আয়না২৪ ডেস্ক
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হলেন ‘ভবিষ্যৎ একনায়ক’। আর বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে বেশিদিন টিকতে পারবেন না। কারণ, ব্রেক্সিট ‘বিচ্ছেদ’ টিকবে তিন দিন। এমন ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন বিলিয়নিয়ার ব্যবসায়ী জর্জ সরোস। সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে বক্তৃতা দিতে গিয়ে এই প্রখ্যাত বিনিয়োগকারী ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের প্রাক্কালে এ মন্তব্য করেন।
৮৬ বছর বয়সী জর্জ সরোস বলেন, ট্রাম্প একজন প্রতারক ও ভণ্ড ব্যক্তি, যিনি বাণিজ্য যুদ্ধ লাগানোর পাঁয়তারা করছেন। ব্লুমবার্গ টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সরোস বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে নিশ্চিত যে ট্রাম্প ব্যর্থ হতে যাচ্ছে। এর কারণ এই নয় যে আমার মতো লোকেরা তাকে ব্যর্থ দেখতে চায়। বরং এ কারণে যে, যেসব ধারণার ওপর তিনি চলেন সেগুলো বৈশিষ্ট্যগতভাবেই পরস্পরবিরোধী।’
বিশ্বের শীর্ষ ৩০ ধনীর একজন সরোস ২০১৫ সালের জুনে প্রায়োরিটিজ ইউএসএ অ্যাকশনে ১০ লাখ ডলার দান করেন। ওই সংস্থা হিলারি ক্লিনটনকে সমর্থন দিয়েছিল। সরোস বলেন, তার ধারণা ছিল না ট্রাম্প জিতবে। তার জয়ে তিনি বিস্মিত।
আর্থিক দুনিয়ায় অত্যন্ত প্রভাবশালী সরোস দাভোসে ব্যবসায়ী নেতা ও সাংবাদিকদের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে আরও বলেন, ট্রাম্পের শাসনামলে এক ধরনের অনিশ্চয়তা বিরাজ করবে, ফলে আর্থিক বাজারও অত ভালো করবে না।
এরপর ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ছেড়ে যুক্তরাজ্যের প্রস্থানের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইইউ ছেড়ে যাওয়ার ৩ দিনের মাথায় আবার জোটে ঢুকে যেতে পারে বৃটেন! তার ভাষ্য, ‘আমার মতে প্রধানমন্ত্রী মে ক্ষমতায় টিকবেন এমনটা কঠিন। ইতিমধ্যে তার মন্ত্রিসভা বিভিন্ন ইস্যুতে বিভক্ত। পার্লামেন্টে তার সংখ্যাগরিষ্ঠতা খুব অল্প। আমি মনে করি তিনি টিকবেন না।’
১৯৯২ সালে ১০ বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের পাউন্ড বিক্রি করে ১ বিলিয়ন ডলার কামিয়েছিলেন সরোস। এরপর থেকে তার নাম দেয়া হয় ‘দ্য ম্যান হু ব্রোক দ্য ব্যাংক অব ইংল্যান্ড’। বৃটিশ জনগণ সম্পর্কে তিনি বলেন, বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি অতটা খারাপ নয় যতটা খারাপ হবে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল। কিন্তু মুদ্রার মান কমে যাওয়ায় মুদ্রাস্ফীতি দেখা দেবে। এর ফলে জীবনমান কমে যাবে। এ জন্য কিছুটা সময় লাগবে, কিন্তু যখন হবে তখন তারা বুঝবে যে আগের চেয়ে তারা কম আয় করছে। কারণ, জীবনধারণের ব্যয় যত বাড়ছে তত আয় বাড়ছে না।
ব্রেক্সিট সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, এই বিচ্ছেদ হতে অনেক দিন লাগবে। বিয়ে করার চেয়ে বিচ্ছেদ করা বেশি কঠিন। তাই আমি মনে করি পুনর্মিলনের একটি ইচ্ছা জাগ্রত হবে। তাই তাত্ত্বিক ও বাস্তবিকভাবে ২০১৯ বা ২০২০ সালে যখন বৃটেন ইইউ ত্যাগ করবে, (কারণ এটি হতেই হবে), এরপর তারা কোনো এক শুক্রবার বা সপ্তাহান্তে আবার যোগ দিতে পারে এবং সোমবার সকালের জন্য নতুন আয়োজন ঠিক করা হতে পারে।