• Home  / 
  • জাতীয়  / 

বিশ্বনেতাদের প্রতি শেখ হাসিনাঃ রাষ্ট্রীয় নীতিতে পানিকে অগ্রাধিকার দিন

নভেম্বর ২৯, ২০১৬
Spread the love

বাসস

নিজ নিজ দেশের রাষ্ট্রীয় নীতিতে পানিসম্পর্কিত বিষয়কে অগ্রাধিকার দিতে বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টে গতকাল সোমবার ‘বুদাপেস্ট পানি সম্মেলন ২০১৬’–এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভাষণে তিনি এ আহ্বান জানান।
সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী পানির বিভিন্ন দুষ্প্রাপ্য উৎস অন্তর্ভুক্ত করে সাত দফা আলোচ্যসূচি (অ্যাজেন্ডা) উত্থাপন করে বলেন, গত সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন চলাকালে পানিবিষয়ক উচ্চপর্যায়ের প্যানেল (এইচএলপিডব্লিউ) কর্তৃক গৃহীত লক্ষ্যসমূহ অর্জনে কার্যক্রমভিত্তিক এ অ্যাজেন্ডা সহায়ক হতে পারে।
এ সময় তিনি পানিব্যবস্থাপনায় সর্বজনীন বৈশ্বিক উদ্যোগের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। ওয়ার্ল্ড ওয়াটার কাউন্সিলের সহযোগিতায় হাঙ্গেরি সরকারের আয়োজনে এ সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানেরা অংশ নিচ্ছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পানিব্যবস্থাপনায় একত্রে কাজ করার এটাই সময়। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ তার ভূমিকা পালনে অঙ্গীকারবদ্ধ। পানিবণ্টনে যথাযথ নীতিমালা প্রণয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, আন্তসীমান্ত নদীর পানির সুব্যবস্থাপনা খুবই প্রয়োজন। দুষ্প্রাপ্যতা সব সময় পানিসংকটের প্রধান কারণ নয়। বরং এ সমস্যা পানির ন্যায্য বণ্টনের সঙ্গেও সম্পর্কিত।
আন্তসীমান্ত নদীর পানিপ্রবাহের বণ্টন এখন জটিল বিষয় হয়ে দেখা দিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সংস্কৃতি, ধ্যানধারণা ও জীবনযাত্রার প্রধান অংশ জুড়ে আছে পানি।’
সম্মেলনে উপস্থাপন করা সাত দফা আলোচ্যসূচির প্রথমটিতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অ্যাজেন্ডা ২০৩০-এ পানি এবং বৃহত্তর টেকসই উন্নয়ন কাঠামোর মধ্যে আন্তসংযোগ ও বিনিময় সম্পর্কে নেওয়া নীতি অনুযায়ী জাতীয়, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পর্যায়ে যেকোনো উন্নয়ন প্রচেষ্টায় পানি হবে অবিচ্ছেদ্য অংশ। দ্বিতীয় আলোচ্যসূচিতে তিনি বিশ্বজুড়ে পিছিয়ে থাকা এবং স্যানিটেশনের সুবিধাবঞ্চিত লাখ লাখ মানুষের চাহিদার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। তৃতীয় আলোচ্যসূচিতে পানিসম্পর্কিত বিপর্যয় রোধে সহায়ক কাঠামো নির্মাণের কথা বলেন তিনি।
চতুর্থ আলোচ্যসূচিতে প্রধানমন্ত্রী অব্যাহত পানিসংকটের জন্য ঘাটতি নয়, বরং কার্যকর পানিব্যবস্থাপনার অভাবই মূল কারণ বলে উল্লেখ করেন। বাকি আলোচ্যসূচিগুলোতে সীমিত পানি ব্যবহার করে শস্য উৎপাদন, পানিসম্পদের কার্যকর ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা ও কৌশল বিনিময় এবং পানিসংক্রান্ত লক্ষ্য অর্জনে গবেষণা, উদ্ভাবনা ও প্রযুক্তি হস্তান্তরে একটি বৈশ্বিক তহবিল গঠনের ওপর জোর দেওয়ার আহ্বান জানান।
পরে প্রধানমন্ত্রী হাঙ্গেরির প্রেসিডেন্ট এবং অন্য বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে ‘সাসটেইনেবল ওয়াটার সলিউশন এক্সপো’ পরিদর্শন করেন।
হাঙ্গেরির প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক: বার্তা সংস্থা ইউএনবি জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল হাঙ্গেরির প্রেসিডেন্ট জানোস এডারের সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেছেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব এম শহীদুল হক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের অবহিত করেন।
বৈঠকে শেখ হাসিনা বলেন, পানিব্যবস্থাপনায় যেকোনো সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে নিজেদেরই সমাধান করতে হবে এবং এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ওপর নির্ভর করা উচিত নয়। তিনি আরও বলেন, ‘অন্যের সহযোগিতার আশায় আমরা অলস বসে থাকতে পারি না। আমাদের সমস্যা আমাদের নিজেদের প্রচেষ্টায় সমাধান করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন গবেষণা প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বলেন, বাংলাদেশে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা দুই মিটার বেড়ে গেলে দুই থেকে আড়াই কোটি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়বে।
পানি বিশুদ্ধকরণে হাঙ্গেরি কিছু কৌশল উদ্ভাবন করেছে জানিয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সহযোগিতার প্রস্তাব দেন।