আয়না ২৪ প্রতিনিধি
দুই দফা মেয়াদ শেষে হোয়াইট হাউস ছাড়ছেন বারাক ওবামা। ইতিমধ্যে ওয়াশিংটন ডিসিতে ভাড়া করা বাড়িতে ওবামা পরিবারের ব্যক্তিগত জিনিসপত্র সরিয়ে নেওয়ার কাজ প্রায় শেষ। পাশাপাশি হোয়াইট হাউসের নতুন অতিথি ডোনাল্ড ট্রাম্প পরিবারের জন্য নতুন ঘর গোছানোর কাজ চলছে। আগামীকাল শুক্রবার সকালে শেষবারের মতো ট্রাম্পের সঙ্গে করমর্দন শেষে হোয়াইট হাউস ছাড়বেন ওবামা।সেই বাড়িতে ঢুকবেন ট্রাম্প।
সুখবর নিয়েই প্রস্থান করছেন ওবামা। ওয়াশিংটন পোস্ট ও এবিসি টিভির সর্বশেষ জনমত জরিপে যুক্তরাষ্ট্রের ৬০ শতাংশ মানুষ ওবামার কাজে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। সন্তুষ্ট নন এমন লোকের সংখ্যা ৩৮ শতাংশ। একই সময়ে প্রকাশিত পলিটিকো ও মর্নিং কনসাল্ট গ্রুপের জনমত জরিপে ৫৪ শতাংশ মানুষ ওবামার কাজের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। অন্যদিকে, ক্ষমতা গ্রহণের আগমুহূর্তে ট্রাম্পের জনসমর্থন ৪২ শতাংশ।
তাঁকে সমর্থন করেন না এমন মার্কিনের সংখ্যা ৪৭ শতাংশ। সাম্প্রতিক ইতিহাসে এত কম জনসমর্থন নিয়ে কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট তাঁর প্রশাসন শুরু করেননি। ট্রাম্প অবশ্য নেতিবাচক এসব জরিপ ডাহা মিথ্যা বলে বাতিল করে দিয়েছেন।
ট্রাম্পের অবশ্য এ নিয়ে কোনো বাড়তি আগ্রহ নেই। দেশের কৃষ্ণকায় অথবা অন্যান্য সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর সঙ্গে দূরত্ব কমাতে তিনি এখন পর্যন্ত কোনো আগ্রহ দেখাননি বা উদ্যোগ গ্রহণ করেননি। শুধু রিপাবলিকান সমর্থকদের মাথায় রেখেই তিনি নিজের ভবিষ্যৎ কেবিনেট সাজিয়েছেন।
তাঁর প্রিয় যোগাযোগমাধ্যম টুইটারকে তিনি যেভাবে ব্যবহার করে চলেছেন, তাতেও এই বিভক্তি বাড়ছে। নাগরিক অধিকার আন্দোলনের বিখ্যাত নেতা জন লুইসের বিরুদ্ধে তাঁর টুইটার যুদ্ধ এখনো চলছে। মার্টিন লুথার কিংয়ের ঘনিষ্ঠ সহকর্মী লুইস চার দিন আগে, ট্রাম্পের জয়ের পেছনে মস্কোর হাত রয়েছে, এই যুক্তিতে তাঁকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ‘অবৈধ’ বলেছিলেন। জবাবে লুইসকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করেন ট্রাম্প। তাঁর সর্বশেষ টুইটার হামলায় তিনি লুইসকে মিথ্যাচারের জন্য অভিযুক্ত করেছেন।
লুইসের প্রতি ট্রাম্পের এই আক্রমণে ক্ষিপ্ত ডেমোক্রেটিক কংগ্রেস সদস্যদের একাংশ শুক্রবারের অভিষেক অনুষ্ঠানে থাকছেন না বলে জানিয়েছেন। তাঁদের সংখ্যা ৫০ বা তার চেয়েও বেশি হবে।
ট্রাম্পের অভিষেকের দিন তাঁর ক্ষমতা গ্রহণের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের আয়োজন আরও বিস্তৃত হয়েছে। শুধু ওয়াশিংটনে নয়, যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য শহরেও বিক্ষোভের প্রস্তুতি চলছে। একাধিক ছাত্র সংগঠন জানিয়েছে, শুক্রবার তারা ক্লাস বর্জন করবে।
ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, তাঁর অভিষেক অনুষ্ঠান জনসমাবেশ ও জাঁকজমকের দিক দিয়ে আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে। ওয়াশিংটন ডিসির পুলিশ অবশ্য ভিন্ন কথা বলেছে। তাদের হিসাব অনুযায়ী ট্রাম্পের অভিষেকে অংশ নেবে এমন মানুষের সংখ্যা ৭-৮ লাখ হবে, যা ওবামার ২০০৯ সালের অভিষেকে অংশগ্রহণকারীদের অর্ধেক। ব্যাপারটা ট্রাম্পের জন্য এতটা মর্যাদাহানিকর হয়ে উঠেছে যে তিনি টুইটারে তাঁর সমর্থকদের অভিষেকে অংশগ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছেন।
শুক্রবার ওয়াশিংটনের স্থানীয় সময় ১২টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ১১টায়) ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন। এর পরপরই তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে উদ্বোধনী ভাষণ দেবেন। সে সময় একই শহরে বারাক ও মিশেল ওবামা ব্যস্ত থাকবেন নতুন ঘর সাজাতে।