আয়না২৪ ডেস্ক
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সৌদি আরব সফরে যাওয়ার পর তাকে সে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা দিয়েছেন বাদশাহ সালমান। এই সফরে দুই দেশের মধ্যে ২০০ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি হওয়ার কথা রয়েছে।
মার্কিনীরা তার সফর নিয়ে আশাবাদ প্রকাশ না করলেও সৌদি আরবের বাদশাহ বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই সফর বিশ্বের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতাকে বাড়াবে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পই প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট যিনি প্রথম বিদেশ সফর হিসেবে মুসলিম বিশ্বের কোনো দেশকে বেছে নিলেন।
স্থানীয় সময় গতকাল শনিবার সকাল ১১টার দিকে রিয়াদের কিং খালিদ ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দরে পৌছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে বহনকারী বিমান এয়ার ফোর্স ওয়ান। বিমানবন্দরে তাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়। তাকে স্বাগত জানান বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ। রিয়াদের আল ইয়ামায়াহ প্যালেসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে সৌদি আরবের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘অর্ডার অব আব্দুল আজিজ আল-সৌদ মেডেল’ দেওয়া হয়। তাকে মেডেলটি পরিয়ে দেন বাদশাহ সালমান।
এর আগে রিয়াদে পৌছেই টুইটার বার্তায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানান, রিয়াদে এসে আমি গর্বিত। পরবর্তী কর্মসূচির দিকে নজর দিচ্ছি। বিমানবন্দরেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং বাদশাহ সালমানকে বন্ধুত্বপূর্ণ সংক্ষিপ্ত আলোচনায় অংশ নিতে দেখা যায়। এরপরই কঠোর নিরাপত্তায় তাদের গাড়ি বহর রাজপ্রাসাদে পৌছায়।
শনিবার সকালে ট্রাম্প বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল সৌদের সঙ্গে রাজপ্রাসাদে বৈঠক করেন। এরপর তার যুবরাজ ও ডেপুটি ক্রাউন প্রিন্সদের সঙ্গে তার বৈঠক করার কথা। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ৯ দিনের বিদেশ সফরের প্রথমেই সৌদি আরব গেছেন। এর মাধ্যমে তিনি মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে যেমন সম্পর্ক বাড়ানোর চেষ্টা করবেন তেমনি থাকবে ইসলাম নিয়ে বক্তৃতা করে মুসলিম বিশ্বকে একত্র করার প্রচেষ্টা। এরপর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইসরাইল, বেলজিয়াম ইতালি এবং ভ্যাটিকান সিটিতে যাবেন।
ট্রাম্পের সঙ্গে রয়েছেন মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প এবং হোয়াইট হাউসের শীর্ষ কর্মকর্তারা। তবে কঠোর ধর্মীয় আইন-কানুনের দেশ সৌদি আরবে হেডস্কার্ফ ছাড়াই গেছেন মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প। তিনি বাদশাহ সালমানের সঙ্গে হাতও মেলান।
এ নিয়ে কট্টরপন্থীরা সমালোচনা শুরু করছেন। মেলানিয়াই প্রথম নন, তার পূর্বসূরি ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামাও ২০১৫ সালে সৌদি সফরে বেশ কিছু অনুষ্ঠানে হেডস্কার্ফ ছাড়াই অংশগ্রহণ করেন। ট্রাম্পের মেয়ে ও তার জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা ইভাঙ্কা ট্রাম্পও সফরসঙ্গী হিসেবে সৌদি আরবে এসেছেন। তিনিও হেডস্কার্ফ ব্যবহার করেননি। অথচ মিশেল ওবামা স্কার্ফ না পরায় সমালোচনা করেছিলেন ট্রাম্প।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই সফরে কিছু রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক চুক্তির সম্পাদন হতে পারে। বিশেষ করে ইরান ইস্যু এখানে বিশেষ গুরুত্ব পাবে। কারণ সৌদি আরবের সঙ্গে ইরানের বৈরি সম্পর্ক ।আর ট্রাম্পও ইরানকে অপছন্দ করেন। তিনি ইরানের সঙ্গে করা পরমাণু চুক্তি বাতিল করার পক্ষে।
সফরে ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মুসলিম বিশ্বকে একত্র করার চেষ্টা করবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। দুই দিনের সফরে তিনি তিনটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। এরমধ্যে অন্তত ৫০টি মুসলিম দেশের নেতৃত্বের বা প্রতিনিধিদের সামনে ইসলাম নিয়ে বক্তৃতা করবেন তিনি।
মধ্যপ্রাচ্য থেকেই উৎপত্তি হওয়া বিশ্বের তিনটি ধর্মাবলম্বী মানুষদের মাঝে সম্প্রীতির আহবান জানিয়েও বক্তব্য রাখবেন ট্রাম্প। ট্রাম্প রিয়াদে পৌছার কয়েক ঘণ্টা আগে সৌদি কর্তৃপক্ষ ইয়েমেনের রাজধানী সানার কাছে বিমান হামলা চালিয়েছে। সৌদি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবি, সানা থেকে হুতি বিদ্রোহীরা রকেট ছুড়েছিল। সৌদিতে ট্রাম্পের সঙ্গে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের বৈঠক হতে পারে। সূত্রঃ সিএনএন ও রয়টার্স