আয়না২৪ প্রতিবেদন
দেশের বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসরকালীন ভাতা নিষ্পত্তির জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্প্রতি সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে ৬০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ডের দপ্তরে অবসরপ্রাপ্ত বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের প্রায় ৪০ হাজার আবেদন অনিষ্পত্তি অবস্থায় পড়ে আছে। যা নিষ্পত্তিতে প্রয়োজন প্রায় ১৮০০ কোটি টাকা। খবর বাসসের।
বরাদ্দকৃত ৬০০ কোটি টাকার ১০০ কোটি টাকা তাৎক্ষণিক এবং অবশিষ্ট ৫০০ কোটি টাকা সিডমানি হিসেবে লভ্যাংশ আকারে ব্যয় করার জন্য মন্ত্রণালয় বোর্ডকে নির্দেশনা দিয়েছে। কিন্তু বোর্ড বেসরকারি অবসর সুবিধা নিষ্পত্তির জন্য এককালীন নয়, জাতীয় বাজেটে প্রতিবছর ৪শ’ কোটি টাকা করে বরাদ্দের দাবি জানিয়েছে।
এ বিষয়ে বোর্ডের সদস্য সচিব প্রিন্সিপ্যাল শরীফ আহমেদ সাদী বলেন, ‘বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার এমপিওভূক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের মূল বেতনের ৪ শতাংশ প্রভিডেন্ট ফান্ডের জন্য কেটে নেয়া হয়। সে হিসেবে সারাদেশের শিক্ষক-কর্মচারীদের কাছ থেকে প্রতি মাসে বোর্ডের ফান্ডে জমা পড়ে প্রায় ৩৬ কোটি টাকা।’ তিনি আরও বলেন, ‘এতে প্রতি মাসে যে সংখ্যক অবসর আবেদন জমা পড়ে ,তা উল্লেখিত পরিমাণ অর্থ দিয়ে নিষ্পত্তি করা সম্ভব নয়। এর জন্য প্রয়োজন মাসে ৭২ কোটি টাকা। আর এভাবে প্রতি মাসেই অনিষ্পত্তি সম্পন্ন অবসর আবেদন জমতে জমতে বোর্ডের কাছে এখন অনিষ্পত্তি অবস্থায় প্রায় ৪০ হাজার অবসর আবেদন জমা পড়ে আছে।’
আর্থিক সংকটের কথা উল্লেখ করে সচিব শরীফ সাদী বলেন, ‘বোর্ড বর্তমানে ২০১২ সালের জুন-জুলাই মাসে যারা অবসর ভাতার জন্য আবেদন করেছিলেন, তাদের আবেদন নিষ্পত্তি করে চেক হস্তান্তর করছে। অর্থাৎ ২০১৬ সালের চলতি নভেম্বর পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৪ বছরের আবেদন (প্রায় ৪০ হাজার) এখনও বোর্ডের দপ্তরে অনিষ্পত্তি অবস্থায় রয়েছে।’ মন্ত্রণায়ের বরাদ্দকৃত ৬শ’ কোটি টাকা এখনও বোর্ডের ফান্ডে আসেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তবে বরাদ্দকৃত টাকার ১শ’ কোটি টাকা তাৎক্ষণিক খরচের নির্দেশনা থাকায় বোর্ড ২০১২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত আবেদনকারীদের অবসরভাতা নিষ্পত্তির প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করে রেখেছে। অর্থ আসা মাত্রই ধারাবাহিকভাবে তাদের চেক হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হবে।’
মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার কথা উল্লেখ করে সচিব বলেন, “সর্বোচ্চ ৫.৫ শতাংশ হারে যদি ৫শ’ কোটি টাকা ব্যাংকে ডিপোজিট করা হয়, তাহলে বছরে আসবে ২৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। মাসের হিসেবে বোর্ড পাবে ২ কোটি ২৯ বা ৩০ লাখ টাকা।” তিনি বলেন, বছরে ঘাটতি হচ্ছে ৪০৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা। আর প্রায় সাড়ে ৪ বছরের যে অবসরভাতা আবেদন (প্রায় ৪০ হাজার) অনিষ্পত্তি অবস্থায় পড়ে আছে, তা নিষ্পত্তি করতে বোর্ডের প্রয়োজন আরো ১৮ থেকে ১৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী অনেক মানবিক, দয়ালু ও শিক্ষকবান্ধব। তিনি যদি বোর্ডকে ১৮শ’ কোটি টাকা এককালীন বরাদ্দ দেন তাহলে মানবেতর জীবনযাপনকারী অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা তাদের অবসর জীবন একটু স্বাচ্ছন্দ্যে কাটাতে পারেন।’ সচিব বলেন, ‘১২ বছর আগে ২০০৪ সালে বোর্ডকে ৮৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়ার পর সরকার ২০১৬ সালে আবার ৬শ’ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। যা এখনও বোর্ডের ফান্ডে আসেনি।’