আয়না২৪ ডেস্ক
শিনা বোরা হত্যায় অভিযুক্ত হলেন ইন্দ্রাণী মুখার্জি এবং তাঁর স্বামী পিটার মুখার্জি। একই মামলায় অভিযুক্ত হয়েছেন শিনার প্রাক্তন স্বামী সঞ্জীব খান্নাও। যদিও তিন অভিযুক্তই নিজেদের নির্দোষ বলে দাবি করেছেন। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে আবার শুনানি শুরু হবে। এদিকে, অভিযুক্ত হওয়ার দিনই ইন্দ্রাণী আবার পিটারের কাছে ডিভোর্স চেয়ে বসেছেন। তখন অবশ্য পিটার আদালতে ছিলেন না। তাঁকে তখন কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বিচারপতি অবশ্য এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেননি। তিনি শুধু বলেছেন, ‘এটা দু’পক্ষের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। আদালত এই বিষয়ে কিছু বলবে না।’ ঠিক কী কারণে বিচ্ছেদ চাইছেন ইন্দ্রাণী তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।
৫ বছর আগে শিনা বোরা অন্তর্ধান রহস্য তোলপাড় করে দিয়েছিল মুম্বইকে। আর এর ৩ বছর পরে শিনার অর্ধদগ্ধ দেহ পাওয়া যায় মহারাষ্ট্রের রায়গড় জঙ্গলে। চক্রান্ত করে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে ইন্দ্রাণী এবং তাঁর স্বামী পিটারের বিরুদ্ধে। একই অভিযোগ তাঁর প্রাক্তন স্বামী সঞ্জীবের বিরুদ্ধে। বোনের অন্তর্ধান নিয়ে বারবার প্রশ্ন করায় শিনার ভাই মিখাইলকেও হত্যার চেষ্টা করা হয়। মিখাইল আগেই অভিযোগ করেছিলেন তাঁর খাবারে বিষ মেশানো হয়েছিল। তাঁর অভিযোগের তীর ছিল ইন্দ্রাণী এবং তাঁর প্রাক্তন স্বামী সঞ্জীব খান্নার বিরুদ্ধে।
তিন অভিযুক্তই এদিন আদালতে হাজির ছিলেন। পরবর্তী পদক্ষেপ তৈরি করার জন্য তিনজনই আদালতের বাইরে আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলেন। সিবিআই জানিয়েছে, পিটারের প্রথম পক্ষের ছেলে রাহুলের সঙ্গে সম্পর্কের জন্যই খুন হতে হয় শিনাকে। সম্পত্তিগত কারণও ছিল। শিনা বোরা হত্যাকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন ইন্দ্রাণীর গাড়ির চালক শ্যামবীর রাই। যদিও তিনি রাজসাক্ষী হয়ে যান।
২০১২–র ২৪ এপ্রিল শিনাকে হত্যা করা হয়। পরের দিন রায়গড়ের জঙ্গলে শিনার দেহ পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এই কাজে ইন্দ্রাণীর সঙ্গে ছিলেন সঞ্জীব এবং গাড়ির চালক শ্যামবীর। গোটা পরিকল্পনার কথা জানতেন পিটার। ২০১৫–এ পাওয়া যায় একটি অর্ধদগ্ধ দেহ। ডিএনএ পরীক্ষায় জানা যায় দেহটি শিনার। একে একে গ্রেপ্তার করা হয় ইন্দ্রাণী, পিটার, সঞ্জীব এবং শ্যামবীরকে। পরে রাজসাক্ষী শ্যামবীর সিবিআইকে জানায় কীভাবে হত্যা করা হয়েছিল শিনাকে। অভিযুক্তদের আইনজীবীরা অবশ্য মঙ্গলবার আদালতে দাবি করেছেন, তাঁদের মক্কেলদের বিরুদ্ধে কোনও তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।
২০০২ সালে পিটারকে বিয়ে করেন ইন্দ্রাণী। দু’পক্ষেরই এটা দ্বিতীয় বিয়ে। পিটারের প্রথম পক্ষের ছেলের নাম রাহুল। রক্তের সম্পর্কের নিরীখে ভাই, তবু সেই রাহুলের সঙ্গেই আবার প্রেমের সম্পর্ক ছিল শিনার। ইন্দ্রাণীর প্রথম পক্ষের স্বামী সঞ্জীব। ইন্দ্রাণী–সঞ্জীবের একমাত্র মেয়ে বিধি। সঞ্জীবের সঙ্গে বিয়ে হওয়ার আগে সিদ্ধার্থ দাসের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল ইন্দ্রাণীর। যা বিয়ে পর্যন্ত গড়ায়নি। সিদ্ধার্থ–ইন্দ্রাণীর ঔরসজাত দুই সন্তান শিনা এবং মিখাইল। বরাবরই ইন্দ্রাণী ছিলেন উচ্চাকাঙ্খী, অর্থবিলাসিনী। সে কারণেই ১৯৮৯–এ সিদ্ধার্থকে ছেড়ে তিনি সঞ্জীবকে বিয়ে করেন। একদিন সঞ্জীবকে ছেড়ে চলে যান পিটারের কাছে। এবার পিটারের কাছেও ডিভোর্স চাইলেন ইন্দ্রাণী।