আয়না২৪ ডেস্ক
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে রক্ষিত দুই হাজার ৮০০ গোপন নথি প্রকাশ করেছে দেশটির ন্যাশনাল আর্কাইভস।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নথিগুলো ‘ডিক্লাসিফায়েড’ করার নির্দেশ দেওয়ার পরপরই সেগুলো উন্মুক্ত করা হয়।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত নথির মাধ্যমে কেনেডি হত্যাকাণ্ড সংশ্লিষ্ট মার্কিন গোপনীয় গোয়েন্দা নথির ৯০ শতাংশই উন্মুক্ত হল বলে জানিয়েছে বিবিসি।
ট্রাম্প বলেন, ‘ভয়াবহ ওই ঘটনার সব তথ্য জানার অধিকার রাখেন মার্কিন জনগণ; তাই এ নথিগুলোর ওপর চেপে থাকা পর্দা সরানোর নির্দেশ দিয়েছি আমি।
এর আগেও কেনেডি হত্যা সংক্রান্ত বেশকিছু গোপন নথি প্রকাশিত হয়েছিল। ১৯৯২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস ২৫ বছরের মধ্যে ওই হত্যাকাণ্ড সংশ্লিষ্ট ৫০ লাখ পৃষ্ঠার সব নথি উন্মুক্তের আইন করে। বৃহস্পতিবার ছিল ওই সময়সীমার শেষ দিন।
যদিও সব গোপন নথি প্রকাশিত হয়নি। জাতীয় নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে ট্রাম্প বেশকিছু সম্পাদিত নথি প্রকাশে নতুন করে আরও ছয় মাস সময় নিয়েছেন।
অনেকের আশঙ্কা, সিআইএ ও এফবিআইসহ গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর চাপের মুখে শেষ পর্যন্ত ওই নথিগুলো প্রকাশিত হবে না।
চুয়ান্ন বছর আগে ১৯৬৩ সালের ২২ নভেম্বর ডালাসে আততায়ীর গুলিতে নিহত হন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট কেনেডি।
যে খোলা লিমুজিনে চড়া অবস্থায় কেনেডি গুলিবিদ্ধ হন, সে গাড়িতে ছিলেন টেক্সাসের তৎকালীন গভর্নর জন কনেলিও, গুলিতে তিনিও আহত হন। কাছাকাছি থাকা পুলিশ কর্মকর্তা জেডি ট্রিপিটও গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।
পুলিশ পরে লি হার্ভি অসওয়াল্ড নামে এক ব্যক্তিকে আটক করে তার বিরুদ্ধে কেনেডি ও ট্রিপিটকে হত্যার অভিযোগ আনে।
দুইদিন পর ডালাস পুলিশ ডিপার্টমেন্টের বেইজমেন্টে লিকে স্থানীয় এক নাইটক্লাবের মালিক জ্যাক রুবি গুলি করে হত্যা করেন।
আটক অবস্থাতেই লি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে বলেছিলেন, তাকে ছকে ফেলে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।
হত্যাকাণ্ডের তদন্তে গঠিত ওয়ারেন কমিশন ১৯৬৪ সালে দেওয়া প্রতিবেদনে বলে, টেক্সাসের স্কুল বুক ডিপোজিটরি ভবন থেকে লি প্রেসিডেন্টকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে।
১৯৫৯ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভ্রমণে যাওয়া সাবেক মেরিন সদস্য লি ১৯৬২ পর্যন্ত সেখানে ছিলেন বলে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়।
কেনেডিকে গুলি করার দুই মাস আগেও স্বঘোষিত মার্কসবাদী লি মেক্সিকো সিটির রাশিয়ান ও কিউবা দূতাবাসে গিয়েছিলেন বলে ওয়ারেন কমিশনের দাবি।
যদিও ‘স্থানীয় কিংবা আন্তর্জাতিক কোনো ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে লি অথবা রুবি এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন’ বলে প্রমাণ পাননি তারা।
কনেলি পরে জানান, তাকে আঘাত করা গুলির সঙ্গে কেনেডির শরীরে পাওয়া গুলির ভিন্নতা ছিল।
১৯৭৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভের করা এক তদন্ত কমিটি কেনেডি হত্যাকাণ্ডের সময় ঘটনাস্থলে ‘অন্তত দুই বন্দুকধারী ছিল’ বলে সন্দেহ প্রকাশ করে।
তখন থেকেই এই বিষয়ে গোপনীয় গোয়েন্দা প্রতিবেদন প্রকাশের দাবি ওঠে।
সূত্র: বিবিসি