আয়না ২৪
‘সালাম সালাম হাজার সালাম’, ‘ওরে নীল দরিয়া’সহ বিখ্যাত অনেক গানের শিল্পী আবদুল জব্বার আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
আজ বুধবার সকাল ৯টা ২০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
অনেক দিন ধরে বিএসএমএমইউয়ের আইসিইউতে অসুস্থ আবদুল জব্বারের চিকিৎসা চলছিল। হাসপাতালের কিডনি রোগ বিভাগের প্রধান অধ্যাপক শহীদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘তাঁর কোনো কিডনিই কাজ করছিল না। কিডনি প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। পরিবার সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করায় শিল্পীর অবস্থার অবনতি হয়।
আবদুল জব্বার ১৯৩৮ সালের ৭ নভেম্বর কুষ্টিয়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৮ সাল থেকে তৎকালীন পাকিস্তান বেতারে তাঁর গান গাওয়া শুরু। তিনি ১৯৬২ সালে চলচ্চিত্রের জন্য প্রথম গান করেন।
১৯৬৪ সাল থেকে তিনি বিটিভির নিয়মিত গায়ক হিসেবে পরিচিতি পান।
১৯৬৮ সালে ‘এতটুকু আশা’ ছবিতে সত্য সাহার সুরে তাঁর গাওয়া ‘তুমি কি দেখেছ কভু’ গানটি জনপ্রিয়তা পায়। ১৯৬৮ সালে ‘পিচ ঢালা পথ’ ছবিতে রবীন ঘোষের সুরে ‘পিচ ঢালা এই পথটারে ভালোবেসেছি’ এবং ‘ঢেউয়ের পর ঢেউ’ ছবিতে রাজা হোসেন খানের সুরে ‘সুচরিতা যেয়ো নাকো আর কিছুক্ষণ থাকো’ গানে কণ্ঠ দেন। ১৯৭৮ সালে ‘সারেং বৌ’ চলচ্চিত্রে আলম খানের সুরে ‘ওরে নীল দরিয়া’ গানটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল ও প্রেরণা জোগাতে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে ‘সালাম সালাম হাজার সালাম’, ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’সহ অসংখ্য গানে কণ্ঠ দেন।
তাঁর গানে অনুপ্রাণিত হয়ে অনেকেই মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছিলেন।
এ ছাড়া যুদ্ধের সময় তিনি প্রখ্যাত ভারতীয় কণ্ঠশিল্পী হেমন্ত মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে মুম্বাইয়ের বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের পক্ষে জনমত তৈরিতে কাজ করেন। তখন কলকাতায় অবস্থিত বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প ঘুরে প্রেরণা জোগাতে হারমোনিয়াম বাজিয়ে গণসংগীত পরিবেশন করেছেন।
সংগীতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ আবদুল জব্বার ১৯৮০ সালে একুশে পদক ও ১৯৯৬ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার পান।