প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছেন, পাকিস্তানের মতো দেশে এখন সুপ্রিম কোর্ট যা বলে, নিম্ন আদালতের বিচারকদের পদোন্নতি ও বদলি—সব কটি সুপ্রিম কোর্ট ছাড়া কেউ করে না। এটি পৃথিবীর সর্বত্র বহাল আছে, শুধু বাংলাদেশে যেহেতু থাকছে না; এ কারণেই প্রধান বিচারপতিকে বাধ্য হয়ে বলতে হচ্ছে এটি প্রতিষ্ঠার জন্য।
গতকাল রোববার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমি আইন ও ব্যবস্থা বিভাগের উদ্বোধন ও নবীনবরণ-২০১৭ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি এ কথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেন, ‘পৃথিবীর উন্নত দেশে, এমনকি ভারতে বিচারপতিরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়মিত লেকচার দিয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের কথা পত্রিকায় বের হয় না, আপনাদের প্রধান বিচারপতির বক্তব্য পত্রিকায় বের হয়। তার একটাই কারণ। আমরা সে পর্যায়ে যেতে পারিনি। আমাদের আইনের শাসন আমরা প্রতিষ্ঠা করতে পারিনি। আশ্চর্য হবেন, পাকিস্তানের সংবিধানকে আইয়ুব খানের সংবিধান বলা হতো। সে দেশে এখন যে আইনের শাসন চলছে, নিম্ন আদালতে ’৭৩ সালের পর থেকে এটি আজকে আমরা পাইনি, বাংলাদেশে এখনো হয়নি। ভারত, শ্রীলঙ্কা ও নেপাল অনেক ওপরে।’
বিশ্ববিদ্যালয় মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমি সরকারপ্রধান ও প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই, কিছুদিন আগে দুটি বক্তৃতায় উনি বলেছেন, তিন বিভাগ (আইন বিভাগ, বিচার বিভাগ ও শাসন বিভাগ) কারও প্রাধান্য না করে পরিপূরক হিসেবে কাজ করার জন্য। এটি আমাদের স্কিম, আমি সব সময় বলছি। এটিই হওয়া উচিত। সংবিধান বলছে, যদি কোনো আইন অন্য প্রচলিত আইনের পরিপন্থী হয়, সে ক্ষেত্রে এটি বেআইনি হয়ে যাবে। আমাদের সংবিধানে, বঙ্গবন্ধু যে সংবিধান দিয়ে গেছেন, এখানে আইনের শাসন, জুডিশিয়াল রিভিউ ও মৌলিক অধিকারের কথা রয়েছে। জুডিশিয়াল রিভিউর ক্ষমতা একমাত্র সুপ্রিম কোর্টকে দেওয়া হয়েছে। সংসদের করা আইন যদি সব সময় সঠিক হয়, তাহলে তো কোর্টগুলো উঠে যাওয়া উচিত ছিল। আদালতগুলো আছে এগুলো দেখার জন্য।’
ভূমি আইন ও ব্যবস্থা বিভাগের চেয়ারম্যান খ্রিস্টিন রিচার্ডসনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মীজানুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ মো. সেলিম ভূঁইয়া, আইন অনুষদের ডিন সরকার আলী আককাস উপস্থিত ছিলেন। সূত্র- প্রথম আ্লো