ত্রিরিশেই থেমে গেল সোনালী ময়ূরের ডানা!

নভেম্বর ১৭, ২০১৬
ইউ শুংয়ে
Spread the love

আয়না২৪ ডেস্ক

আকাশে উড়বার এবং  ছোঁয়ার স্বপ্ন  ছিল তাঁর।  কিন্তু মাঝপথেই   থেমে গেল সেই সোনালী ময়ূরের  ডানা। বয়স মাত্র ত্রিশ ছুঁই ছুঁই অথচ এই বয়সেই একটি উজ্জ্বল স্বপ্নের পরিসমাপ্তি হলো চীনের প্রথম মহিলা যুদ্ধবিমান চালকদের অন্যতম ইউ শুংয়ের।

গত শনিবার হাবেই প্রদেশে  একটি প্রশিক্ষণ চলাকালে বিমানটির দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ইউয়ের। বিমান বাহিনী  বিষয়টি নিয়ে মুখ  না খুললেও  প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, শনিবার ওই প্রশিক্ষণের সময় একটি জে-১০ যুদ্ধবিমান চালাচ্ছিলেন ইউ। সঙ্গে ছিলেন  আরও এক সহ বিমানচালক। প্যারাশ্যুট খুলে বিমান থেকে ঝাঁপ দেওয়ার সময় অন্য একটি জে-১০ যুদ্ধবিমানের একটি ডানায় ধাক্কা লাগে ইউয়ের। তাঁর সহ বিমানচালক নিরাপদে প্যারাশ্যুট খুলে নেমে আসতে পারলেও ফেরা হয়নি ইউয়ের। আকাশেই উবে যায়  তাঁর  স্বপ্ন।

ইউয়ের এই হঠাৎ চলে যাওয়া মানতে পারছেন না তাঁর সহযোদ্ধা ও বন্ধুবান্ধবরাও। ইউয়ের এক বন্ধু ওয়ান ইয়েং জানাচ্ছেন, ভীষণই ভাল মানুষ ছিলেন ইউ। বন্ধুদের নিয়ে থাকতে পছন্দ করতেন। বিমান চালনার পাশাপাশি বই পড়তে ভালোবাসতেন। ঘটনার দু’দিন আগেই ওয়ানের সঙ্গে কথা হয়েছিল ইউয়ের। দেখা করারও কথা ছিল তাঁদের। আরও অনেকটা উঁচুতে ওড়ার স্বপ্নের মতোই বাকি রয়ে গেল সেটাও।

‘সোনালি ময়ূর’ নামেও পরিচিত ছিলেন ইউ। চিনের এক স্থানীয় সোশ্যাল মিডিয়ায় দং তাও জান লিখেছেন, ‘‘জীবনের সব চেয়ে সুন্দর সময়ে চলে গেলেন ইউ।’’ আর এক জনের কথায়, এর আগেও একাধিক বার দুর্ঘটনার মুখে পড়েছে জে-১০ যুদ্ধবিমান। বিমানে গঠনগত কিংবা প্রযুক্তিগত কোনও ত্রুটির জন্যই বারবার দুর্ঘটনা কি না তা খতিয়ে দেখতে তদন্তের দাবি করেছেন তিনি।

১৯৮৬ সালে সিয়াচেনের সংঝাউতে জন্ম ইউয়ের। ২০০৫ সালে পিপলস লিবারেশন আর্মির বায়ুসেনা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন। ২০০৯ সালে সেখান থেকে পাশ করে বেরোন ইউ। চিনের প্রথম ১৬ জন মহিলা যুদ্ধবিমান চালকদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন তিনি। শুধু তা-ই নয়, ২০১২ সালে যে চার জন মহিলা প্রথম জে-১০ যুদ্ধবিমান চালানোর অনুমতি পেয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যেও অন্যতম ছিলেন ইউ।

সম্প্রতি একটি চিনা সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইউ জানান, আকাশে উড়তে পারেন বলে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘আকাশে ওড়ার কথা ছাড়া আর কোনও কিছুই ভাবতে চাই না আমি। যদি সম্ভব হত, সারাক্ষণ আকাশের দিকেই তাকিয়ে থাকতাম। একটা সম্পূর্ণ অন্যরকম দুনিয়া। আর সেটা ভীষণ সুন্দর।’