আয়না ২৪ প্রতিনিধি
জঙ্গিদের হামলার অন্যতম লক্ষ্য জাফর ইকবাল কয়েক বছর ধরে পুলিশ পাহারা পেয়ে আসছেন; সেই পুলিশের উপস্থিতির মধ্যেই শনিবার বিকেলে এই হামলা হয়।
এর পেছনে জঙ্গিদের হাত থাকতে পারে বলেও সন্দেহ করা হচ্ছে।জাফর ইকবাল বরাবরই জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে উচ্চকণ্ঠ। কয়েক বছর আগে লেখক, অধ্যাপক, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের উপর জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে উচ্চকণ্ঠ জাফর ইকবাল জঙ্গি হামলার হুমকি পেয়ে আসছিলেন। এজন্য সরকারের পক্ষ থেকে তাকে পুলিশ পাহারাও দেওয়া হচ্ছে। পুলিশ পাহারার মধ্যেই তার উপর হামলা হল।
শনিবার ইলেট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ফেস্টিভ্যাল চলছিল ক্যাম্পাসের মুক্তমঞ্চে। ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক জাফর ইকবাল; সেখানেই তার উপর হামলা হয়।
মাথায় ছুরিকাঘাতে আহত অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল শঙ্কামুক্ত বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
ওসমানি মেডিকেলের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুল হক সাংবাদিকদের বলেন, “উনার মাথায় চারটি আঘাত করা হয়েছে। এগুলো রডের আঘাত বলে মনে হচ্ছে। এছাড়া তার বাঁ হাত ও পিঠে ছুরিকাঘাতের জখম রয়েছে।”
জাফর ইকবালের শরীরে ২৫ থেকে ২৬টি সেলাই পড়েছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, “এখন উনি শঙ্কামুক্ত।”
সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শনিবার বিকালে হামলার পর ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয় অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবালকে।
সেখানে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে তার ক্ষত স্থান পরিষ্কার করে সেখানে সেলাই দেওয়া হয় বলে চিকিৎসকের বরাত দিয়ে জানান মহাসচিব এহতেশামুল হক দুলাল।
ঢাকায় আনার উদ্দেশে রাত পৌনে ১০টার দিকে ওসমানি মেডিকেল থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে জাফর ইকবালকে সিলেট বিমানবন্দরে নেওয়া হয়। সেখান থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাকে ঢাকায় আনা হয়।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে জাফর ইকবালকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হবে বলে তার প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জানিয়েছেন।
বিকাল ৫টার দিকে আক্রান্ত হওয়ার পর দ্রুত তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তার অস্ত্রোপচার চলছে। তার অবস্থা আশঙ্কামুক্ত বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, হামলার পর হাসপাতালে নেওয়ার সময় মাথা থেকে রক্তক্ষরণ হলেও কথা বলছিলেন ৬৪ বছর বয়সী এই শিক্ষক।
শনিবার বিকালে এই হামলার পরপরই হামলাকারী তরুণকে ধরে ফেলে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। তাৎক্ষণিকভাবে তার পরিচয় জানা যায়নি।
ওই তরুণকে বেদম পেটানোর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন-২ এ আটকে রাখা হয়েছে।
ঠিক কী কারণে ওই তরুণ জাফর ইকবালের উপর হামলা করেছেন, সে বিষয়ে কিছু তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
বিএনপির নিন্দা
ফখরুল বলেন, অধ্যাপক জাফর ইকবালের উপর হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে বিএনপি।
“আমরা মনে করি যে, এটা আরেকটা চক্রান্ত। যারা দেশে এই ধরনের ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়, এটা তাদেরই চক্রান্ত।”