোনো অশ্রু ঝরে না।
আমার দেশ এক উষ্ণ নারী—খেয়াল খুশির সেঁতু। ভাড়াটে বিদেশি সৈনিক মরুভূমি পার হতে হতে বালির গাদা দ্বারা প্রশংসিত হয়। দূরবর্তী বারান্দা থেকে আমরা দেখি, শিশুদের কবরের উপর হচ্ছে পশু জবাই; পবিত্র সন্তুদের জন্য ধূমপানে নিষেধাজ্ঞা; কালো পাথরের সমাধিস্তম্ভ। মাঠগুলো হাড় ও শকুনে ভরা। বীরের মৃতদেহ নরম মূর্তিতে গড়া।
সুতরাং খালি বুকে আমরা সমুদ্রে যাই। পুরাতন দুঃখ ঘুমায় আমাদের জিহ্বার নিচে। আমাদের কথার ভেতর কোনো উত্তরাধিকারী নেই। আমরা হাত প্রসারিত করি অচেনা দ্বীপের জন্য। সমুদ্রের অতলস্পর্শী গহ্বর থেকে অদ্ভুত এক কুমারীর সুবাসিত ঘ্রাণে মুগ্ধ হই। বন্দরে রাখা জাহাজের দুঃখের ক্রন্দন শুনি। দুঃখ করি একটি নতুন চাঁদ উঠলে। কারণ আমাদের শিশুকাল মন্দে ভরা। নদী নির্গমন করে মৃতসাগরে। এখানে রাতের জন্ম হয় সাগরের মল ও বালি, পঙ্গপাল ও বালির পরিণয়ে।
সুতরাং আমরা সেখানে যাই এবং কাস্তের আঘাতের ভয়ে নিচে নামি। কাদার ঢালের মধ্যে পড়ে চিৎকার করে কাঁদি। আমাদের চারপাশ রক্ত ছিটিয়ে রেখেছে পৃথিবী। আর সেখানে সবুজ দেয়াল হয়ে আছে সমুদ্র।