• Home  / 
  • বিশ্ব  / 

ইরানের সঙ্গে করা পরমানু চুক্তি বাতিলের ঘোষণা ট্রাম্পের!

Spread the love

 

আয়না২৪ প্রতিবেদক

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরানের  সঙ্গে পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।সেই সঙ্গে ইরানের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ অবরোধের ঘোষণাও দিলেন যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্ট। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসের ডিপ্লোমেটিক কক্ষে চুক্তি বাতিলের এই  ঘোষণা দেন  মি.ট্রাম্প।

২০১৫ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সময়ে করা চুক্তিটিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ‘ক্ষয়ে যাওয়া, পচা’ চুক্তি হিসেবে মন্তব্য  তরেন ট্রাম্প। ট্রাম্প বলেন, মার্কিন নাগরিক হিসেবে আমি লজ্জিত। বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এমন তধ্য তুলে ধরা হয়েছে। 
বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই ঘোষণার বিরোধিতা করেছে ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও জার্মানি। আর ইসরায়েল, সৌদি আরব ট্রাম্পের চুক্তি বাতিলের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে। 

ট্রাম্পের এই ঘোষণার  আগে ইরানের সঙ্গে ছয় বিশ্বশক্তির করা পরমাণু চুক্তির সময় যুক্তরাষ্ট্র বেরিয়ে যেতে পারে বলে হুমকি দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তখন ট্রাম্পের ভাষ্য ছিল, এটি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বাজে চুক্তি। ২০১৬ সালে নির্বাচনী প্রচারণার সময়  ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছিলেন, তিনি ক্ষমতায় গেলে তাঁর পূর্বসূরি  ওবামার করা এই চুক্তি বাতিল করবেন।  যুক্তরাষ্ট্র ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি করেছিল। যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য দেশগুলো এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এই চুক্তির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিল। দীর্ঘদিন আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে  এই চুক্তিতে পৌঁছায় যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র পক্ষ। 

 

মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশ ইরানের  সঙ্গে হওয়া এই পরমাণু চুক্তির আনুষ্ঠানিক নাম জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ)। চুক্তি মোতাবেক ইরান তার পরমাণু কর্মসূচি সীমিত করতে সম্মত হয়। তেজস্ক্রিয় পদার্থ ইউরেনিয়ামের মজুদ কমিয়ে আনার প্রস্তাবে রাজি হয় ।  ইউরেনিয়াম পরমাণু অস্ত্র তৈরির কাজে ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়া ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার জন্য ব্যবহৃত সেন্ট্রিফিউজের সংখ্যা কমিয়ে আনার শর্তও ছিল ওই চুক্তিতে।

এসব শর্ত মেনে চলার বদলে মধ্যপ্রাচ্যের শক্তিধর দেশ ইরানের ওপর আরোপ করা বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। বিশেষ করে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউর দেওয়া নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয় এই চুক্তির মধ্যদিয়ে। পশ্চিমাদের এসব নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরানের অর্থনীতি সংকুচিত হয়ে পড়ে। পরমাণু বিষয়ক এমন  চুক্তি হওয়ার ইরান ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিদেশি বিনিয়োগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রবেশের সুযোগ পায় ইরান।

ইরানের সঙ্গে এই  চুক্তিটি করে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্য।    সে সব দেশ হলো-যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, চীন ও রাশিয়া। এর সঙ্গে জার্মানিও সগমত ছিল। যদিও  চুক্তির আগে ও পরে ইরান বরাবরই দাবি করে এসেছে যে, তাদের পরমাণু কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ ছিল। তবে যুক্তরাষ্ট্র না চাইলেও চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী অন্যান্য দেশ চায় চুক্তিটি অটুট থাকুক। জাতিসংঘ প্রেসিডেন্ট  ট্রাম্পকে চুক্তি থেকে সরে না আসার পরামর্শ দেয়। প্রেসিডেন্ট  ট্রাম্পকে ঠেকাতে গেল রোববার যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াশিংটন সফরে যান। অপরদিকে ফ্রান্স ও জার্মানি  বলেছে ২০১৫ সালের  ওই চুক্তিকে সম্মান জানাতে চায় তাঁরা।

অপরদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের চুক্তি বাতিলের হুমকির প্রেক্ষিতে মধ্যপ্রাচ্যের গুরুত্বপূর্ণ এই দেশটির   প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেছেন, সাময়িকভাবে কিছু সমস্যা হলেও বিশ্বের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাবে তাঁর দেশ।গতকাল মঙ্গলবার সকালে ইরানের রাজধানী তেহরানে এক অনুষ্ঠানে  তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞায় ‘দু্ই-তিন মাস কিছু সমস্যা হলেও’ তা ‘কাটিয়ে ওঠতে পাবে তাঁর দেশ।