আয়না২৪ প্রতিনিধি
বরগুনার আমতলী উপজেলার আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নে তারিকাটা গ্রামের বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধে ঘর তোলার খবর পুলিশকে দেয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে শাহিদা বেগম নামের এক গৃহবধূকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে নির্যাতন করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কালাম প্যাদা ও তার লোকজন এ নির্যাতন করেছে বলে অভিযোগ শাহিদার পরিবারের। গুরুতর আহত শাহিদাকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনা ঘটেছে রবিবার সন্ধ্যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, উপজেলার আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের তারিকাটা গ্রামের বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের গাছ কেটে রবিবার সকালে ঘর তুলছিল কালাম প্যাদা, শহীদ প্যাদা ও তার সহযোগীরা। এ খবর পুলিশকে জানায় স্থানীয় জাকির হোসেন হাওলাদার। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘর তোলা বন্ধ করে দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে কালাম প্যাদা, শহীদ প্যাদা ও তার লোকজন জাকির হোসেনকে মারধর করে। ওই দিন সন্ধ্যায় জাকির হাওলাদারের ছোট ভাই মিজানুর রহমানের স্ত্রী শাহিদা বেগম বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের উপর ঘর তোলা স্থান দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল। এ সময় ওই স্থানে থাকা কালাম প্যাদা, শহীদ প্যাদা, ছালাম প্যাদা, রাসেল প্যাদা ও তার লোকজন গৃহবধু শাহিদার উপর অতর্কিত হামলা চালায়। শাহিদাকে বেধরক পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। তাদের ধারালো দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে তার মাথায় কেটে যায়। এ ছাড়া তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহৃ রয়েছে। শাহিদাকে মেরে তারা রাস্তায় ফেলে রাখে। পরে খবর পেয়ে তার পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে আমতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এ ঘটনায় গৃহবধূর স্বামী মিজানুর রহমান বাদী হয়ে সোমবার দুপুরে কালাম প্যাদাকে প্রধান আসামী করে ১৪ জনের নামে আমতলী থানায় মামলা করেছে।
সোমবার আমতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা গেছে, শরীরের ব্যাথার যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছেন শাহিদা। তার মাথায়, দু’হাতে ও পিঠে আঘাতের চিহৃ রয়েছে।
আহত শাহিদা বলেন, আমি বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের উপর দিয়ে হেটে যাচ্ছিলাম। এ সময় পিছন থেকে এসে কালাম প্যাদা, শহীদ প্যাদাসহ ও তাদের ৫/৬ জন সহযোগী আমার উপর হামলা চালায়। আমি ওদেরকে মারধর না করতে আকুতি জানালেও ওরা শুনেনি। ওরা আমাকে বেধরক পিটিয়েছে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করেছে।
আমতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার গৌরাঙ্গ হাজরা জানান,আহত শাহিদার মাথায় ৬ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্য ২ সেন্টিমিটার প্রস্থ ও ১ সেন্টিমিটার গভীর ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে।
জাকির হাওলাদার বলেন, বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের গাছ কেটে কালাম প্যাদা ও তার লোকজন ঘর তুলছিল। এ খবর পুলিশকে জানালে ওরা আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়। রবিবার সকালে ওরা আমাকে মারধর করেছে এবং ওইদিন সন্ধ্যায় আমার ছোট ভাইয়ের স্ত্রীকে বেধরক পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করেছে।
কালাম প্যাদা গৃহবধূকে মারধরের কথা অস্বীকার করে মুঠোফোনে বলেন খাস জমির দখল নিয়ে জাকির হাওলাদারের সাথে আমার মামলা রয়েছে। এ মামলা ধামাচাপা দেয়ার জন্য পরিকল্পিতভাবে জাকির হাওলাদার এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসও শাহ আলম জানান, ঘর তোলার খবর পেয়েছি। তিনি আরো জানান, কিছু দিন পূর্বে কালাম প্যাদাকে গাছ কাটার জবাব চেয়ে নোটিশ করেছি।
আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা মোঃ শহীদ উল্যাহ ঘর তোলা বন্ধের কথা স্বীকার করে বলেন, এক গৃহবধূকে মারধরের ঘটনায় মামলা হয়েছে। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।