আয়না ২৪ ডেস্ক
রূপে তাঁর বয়স প্রভাব ফেলেছে ঠিকই! কিন্তু, এতটুকুও বিকৃতি ধরেনি মরদেহে। ত্বক রয়েছে যেমনটি জীবদ্দশায় ছিল নরম কোমল, ঠিক তেমনটিই! চুলে এখনও রয়েছে নিশীথ যামের ইশারা। কিছুই নষ্ট হয়নি কালের গ্রাসে। এভাবেই এখনও মানুষের মনে বিস্ময়ের সঞ্চার করেছেন চিনের দাই প্রদেশের এক রমণী। ইংরেজিতে যাঁকে ডাকা হয় লেডি অফ দাই নামে।
চিনের বেশ কিছু প্রদেশে এখনও অমর হয়ে রয়েছে এই দাই রমণীর প্রণয়গাথা। জানা যায়, তিনি বেঁচে ছিলেন হান বংশের শাসনকালে, নিবাস ছিল হুনান প্রদেশে। সেই প্রণয়গাথা আজও চিনা নাটক, লোকগীতির এক উজ্জ্বল সম্পদ। এভাবেই পচনহীন মরদেহ ছাড়াও লেডি অফ দাই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে রয়েছেন চিনা সংস্কৃতিতেও।
শোনা যায়, জীবদ্দশায় বেশ কিছু অসুখে ভুগতেন এই দাই রমণী। উচ্চ রক্তচাপ, আবদ্ধ ধমনী, রক্তে শর্করার আধিক্য- এসব তো ছিলই! সঙ্গে ছিল হৃৎপিণ্ডের সমস্যাও। শেষ পর্যন্ত ৫০ বছর বয়সে হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে যাওয়াতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই দাই রমণী। তার পরে তাঁর মরদেহ মমি করে কবর দেওয়া হয়। যা এক প্রত্নতাত্ত্বিক অভিযান চলা কালে এক পাহাড়ের গুহাসমাধি থেকে আবিষ্কৃত হয়।
প্রত্নতাত্ত্বিকরা জানাচ্ছেন, প্রথা মেনে এই দাই রমণীকে সমাধিস্থ করার সময় ১০০টি মূল্যবান রেশম বস্ত্র, গয়না- এসবও সমাধি দেওয়া হয়। এছাড়া রাখা হয় দাসদাসীদের ১৬০টি দারুমূর্তি। এই সবকিছুর সঙ্গে ২০টি রেশম বস্ত্রে মোড়া হয় মরদেহ। তার পর তা কয়লার গুঁড়ো ভর্তি চারটি কফিনে পর পর বন্ধ করা হয়। সবার শেষে মাটি দিয়ে বুজিয়ে দেওয়া হয় কফিনের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ছিদ্রও! যাতে তা জল এবং বায়ুনিরোধক হয়ে থাকে।
এই প্রচেষ্টাতেই এখনও পর্যন্ত ত্বক, চুল নিয়ে অক্ষত রয়েছে দাই রমণীর মৃতদেহ। এমনকী অক্ষত রয়েছে শিরার ভিতরে রক্তও! জানা গিয়েছে, মৃতার ব্লাড গ্রুপ ছিল এ পজিটিভ। এছাড়া তাঁর মুখে পাওয়া গিয়েছে শেষ নিশ্বাস ত্যাগের আগে খাওয়া খাদ্যকণাও! তিনি তরমুজ খেয়েছিলেন, যার অংশও এখনও অবিকৃত!
অবাক লাগছে তো? লাগারই কথা! তবে আমার-আপনার চেয়েও মনে হয় এই খবরে বেশি ধাক্কা পাবেন মিশরীয়রা। তাঁদের মমির গৌরব যে অতিক্রান্ত হতে চলল চিনের এই কারনামায়!