আয়না২৪ ডেস্ক
বরগুনার তালতলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও যুবলীগের নেতা মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে এবার এক সরকারি কর্মচারীকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা পরিষদের মূল ফটকের সামনের সড়কে এ ঘটনা ঘটে।
কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ের প্রধান সহকারী জসিম উদ্দিন গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নিজ কার্যালয়ের কিছু কাগজপত্র ফটোকপি করার জন্য উপজেলা পরিষদের মূল ফটকের সামনে একটি দোকানে যান। খবর পেয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান তাঁর লোকজন নিয়ে সেখানে হাজির হন। তিনি জসিম উদ্দিনকে কাছে ডেকে এনে গালমন্দ করেন। জসিম এর প্রতিবাদ করেন। তখন চেয়ারম্যান তাঁর জামার কলার ধরে কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। তাঁর সহযোগী আনোয়ার মৃধাসহ আরও কয়েকজন এতে যোগ দেন। তাঁরা জসিমকে উপর্যুপরি কিল-ঘুষি ও লাথি মারেন। একপর্যায়ে জসিম রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন। পরে উপজেলা চেয়ারম্যান ও তাঁর লোকজন সেখান থেকে চলে যান। এরপর উপস্থিত কয়েক ব্যক্তি জসিমকে উদ্ধার করে তাঁর কার্যালয়ে নিয়ে যান।
জানতে চাইলে জসিম উদ্দিন বলেন, ‘তালতলী সদরে একখণ্ড সরকারি জমির বন্দোবস্ত দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান সেটা জানতে পেরে ওই জমি তাঁর বন্দোবস্ত নেওয়া বলে দাবি করেন। আমি তাঁর (উপজেলা চেয়ারম্যান) কাছে এ-সংক্রান্ত কাগজপত্র চাই। এতে তিনি ক্ষুব্ধ হন। এর জেরে গতকাল সকালে চেয়ারম্যান ও তাঁর কয়েকজন সহযোগী আমার ওপর হামলা চালান। আমি বুক, পিঠ ও কোমরে আঘাত পেয়েছি। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানিয়েছি। তিনি আমাকে ছুটি দিয়ে ঢাকায় চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। আমি চিকিৎসার জন্য ঢাকায় যাচ্ছি।’
মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মনিরুজ্জামান বলেন, ‘জসিম উদ্দিন স্থানীয় লোকদের কাছ থেকে ঘুষ নিয়ে কাজ করেননি। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে লোকজন তাঁকে লাঞ্ছিত করেছেন। আমি শেষ মুহূর্তে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। আমি তাঁকে মারধর করিনি।’
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত ইউএনও তৌছিফ আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
২০১৫ সালের ২৩ জুলাই বিকেলে তালতলী বন্দরের একটি চায়ের দোকান থেকে ধরে এনে স্থানীয় অংকুজানপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুন্দর আলী গাজীকে রাস্তায় ফেলে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান। পরে তাঁকে নিজ কার্যালয়ে ধরে নিয়ে কয়েকটি সাদা স্ট্যাম্পে জোর করে তাঁর সই রাখেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। -খবর প্রথম আলো