নিজস্ব প্রতিবেদক
অযাচিত মাইক ব্যবহার, যানবাহনে উচ্চমাত্রার হর্ণসহ জনবহুল ও আবাসিক এলাকায় নানা রকমের শব্দদূষণে অসহায় হয়ে পড়ছেন বরগুনা শহরবাসী।
প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট বিভাগের নজরদারি না থাকায় প্রতিনিয়িত েএই অবস্থা অসহনীয় পর্যায়ে পৌছাচ্ছে। এই অসহনীয় শব্দদূষণের কবল থেকে রক্ষার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন শহরবাসী।
২০০৬ সালের শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা অনুযায়ী, নির্দিষ্ট এলাকায় নির্দিষ্ট ডেসিবল মাত্রায় মাইকে প্রচার করা যাবে বলে উল্লেখ করা হয়। নির্মাণকাজের ক্ষেত্রে আবাসিক এলাকার শেষ সীমানা থেকে ৫০০ মিটারের মধ্যে ইট বা পাথর ভাঙা মেশিন ব্যবহার করা যাবে না। নির্দিষ্ট মাত্রার অতিরিক্ত শব্দ সৃষ্টি হলে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে টেলিফোন, মৌখিক অথবা লিখিতভাবে জানানো যাবে।
বিধিমালায় আরো বলা হয়েছে, শব্দের মাত্রা অতিক্রমকারী যন্ত্রপাতি ব্যবহারের ক্ষেত্রে নীরব এলাকা ব্যতীত অন্যান্য এলাকায় ব্যবহারের জন্য আগে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে। সেক্ষেত্রে শব্দদূষণ মাত্রা অতিক্রমকারীকে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মৌখিকভাবে অথবা লিখিত নির্দেশ দেবেন। এ নির্দেশ লঙ্ঘনকারীর যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি আটক করা যাবে।
শহরের বেশ কয়েকটি এলাকার একাধিক ব্যক্তি বলছেন, সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মাছ-মাংস বিক্রি থেকে শুরু করে চিকিৎসক ও অন্যনান্য নানা পণ্যের বিজ্ঞাপনের জন্য উচ্ছৈইস্বরে অহরহ ব্যবহার হচ্ছে মাইকের। পাশাপাশি পাড়ায়-মহল্লায় ইটভাঙা, পাথরভাঙা মেশিনের শব্দ ছাড়াও রিকশা-অটোরিকশা, মোটরসাইকেলে উচ্চমাত্রার ক্ষতিকর হর্ণ ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে গোটা শহরের পরিবেশ অসহনীয় হয়ে উঠেছে।
অন্যদিকে শহরের সদর রোডের জনবহুল এলাকায় এমনকি সড়কের ওপরে স্টিল ও কাঠের আসবাব তৈরিতে ব্যবহৃত যন্ত্রের বিকট শব্দে মারাত্মক দূষণ হচ্ছে । এসব আসবাবে সড়কের ওপর রঙ করায় পথচারীদের মারাত্মক রাসায়নিক দূষণের শিকার হতে হচ্ছে।
বরগুনা জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য দারুল ইসলাম খোকন বলেন, যত্রযত্র মাইক ও শব্দযন্ত্র এবং যানবাহনে উচ্চমাত্রার হর্ণ ব্যবহার আইনত দণ্ডনীয়। তাছাড়া সম্প্রতি উচ্চ আদালত যানবাহনে হাইড্রোলিক হর্ণ ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন। বরগুনায় এ ধরনের শব্দ দূষণ দিনে দিনে বাড়ছে। এখন এটা অহনীয় পর্যায়ে পৌছে গেছে।এসব রোধে প্রশাসনের দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া দরকার।
যোগাযোগ করা হলে বরগুনার সিভিল সার্জন জসিম উদ্দীন বলেন, অতিরিক্ত শব্দদূষণ শিশুসহ সব বয়সের মানুষের জন্য ক্ষতিকর। অতিরিক্ত শব্দে মস্তিষ্কে বিরক্তির কারণ ঘটে। ফলে শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মস্তিষ্কে চাপ সৃষ্টি হয়, কর্মক্ষমতা কমে যায়, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়, বিশ্লেষণ ক্ষমতা কমে যায়। কাজকর্মে মন বসে না। মানুষ যখন ধীরে ধীরে বার্ধক্যে পৌঁছে যায় তখন শব্দ দূষণের মারাত্মক প্রভাব পরিলক্ষিত হয়।
এ বিষয়ে বরগুনার জেলা প্রশাসক মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, শব্দদূষণ অবশ্যই একটি বড় ধরনের সমস্যা। আমরা এ বিষয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।