আয়না২৪ ডেস্ক
আই এস আই প্রধান আবু আল বকর বাগদাদীর মাথার দাম দ্বিগুণ করল আমেরিকা। তার খোঁজ দিতে পারলে মিলবে আড়াই কোটি মার্কিন ডলার পুরস্কার। বাগদাদীকে খুঁজে বের করতে এর আগে, ১ কোটি মার্কিন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছিল আমেরিকা।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে বলা হয়েছে, ‘বাগদাদীর নেতৃত্বে মধ্যপ্রাচ্যে হাজার হাজার নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছে আই এস। জাপান, ব্রিটেন এবং মার্কিন বন্দীদেরও নৃশংসভাবে খুন করেছে। আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করে, ইরাক এবং সিরিয়ায় রাসায়নিক হামলা ঘটিয়েছে। এছাড়া সীমান্ত পেরিয়ে অন্যান্য দেশেও হামলা চালিয়েছে। হত্যা করেছে জাপান, ব্রিটেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিরীহ বন্দীদের।
এর আগে আল কায়দা নেতা আয়মান আল জবাহিরি এবং ওসামা বিন লাদেনের জন্যও আড়াই কোটি মার্কিন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছিল আমেরিকা। জঙ্গি সংগঠন ‘লস্কর ই তৈবা’–র প্রতিষ্ঠাতা হাফিজ সইদ এবং হাক্কানি নেটওয়ার্কের সিরাজউদ্দিন হাক্কানিকে ধরতে ১ কোটি মার্কিন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
কে এই বাগদাদি
দায়েশের নেতা আবু বকর আল বাগদাদী নামে প্রসিদ্ধ ইব্রাহিম আওয়াদ ইব্রাহিম আল বাদরি আল কোরেশি আল সামারায়ি আমেরিকার জেল হতে মুক্ত পাওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই ইরাকে নাশকতা ও সন্ত্রাসীমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছে এবং তারপর থেকেই দায়েশের খলিফা হিসেবে নিজেকে ঘোষণা করেছে।
এই সন্ত্রাসীর আসল নাম ‘ইব্রাহিম আওয়াদ ইব্রাহিম আল বাদরি আল কোরেশি আল সামারায়ি’। ১৯৭১ সালে সামেরায় জন্মগ্রহণ করেছে। তার উপনাম সমূহ হচ্ছে আবু বকর, আবু দোয়া, কোরেইশী, হোসাইনি এবং আমিরুল মোমিনিন। আল বাগদাদি নিজেকে হযরত মুহাম্মাদ (সা.)এর বংশধর হিসেবে মনে করে। তবে আমেরিকার ব্রুকিংস ইন্সটিটিউট দাবি করেছে সে ‘জাফরে কাজ্জাবে’র বংশধর।
আবু বকর বাগদাদী ইরাকের বাগদাদ বিশ্ববিদ্যালয় হতে ইসলামিক বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক ডিগ্রি গ্রহণ করে এবং পরবর্তীতে তিকরিত বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করে। আমেরিকার আক্রমণের পূর্বে বাগদাদ, ফাল্লুজা ও সামারা’র বেশ কয়েকটি মসজিদের ইমাম হিসেবে নিয়োজিত ছিল।
২০০৩ সালে ‘জয়শ আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত’ নামক একটি ছোট সামরিক দল নির্মাণ করে, যাতে আমেরিকার সৈন্যরা ইরাকে যুদ্ধ করতে পারে।
২০০৪ সালে আমেরিকান সৈন্যরা তাকে গ্রেফতার করে ইরাকের দক্ষিণাঞ্চলীয় ‘বুকা’ কারাগারে স্থানান্তর করে। কারাগারে যাওয়া পর আল বাগদাদি চরমপন্থির দিকে ধাবিত হয়। কারণ বুকা কারাগারে আল কায়দার অনেক নেতা বন্দি ছিল। সেখান থেকে ২০০৬ সালে মুক্তি পাই।
আল বাগদাদি ২০০৬ সালে ‘ইরাকের ইসলামিক সরকারে’র সাথে যোগদান করে এবং বিভিন্ন সময়ে আল আনবারের ধর্মীয় আমির, সামারার ধর্মীয় আমির, ফাল্লুজার গভর্নর, দিয়ালার গভর্নর, ওলাতার গভর্নর এবং বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেছে।
এছাড়াও আবু বকর বাগদাদি, আবু ওমর আল বাগদাদির ডান হাত এবং সংস্থার নেতা ছিল। ২০১০ সালে আবু ওমর আল বাগদাদি মারা যাওয়ার পর সংস্থার প্রধানের দায়িত্ব পাল করে।
২০১১ সালে আমেরিকা অফিসিয়াল ভাবে সন্ত্রাসীদের তালিকায় আল বাগদাদির নাম যোগ করে এবং মোস্ট ওয়ান্টেডের অন্তর্ভুক্ত করে। সে সময় আবু বকর আল বাগদাদিকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য ১০ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করে।
আল বাগদাদি ২০১৩ সালে নিজের সিদ্ধান্তকে ঘোষণা করে, অর্থাৎ ‘ইরাকের ইসলামি সরকার’ এবং সিরিয়ার ‘জাবহাত আল নুসরা’ তথা ‘ইরাক ও শামের ইসলামি সরকার’ ঘোষণা করে।
২০১৪ সালে নিজের সংস্থার নাম পালটিয়ে স্বঘোষিত ‘ইসলামি সরকারে’র ঘোষণা করে।