আয়না২৪ সংবাদদাতা
বিএনপি বিদ্যমান সংবিধানের মধ্যে থেকেই নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠনের একটি রূপরেখা তৈরি করেছে। দলটি মনে করেন নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন সম্ভব।
আওয়ামী লীগ বরাবরই বলে আসছে,
সংবিধানের বাইরে অন্য কোনো অসাংবিধানিক সরকার তারা মানবে না।
বিএনপি বলছে, তাদের রূপরেখাটি বিদ্যমান সংবিধান সংশোধন না করেই বাস্তবায়ন করা সম্ভব।
বিএনপির সূত্রগুলো বলছে, সরকার চাইলে তাদের এই রূপরেখা দেওয়া হতে পারে। অথবা এই রূপরেখা প্রকাশ করে তা বাস্তবায়নের দাবিতে আন্দোলন শুরু করতে পারে দলটি। তবে রূপরেখাটি এখনো খসড়া পর্যায়ে আছে বলে বিএনপির ওই সূত্র জানিয়েছে।
বিএনপির রূপরেখার প্রস্তাব গুলো হলো,
নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে ঐকমত্যের ভিত্তিতে সহায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করবেন রাষ্ট্রপতি। তবে তাতে কর্মরত বা অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি থাকতে পারবেনা।
রাষ্ট্রপতিকে পরামর্শ দেবেন যে প্রধানমন্ত্রী মেয়াদ পূর্তির ৯০ দিন আগে সংসদ ভেঙে দিতে । এরপর প্রধানমন্ত্রী সংবিধানের ৫৭(১)(খ)/৫৮(৪) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী পদত্যাগ করবেন। প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগের পরপরই মন্ত্রিসভা বিলুপ্ত হবে। এরপর রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ৫৭(৩) অনুচ্ছেদ প্রয়োগ না করে ৪৮(৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতি নিয়োগের একক সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগ করবেন। তিনি সংবিধানে ৫৭(২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীসহ এক–দশমাংশ মন্ত্রী অনির্বাচিতদের মধ্য থেকে মনোনীত হতে পারবেন—এই বিধান প্রয়োগ করে সব দলের সঙ্গে আলোচনা করে একজনকে সরকারের প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করবেন। তবে ওই ব্যক্তি দলের কেউ হতে পারবে না।
এরপর রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে ১০ জন উপদেষ্টা নিয়োগ দিতে দেবেন এবং এঁরা কোনো দলের হবে না। যেহেতু এঁরা মন্ত্রী হবেন না, তাই এঁদের শপথের প্রয়োজন হবে না। এভাবে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার গঠিত হবে। এঁরা ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করে নির্বাচিতদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন। নতুন সরকার ক্ষমতা নেওয়ার দিন থেকে সহায়ক সরকারের মেয়াদে শেষ হবে।
বিএনপিপন্থী আইনজীবী নেতারা এই রূপরেখা তৈরি করেছেন বলে জানা গেছে। এতে বাংলাদেশ ও ভারতের সংবিধানের কিছু বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওই আইনজীবীরা কিছু বলতে রাজি হননি। তবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মওদুদ আহমেদ সম্প্রতি গণমাধ্যমে বলেছেন, সংবিধানের মধ্যে থেকেই নিরপেক্ষ সরকার গঠন সম্ভব। বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা পাশাপাশি এও বলেছেন, এরশাদ সরকারের পতনের পর ঐকমত্যের ভিত্তিতে অস্থায়ী সরকার গঠিত হয়েছিল। এবারও সংবিধানের মধ্যে থেকে নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার গঠন সম্ভব। এতে যদি কিছুটা সংবিধানের সঙ্গে অসংগতি থাকে, তবে পরবর্তী সরকার এসে এর বৈধতা দিতে পারে। ফলে, সংবিধান সংশোধনের এখন কোনো প্রয়োজন পড়বে না।