সৌদি যুবরাজ সালমানের বেঁচে থাকা নিয়ে সন্দেহ!

Spread the love

 

ইসলাম রাকিব

 সৌদি আরবের আলোচিত  নতুন যুবরাজ মোহাম্মদ সালমানকে যুক্তরাষ্ট্র সফল থেকে দেশে ফেরার পর দীর্ঘদিন জনসমক্ষে আসছেন না। গণমাধ্যমেও তাঁর নতুন কোনো বক্তব্য আসছে না। তাঁর এই নীরবতা কিংবা অনুপস্থিতি নিয়ে ধুম্রজালের সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে সৌদি আরবের বৈরী দেশ ইরানের গণমাধ্যমগুলো   সালমানের বেঁচে থাকা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে নানা সংবাদ প্রকাশ করছে।  ইরানের গণমাধ্যমগুলো এমন খবর দিচ্ছে, গত ২১ এপ্রিল রিয়াদে রাজপ্রসাদে এক ‘অভ্যুত্থানচেষ্টায়’ গুলিবিদ্ধ হয়ে যুবরাজ সালমান মারা গেছেন বলে তাদের ধারণা।

ইরানের প্রভাবশালী গণমাধ্যম ‘কায়হান ‘একটি আরব রাষ্ট্রের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তার কাছে পাঠানো গোয়েন্দা তথ্যের’ বরাতে বলেছে, রাজপ্রাসাদে হওয়া সংঘটিত ওই দিন ঘটা অভ্যুত্থানচেষ্টার সময় যুবরাজের শরীরে অন্তত দুটি গুলি বিঁধে।

দেশটির সরকারি টেলিভিশনের খবরে এমন সংবাদ প্রচার করা হয়। এতে বলা হয়,  ওই দিনের পর  সালমানকে আর জনসন্মুখে দেখা যায়নি এমনকি তাঁর নতুন কোনো স্থিরচিত্র কিংবা ভিডিও প্রকাশ হচ্ছে না। এছাড়াও  এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে  মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্প যখন রিয়াদ সফরে যান তথনো সালমানকে দেখা যায়নি।  

ইরানের এমন খবরকে ভুয়া হিসেবে উড়িয়ে দিয়েছেন  সৌদি দূতাবাসের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা।  পাকিস্তান টুড ওেই সৌদি কর্মকর্তার এমন বক্তব্য প্রচার করে।  খবরে তিনি বলেন, ‘জনগণের মধ্যে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা সষ্টির অসৎ উদ্দেশে  শত্রুপক্ষ এমন ভুয়া প্রচার চালাচ্ছে।’

গত ২৭ এপ্রিল তোলা সালমানের  একটি ছবির প্রসঙ্গ টেনে ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘ রিয়াদে রয়্যাল রাম্বল শুরু হওয়ার আগ মুহূর্তে এ ছবি তোলা হয়েছিল।  নিজের চেম্বারে  অতিথিদের সঙ্গে খেলাটি উপভোগ করেন সালমান। যদি ২১ এপ্রিল  হামলা হতো তবে ২৭ এপ্রিল ওই অনুষ্ঠানে তিনি হাজির হলেন কীভাবে? ’

ইরানী বার্তা সংস্থা ফারসের  প্রতিবেদনে বলা হয়, যুবরাজ বিন সালমান এমন এক ব্যক্তি যিনি  প্রায়ই গণমাধ্যমের সামনে আসতেন।  কিন্তু  ওই গোলাগুলি হওয়ার  পর গেল ২৭ দিন তাঁর  অনুপস্থিতি সত্যিই  উদ্বেগকে উৎসাহিত করেছে। 

২১ এপ্রিল রিয়াদে  রাজপ্রাসাদে ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ পাওয়ার খবর দেয় বিভিন্ন গণমাধ্যম।  গণমাধ্যমগুলোর খবর প্রকাশ করেছিল, ওই গোলাগুলির সময়  সৌদির বাদশা সালমান রাজপ্রাসাদ আশ্রয় নেন ছেড়ে পাশের একটি সামরিক ঘাঁটিতে। ওই সময় সৌদি আরব দাবি করে, প্রসাদের কাছ দিয়ে উড়ে চলা  একটি ড্রোনকে নামাতে নিরাপত্গুতাকর্মীরা ওই গুলি ছোড়েন।  

অবশ্য রাশিয়ার বার্তা সংস্থা স্পুটনিক জানায়, ওই গোলাগুলির ঘটনার এক সপ্তাহ পর  সৌদি যুবরাজ বিন সালমানকে  তাঁর বাবা বাদশাহ সালমানের সঙ্গে কয়েক শ কোটি ডলার ব্যয়ে নির্মিত বিনোদন রিসোর্ট কিদিয়ার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেখা গেছে। 

যুবরাজের ব্যক্তিগত দপ্তরের পরিচালক বাদের আল-আসাকার  গত ১৮ মে তাঁর টুইটারে এর একটি ছবিও প্রকাশ করেন।  তাতে  বিন সালমান, আবুধাবির যুবরাজ শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নায়হান, বাহরাইনের বাদশা বিন ইসা ও মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসিকে দেখা গেছে।  

  প্রসঙ্গত, মুসলিম অধ্যুষিত মধ্যপ্রাচ্যে প্রভাব বিস্তার করাকে কেন্দ্র করে সুন্নি মতাদর্শ প্রধান দেশ সৌদি আরবের সঙ্গে শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ ইরানের দীর্ঘদিনের বৈরিতা। এছাড়া ইয়েমেন ও সিরিয়া যুদ্ধেও  দু্তই দেশ মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে।