আয়না ২৪ প্রতিনিধি
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের গুলশানের বাড়ি থেকে উচ্ছেদের ১৭ দিন পর বাড়িটি আজ ভাঙা শুরু করেছে রাজউক।
রোববার সকাল ৯টার দিকে বাড়িটি ভাঙা শুরু করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান ও ব্যারিস্টার এহসানুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গুলশান জোনের এডিসি আব্দুল আহাদ বলেন, রাজউক বাড়িটিতে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছে। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী সেখানে কোনো ব্যত্যয় ঘটছে কিনা সেজন্য ঘটনাস্থলে রয়েছে পুলিশ।
এর আগে, গত ৭ জুন গুলশান ২ নম্বরের ৭৯ নম্বর সড়কের ১৫৯ নম্বর প্লটের বাসাটি থেকে মওদুদ আহমদকে উচ্ছেদ করে রাজউক।
এদিকে উচ্ছেদ হওয়া গুলশানের বাড়িটি ফিরে পেতে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছিলেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। কোনো পূর্ব ঘোষণা বা নোটিশ ছাড়াই রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) তাকে ওই বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করায় উচ্ছেদ অভিযানের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট আবেদন করেন তিনি।
রিটে রাজউকের চেয়ারম্যান, রাজউকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশের গুলশান জোনের ডিসিসহ ৬ জনকে বিবাদী করা হয়।
রিটের আংশিক শুনানি শেষে আগামী ২ জুলাই পর্যন্ত রিটের শুনানি মুলতবি করেন বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ।
মওদুদের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, জয়নুল আবেদীন ও মাহবুব উদ্দিন খোকন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা।
মামলার বিবরণে জানা যায়, গুলশান-২ নম্বর সেকশনের ১৫৯ নম্বর প্লটের এক বিঘা ১৩ কাঠা ১৪ ছটাক জমির ওপর গুলশানের ওই বাড়ি অবৈধভাবে দখল ও আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর গুলশান থানায় মওদুদ ও তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদকের উপ-পরিচালক হারুনুর রশীদ। তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ২৬ মে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে এ মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করা হয়।
পরে ওই বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক অভিযোগ আমলে নেন। পরে আদালতে এই মামলার অভিযোগ আমলে নেয়ার আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে ফৌজদারি রিভিশন আবেদন করেন মওদুদ আহমদ। শুনানি শেষে গত বছর ২৩ জুন হাইকোর্ট তা খারিজ করে দেয়। পরে হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে মওদুদ আপিলের আবেদন করলে আপিল বিভাগ তা মঞ্জুর করে। আর এ বিষয়ে দুদকের রিভিউ আপিল বিভাগে খারিজ হয়ে যাওয়ায় মামলা থেকে অব্যাহতি পান মওদুদ ও তার ভাই।
এর আগে ওই সম্পত্তি মনজুর আহমদের নামে মিউটেশন (নাম জারি) করার নির্দেশনা চেয়ে ২০১০ সালে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়। একই বছরের ৮ ডিসেম্বর হাইকোর্ট এক আদেশে মওদুদ আহমদের ভাইয়ের নামে ওই সম্পত্তি নামজারির নির্দেশ দেয়। হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে রাজউক (রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) ও সরকারপক্ষ আলাদাভাবে লিভ টু আপিল করে, যা ২০১৪ সালে শুনানির জন্য ওঠে। পরে আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে সরকার ও রাজউক দুটি নিয়মিত আপিল করে।