আয়না২৪ প্রতিবেদন
আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে ভারত সফরে যেতে পারেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গতকাল শনিবার বিকেলে ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম জে আকবর প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাতে এলে প্রধানমন্ত্রী আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমার্ধে ভারত সফরের বিষয়ে তাঁর আগ্রহের কথা জানান।
বৈঠকের পরে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জানান, দুই দেশের কর্মকর্তাবৃন্দ আলোচনা করেই এই সফরসূচি চূড়ান্ত করবেন। খবর বাসসের।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর সম্পর্কে আকবর বলেন, নয়াদিল্লী এই সফরের দিকে তাকিয়ে আছে এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।
দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কিছু বিষয়ে দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মধ্যে সমস্যা রয়েছে। তবে, তা দুই দেশের বন্ধুত্ব এবং সহযোগিতাকে বাধাগ্রস্ত করবে না।
সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে তাঁর সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির পুনরুল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কাউকেই বাংলাদেশের ভূখন্ড ব্যবহার করে কোন দেশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করতে দেয়া হবে না।
তিনি বলেন, ‘আমরা কোন প্রকারের সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদ বরদাশত করবো না এবং আমাদের ভূখন্ড ব্যবহার করে কোন দেশের বিরুদ্ধেই সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালাতে দেবো না।’
প্রধানমন্ত্রী এ সময় একাত্তরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় সশ¯্র বাহিনীর গৌরবময় ভূমিকার কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।
যুদ্ধের পর পরই ভারতীয় সশ¯্র বাহিনীর দেশে ফিরে যাবার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটি একটি ইতিহাস সৃষ্টি করেছেÑ কেননা, বিশ্বের কোন মিত্র শক্তিই যুদ্ধ জয়ের পর পরই দেশে ফিরে যায়নি।’
বৈঠকে দুই দেশের অভ্যন্তরে পানির নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে ওয়াটার রিজার্ভার নির্মাণের বিষয়েও আলোচনা হয়।
এ ছাড়া ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলা এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মন্দির ভাংচুরের ঘটনা প্রসংগে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করার জন্যই এসব ঘটানো হয়েছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে একটি নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছেন উল্লেখ করে আকবর বলেন, ‘এই দুই নেতার সময়োচিত এবং কার্যকর পদক্ষেপের জন্যই ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের নবদিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে।’
জলবিদ্যুৎ ও জা¡লানি খাতসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারত-বাংলাদেশের পারস্পরিক সহযোগিতার বিশাল ক্ষেত্র রয়েছে, বলেন ভারতের প্রতিমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর গতিশীল এবং দূরদর্শী নেতৃত্বের ভূয়শী প্রশংসা করে ভারতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ অঞ্চলের স্থিতিশীলতা আনয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদান ঐতিহাসিক।
দু’দেশের মধ্যকার বিবদমান সমস্যাবলীর সমাধান সম্পর্কে ভারতের প্রতিমন্ত্রী বলেন, যেহেতু সমস্যার সমাধানে উভয়েরই সদিচ্ছা রয়েছে, সুতরাং যে কোন সমস্যার সমাধান সম্ভব।
সাম্প্রতিক মধ্যপ্রাচ্য সংকট এবং বিশ্বের অন্যান্য সমস্যাবলী সম্পর্কে আকবর দৃঢ়চিত্তে বলেন, কোন মানব সভ্যতাই সন্ত্রাসকে কখনো মেনে নেবে না।
এম জে আকবর এ সময় হাঙ্গেরি যাবার পথে তুর্কমেনিস্থানে প্রধানমন্ত্রীর বিমানের অনির্ধারিত যাত্রাবিরতির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষযক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী এবং বাংলাদেশে ভারতের হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রীংলা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।