আয়না২৪ ডেস্ক
এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ৯৬ বছর পর রাজধানী ওয়াশিংটনে একসঙ্গে থাকতে দেখা যাবে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এবং প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। অবসরের পর ওয়াশিংটনেই থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ওবামা। ৫৫ লাখ ডলারের নয়টি বেডরুম বিশিষ্ট বাড়িতে উঠে যাচ্ছেন তিনি। হোয়াইট হাউস থেকে বেশি দূরে নয় ওবামার নতুন বাসভবন। তাঁর রাজ্য ইলিনয়েসে কেন ফিরে গেলেন না তিনি? সেই প্রশ্নে তোলপাড় আমেরিকা। বলাবলি শুরু হয়েছে ২০২০ সালে হয়ত তৃতীয়বার প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হতে পারেন তিনি। তাই জন সংযোগ বজায় রাখতেই তাঁর এই পদক্ষেপ।
ওয়াশিংটনে তাঁর থেকে যাওয়াটা মনে করাচ্ছে ৯৬ বছর আগের আর এক প্রেসিডেন্টকে, উড্রো উইলসন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সফলভাবে নেতৃত্ব দেন তিনি। ১৯২১ সালে দু বার প্রেসিডেন্ট থাকার পর অবসর নেন। আবার তিনি হোয়াইট হাউসে ফেরার তোড়জোড় শুরু করেছিলেন ওয়াশিংটনে বসেই। মার্কিন সংবিধানে বলা হয়েছে একাদিক্রমে দুবার প্রেসিডেন্ট থাকার পর আবার কেউ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না। কেউ যদি একটি মেয়াদ প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করে চার বছর পর আবার তৃতীয়বারের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান? এই প্রশ্নের কোনও উত্তর নেই মার্কিন সংবিধানে। এই ফাঁকফোঁকর কাজে লাগিয়েই আবার ফিরতে চেয়েছিলেন উড্রো উইলসন। ১৯২৪ সালে তাঁর মৃত্যু হয়। আর অমীমাংসিত থেকে যায় তৃতীয়বার রাষ্ট্রপতি হতে পারার প্রশ্নটি। এখনও পর্যন্ত কেউ এর বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেনি।
ওবামার ঘনিষ্ঠ মহলের খবর, ওবামাও আবার ২০২০ সালে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন। উড্রো উইলসন কেন আবার ফিরতে চেয়েছিলেন? বিশ্বযুদ্ধের পর দেশগুলোকে একজোট করতে ‘লিগ অব নেশনস’ গড়ার উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি। অথচ আমেরিকাকে সেই সংগঠনে যুক্ত করার অনুমতি দেয়নি সে দেশের উচ্চকক্ষ সেনেট। তাই আবার প্রেসিডেন্ট হিসেবে ফিরে তাঁর স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে চেয়েছিলেন উড্রো উইলসন। ওবামা এখন কী দেখছেন? তাঁর সাধের ‘ওবামাকেয়ার’ বন্ধ করার কথা ঘোষণা করেছেন তাঁর উত্তরসূরী ডোনাল্ড ট্রাম্প। যে বহুত্ববাদের চর্চা তিনি করেছিলেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। তাঁর আদর্শকে এমন খাটো করা হচ্ছে যে তাতে বিরক্ত ওবামা বারবার অসন্তোষ দেখাচ্ছেন। হিলারির পরাজয়ের পর ওবামা বলেছিলেন, তিনি থাকলে ট্রাম্প জিততে পারতেন না। জিতে ওবামা প্রমাণ করতে চান, তাঁর আদর্শ এখনও মরেনি। উড্রো উইলসনের সঙ্গে আরও একটি ব্যাপারে মিল রয়েছে ওবামার। দুজনেই ডেমোক্রাট।