আয়না২৪ প্রতিবেদন
মরণঘাতি মাদক ইয়াবার নতুন রুট এখন দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বরগুনা ও এই জেলার পাথরঘাটা উপজেলা। সাত লাখ ইয়াবার একটি চালান আটকের পর পাচারকারীরা মিয়ানমার থেকে আনা ইয়াবা চালানের নতুন গন্তব্য হিসেবে দক্ষিণাঞ্চল বিশেষ করে বরগুনা ও পাঘরঘাটা উপজেলাকে ব্যবহার করছে বলে জানিয়েছে র্যাব। খবর বিডিনিউজ।
র্যাব-৭ সোমবার গভীর রাতে চট্টগ্রাম সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর থেকে সাত লাখ ইয়াবার ওই চালান আটক করে।
খবরে বলা হয়, একটি ট্রলারসহ সাত লাখ ইয়াবা উদ্বারের পাশাপাশি আটক করা হয়েছে পাচারকারী দলের সাত সদস্যকে, যাদের মধ্যে চারজনই মিয়ানমারের নাগরিক। গত ৩০ বছর ধরে বিভিন্ন সময় মিয়ানমারের এই চার নাগরিক বাংলাদেশে এসেছে। ইয়াবা চোরাচালানই তাদের ব্যবসা বলে র্যাবের দাবি।
আটক ইয়াবা পাচারকারীরা জানায়, এর আগেও তিনটি চালানে মোট ছয় লাখ ইয়াবা মিয়ানমার থেকে বরিশালে নিয়ে যায় তারা। সোমবার আটক চালানটি সমুদ্র পথে বরগুনা জেলার পাথরঘাটার দিকে যাচ্ছিল বলে আটক পাচারকারীদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে জানায় র্যাব। এই বাহিনীর কর্মকর্তাদের দাবি, ইয়াবার চালান চট্টগ্রামে না এনে গভীর সমুদ্র দিয়ে বরিশাল, বরগুনা ও পটুয়াখালীসহ দক্ষিণাঞ্চলীয় উপকূলীয় এলাকায় নিয়ে সেখান থেকেই সারা দেশ সরবরাহ করা হয়।
আটক সাতজন হলেন- মো. ফারুক (২৯), মো. সামছুল (১৯), মোহাম্মদ ফারুক (৩৮), নবী হোসেন (৩৮), মো. ইসাক (৩০), শরিফ হোসেন (৩৭) এবং নুরুল আমিন (৩৯)। এরমধ্যে শেষ চারজন মিয়ানমারের বাসিন্দা। তাদের মধ্যে শরিফ হোসেন ১৩ বছর আগে এবং বাকি তিনজন কিশোর বয়সে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে এসে বর্তমানে কক্সবাজারের টেকনাফ এলাকায় বসবাস করে।
র্যাব-৭ অধিনায়ক লেটটেন্যান্ট কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন বলেন, আটক নবী হোসেন বরগুনায় একটি বিয়ে করেছে। সেখানে তার স্ত্রী আছেন। এবারের চালানটি বরগুনার দিকেই যাচ্ছিল। ইয়াবা বহনকারী মাছ ধরার ট্রলারগুলি চট্টগ্রাম সংলগ্ন গভীর বঙ্গোপসাগরে এসে অপেক্ষায় থাকে। কোনো বাহিনীর টহল না দেখলে সুযোগ বুঝে দক্ষিণাঞ্চলের দিকে যাত্রা করে।
তিনি বলেন, সোমবার রাতে চট্টগ্রাম সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে ধাওয়া করে এমভি রিফা নামের ওই ট্রলার আটক করা হয়। বাংলাদেশে ইয়াবা আনা হয়। সম্প্রতি সমুদ্রের টেকনাফ-চট্টগ্রাম রুটে কয়েকটি বড় চালান আমরা আটক করি। এ কারণে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা রুট পরিবর্তন করে। এখন সাগর পথ ব্যবহার করেই মিয়ানমার থেকে টেকনাফ হয়ে তারপর গভীর সমুদ্র পথে বরিশাল, বরগুনা এবং পটুয়াখালীসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকায় ইয়াবার চালান নিয়ে যাওয়া হয় বলে দাবি র্যাব কর্মকর্তা মিফতাহ উদ্দিনের।
আটকদের মধ্যে টেকনাফের সাবরাং এলাকার বাসিন্দা ফারুক (২৯) পাচারকারী দলটির অন্যতম নেতা। এই দলের আরেক নেতা আবুল কালাম (৩০) পালিয়ে গেছে। তাকে ধরতে অভিযান চলছে। আটক সাতজনের মধ্যে ট্রলারের মাঝি নবী হোসেন ৩০ বছর আগে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসে।
র্যাব-৭ এর জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক সিনিয়র এএসপি সোহেল মাহমুদ বলেন, ট্রলারটিতে তল্লাশি চালিয়ে পাটাতনের নিচে থাকা সাত লাখ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। আটক হওয়ারা জানিয়েছে, এর আগে তিনবার দুই লাখ করে মোট ছয় লাখ ইয়াবা নিয়ে তারা মিয়ানমার থেকে বরিশালে গিয়েছিল। এটা চতুর্থ চালান। উদ্ধার হওয়া ইয়াবার বাজার মূল্য প্রায় ২৮ কোটি টাকা বলে জানায় র্যাব।