সাফাতের মুঠোফোনেই ধর্ষণের ভিডিও!

Spread the love

আয়না২৪ প্রতিবেদন

 বনানীর ‘দ্য রেইনট্রি’ হোটেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনার ভিডিও ফুটেজ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় প্রধান আসামি আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ সেলিমের ছেলে সাফাত আহমেদের মুঠোফোন থেকে এই ভিডিও ফুটেজ উদ্ধার হয়েছে।
এ ঘটনায় সাফাতের বিরুদ্ধে বনানী থানায় আইসিটি অ্যাক্টে একটি মামলা দায়ের করবেন দুই অভিযোগকারীর একজন। ভিডিও ফুটেজে ধর্ষণের দৃশ্য আছে কিনা-এ ব্যাপারে তদন্ত সংশ্লিষ্ট কোনো কর্মকর্তাই মুখ খোলেনি। তবে সাফাতের মুঠোফোন থেকে দুই অভিযোগকারীর সঙ্গে সেলফি তোলা অনেক ছবি উদ্ধার করেছে। সাফাতের সঙ্গে অভিযোগকারীর জড়িয়ে ধরার ছবি রয়েছে। ডিবি কর্মকর্তারা বলছেন, ভিডিও ফুটেজ ও ছবি উদ্ধারের বিষয়টি আইসিটি অ্যাক্টে মামলা দায়েরের পর পুলিশ গণমাধ্যমকে জানাবে।
অপরদিকে, সাংসদ বজলুল হক হারুনের মালিকানাধীন ‘দ্য রেইনট্রি’ হোটেল থেকে উদ্ধার করা সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজের কিছু তথ্য উদঘাটন করা গেছে বলে দাবি করেছেন মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।
২৮ মার্চ ধর্ষণের ঘটনার পর ওই হোটেলে সাফাত, সাকিফ ও নাঈম একাধিকবার যাওয়ার ভিডিও ফুটেজ পাওয়া গেছে। উদ্ধার করা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ যাচাই করা হচ্ছে বলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
সাফাতের মুঠোফোন থেকে ভিডিও ফুটেজ উদ্ধারের খবর জানিয়ে মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, গাড়ি চালক বিল্লাল  রেইনট্রি হোটেলের ৭০১ নম্বর কক্ষের বাথরুম থেকে  মুঠোফোন দিয়ে ধর্ষণের দৃশ্য ভিডিও করে। বাথরুমের দেয়ালের কাঁচের রুমের দিক থেকে কিছুই দেখা যাবে না। কিন্তু বাথরুম থেকে দেয়ালের কাঁচ দিয়ে রুমের ভিতরের সব কিছু দেখা যায়। ভিডিও করার পর সাফাত তার  মুঠোফোনে ওই ফুটেজ নিয়ে নেয়।
ঘটনার কয়েকদিন পর সাফাত তার দেহরক্ষী রহমত আলীকে ওই দুই ছাত্রীর বাসায় পাঠিয়েছিলেন। দুই ছাত্রীর পারিবারিক বিষয়ে খোঁজ নেওয়ার জন্য সাফাতের নির্দেশে এ কাজ করেছিলেন বলে জিজ্ঞাসাবাদে রহমত আলী জানান। গাড়ি চালক বিল্লাল এই মামলার চার দিনের রিমান্ডে আছেন। গতকাল তার রিমান্ডের তৃতীয় দিন শেষ হয়েছে। এই মামলায় সাফাতের দেহরক্ষী রহমত আলীর তিন দিনের রিমান্ড গতকাল শেষ হয়েছে।
 মামলার এজাহারভুক্ত দুই নম্বর আসামি নাঈম আশরাফের ৭ দিনের রিমান্ডের প্রথম দিন ছিল গতকাল। তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, ডিবি কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদের সময় নাঈমের মুখোমুখি করা হয় সাফাতের গাড়ি চালক বিল্লাল ও দেহরক্ষী রহমত আলীকে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের সময় সেখানে উপস্থিত ডিবির এক কর্মকর্তা বলেন, বিল্লাল আগেই দুই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনার বিস্তারিত জানিয়েছেন। নাঈমের সামনে ফের একই ধরনের বক্তব্য দেন। এ সময় নাঈমের কাছে জানতে চাওয়া হয় বিল্লাল যা বলছে তা ঠিক কি না, তখন নাঈম ‘ঠিক’ বলে সম্মতি দেয়। সেই সঙ্গে নাঈম এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেন।
নাঈমের সঙ্গে একাধিক নারীর অনৈতিক সম্পর্কের তথ্য দিয়ে ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘নাঈম আসলে সমাজের উচ্চবিত্ত শ্রেণির তরুণীদের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পেশাদার দালাল।’   গুলশান ও বনানী এলাকার উচ্চবিত্ত শ্রেণির বখে যাওয়া তরুণ-তরুণীর মধ্যে ইয়াবা সরবরাহ করতেন। ইয়াবা সরবরাহ করেই তিনি এই সোসাইটির খুব কাছে চলে যান। জিজ্ঞাসাবাদের সময় নাঈমের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে, সাফাতের সঙ্গে তার কিভাবে পরিচয় হয়েছে।