আয়না২৪ নিজস্ব প্রতিনিধি
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বাস দুর্ঘটনায় হাত হারানো কলেজছাত্র রাজীব হোসেনের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। তাঁকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যে রাজীবের মাথার খুলিতে ফাটল ধরেছে। চোখের পেছনে মস্তিষ্কে পানি ও রক্ত জমেছে।
প্রথমে ধারণা করা হয়েছিল, রাজিব হোসেন হয়তো শুধু হাতই হারিয়েছেন। কিন্তু সিটি স্ক্যান ও এমআরই করার পর চিকিৎসকরা বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, রাজিবের মাথার খুলিতেও চিড় ধরেছে। মস্তিস্কেও তার আঘাত লেগেছে, রক্ত জমেছে। জ্ঞান ফিরলেও কথা বলছেন না, খাবারও মুখে তুলছেন না।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থোপেডিকস বিভাগের প্রধান শামসুজ্জামান শাহীন আজ মঙ্গলবার সকালে জানান, মাথায় আঘাতের কারণে নিউরোলজিক্যাল অবস্থার অবনতি হওয়ায় ও শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ার রাজীবকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে।
রাজীব হোসেনের পরিবারের সদস্যরা বলেছেন, বৃহস্পতিবার তুলনায় শুক্রবার তার অবস্থার কিছুটা অবনতি হয়েছে। তবে মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার অবস্থা অবনতির মত তেমন কিছু হয়নি, এখনো স্টেবল আছে। গতকাল রাত আটটার দিকে সে কিছুটা আনস্টেবল হলে লাইফ সার্পোটে রাখার প্রস্তুতি নিয়েছিল চিকিৎসকরা। রাজীবের স্বজনরা উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে পাঠানোর দাবি জানিয়েছেন।
শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রাজিবকে দেখতে গিয়েছিলেন জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ ও পটুয়াখালী-২ আসনের সংসদ সদস্য এ এস এম ফিরোজ (এমপি)। কর্তব্যরত একজন চিকিৎসক চিফ হুইফকে বলেন, রাজিবের শুধু হাত ডেমারেজ হলে হয়তো তেমন শঙ্কা থাকতো না। কিন্তুু তার মাথার সামনের অংশের দুপাশের মস্তিষ্কে আঘাত রয়েছে। এটিই এখন সবচেয়ে বড় শঙ্কা।
চিকিৎসাধীন রাজীবকে দেখার পর মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, সুস্থ হলে তাঁকে সরকারি চাকরি দেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি।
৪ এপ্রিল মঙ্গলবার দুপুরে প্রতিদিনের মতো বিআরটিসির একটি দ্বিতল বাসে চড়ে মহাখালী সরকারি তিতুমীর কলেজে যাচ্ছিল রাজীব। হাতটি বেরিয়ে ছিল সামান্য বাইরে। হঠাৎই পেছন থেকে একটি বাস বিআরটিসির বাসটিকে পেরিয়ে যাওয়ার বা ওভারটেক করার জন্য বাঁ দিকে গা ঘেঁষে পড়ে। দুই বাসের প্রবল চাপে রাজীবের হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ওই দিনই তাকে পান্থপথের শমরিতা হাসপাতাল ও বুধবার ঢামেক হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকেরা চেষ্টা করেও বিচ্ছিন্ন সে হাতটি রাজীবের শরীরে আর জুড়ে দিতে পারেননি।