আয়না ২৪ ডেস্ক
শার্লি এবদো, বাতাক্লঁ থিয়েটার ও নিসের স্মৃতি উস্কে দিয়ে ফের জঙ্গি নিশানায় ফ্রান্স। এ বার খাস ল্যুভর মিউজিয়ামে।
শুক্রবার সকাল দশটা। আস্তে আস্তে ভিড় বাড়ছে প্যারিসের অন্যতম দর্শনস্থল ল্যুভরের সামনে। হঠাৎ এক নিরাপত্তারক্ষীর উপর বড় একটা ছুরি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে এক ব্যক্তি। মুখে ‘আল্লা হো আকবর’। মুহূর্তে গুলি চালিয়ে দেন অন্য এক নিরাপত্তারক্ষী। গুরুতর জখম হয় আততায়ী।
কোনও জঙ্গি সংগঠন এখনও হামলার দায় স্বীকার না করলেও প্রধানমন্ত্রী বের্নার কাজন্যোভের দাবি, ‘‘হামলার ধরনটা জঙ্গি হানার ধাঁচেই।’’ আর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কোনও রাখঢাক না করে টুইট করেছেন, ‘‘ল্যুভরে হামলা চালিয়েছে এক জঙ্গি। আমেরিকা, এ বার তো একটু সচেতন হও!’’
২০১৫-র ১৩ নভেম্বর প্যারিস জুড়ে লাগাতার জঙ্গি হামলা চালায় আইএস। নিহত হন ১৩০ জন। তখন থেকেই কড়া নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা পৃথিবীর সব থেকে পর্যটন-প্রিয় শহর। সে বছর জানুয়ারিতেও ব্যঙ্গ পত্রিকা শার্লি এবদোর দফতরে ঢুকে ১২ জনকে খুন ও ১১ জনকে গুরুতর জখম করেছিল দুই কট্টরপন্থী। নিরাপত্তা চূড়ান্ত বাড়ানো হলেও গত বছর ১৪ জুলাই বাস্তিল দিবসে নিসের সমুদ্রের ধারে রাস্তায় এক আইএস জঙ্গি ট্রাক দিয়ে পিষে মারে ৮৬ জনকে। জখম হন প্রায় ৫০০।
কিন্তু আজ সবাই বলছেন, পুলিশের চূড়ান্ত তৎপরতাতেই বড় হামলা এড়ানো গিয়েছে। যে রক্ষী আক্রান্ত হন, তাঁর আঘাত গুরুতর নয়। দুষ্কৃতীর দু’টি ব্যাগে আরও একটা বড় ছুরি ও রঙের অনেকগুলো খালি কৌটো ছিল।
পাঁচ বার গুলি করা হয়েছিল হামলাকারীকে। পরে সরকারি কৌঁসুলি ফ্রাঁসোয়া মল্যা জানান, আততায়ী মিশরীয়। সে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে হামলা চালিয়েছে, না নেপথ্যে কোনও জঙ্গি গোষ্ঠী রয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ প্রধান মিশেল কাদো জানান, সন্দেহজনক আচরণের জন্য এক জনকে আটক করা হয়েছে।
প্যারিসের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র ‘মোনালিসা’র এই বাসস্থান। প্রতিদিন সেখানে গড়ে ২৩ হাজার মানুষ আসেন। মিউজিয়াম খোলে সকাল ন’টায়। আজ যখন হামলা হয়, তখন ভেতরে ছিলেন হাজারখানেক দর্শক। হঠাৎ তাঁরা লাউডস্পিকারে শোনেন, ‘‘আতঙ্কিত হবেন না।
নিরাপত্তার খাতিরে আপনাদের অন্য ঘরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।’’ লন্ডন থেকে প্যারিসে এসেছেন চার্লস অ্যাটকিন্স। তাঁর কথায়, ‘‘ভয় পেয়েছিলাম। কিন্তু রক্ষীরা অত্যন্ত দক্ষ ভাবে আমাদের একটা হলঘরে নিয়ে যান। সেখানে কোনও জানলা ছিল না।’’ আজ বন্ধ হলেও শনিবার মিউজিয়াম খুলবে বলে জানান ল্যুভর কর্তৃপক্ষ।