আয়না ২৪ ডেস্ক
আজ ৮ মার্চ, আন্তর্জাতিক নারী দিবস। সারা বিশ্বব্যাপী নারীরা একটি প্রধান উপলক্ষ হিসেবে এই দিবস উদযাপন করে থাকেন। বিশ্বের এক এক প্রান্তে নারীদিবস উদযাপনের প্রধান লক্ষ্য এক এক প্রকার হয়ে থাকে। কোথাও নারীর প্রতি সাধারণ সম্মান ও শ্রদ্ধা উদযাপনের মুখ্য বিষয় হয়, আবার কোথাও মহিলাদের আর্থিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠাটি বেশি গুরুত্ব পায়। এবার নারী দিবসের প্রতিপাদ্য ‘নারী-পুরুষ সমতায় উন্নয়নের যাত্রা/ বদলে যাবে বিশ্ব, কর্মে নতুন মাত্রা’। এই দিবসটি উদযাপনের পেছনে রয়েছে নারী শ্রমিকের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের ইতিহাস
১৮৫৭ সালের ৮ মার্চ। মজুরি বৈষম্য, কর্মঘণ্টা নির্ধারণ এবং কর্মক্ষেত্রে বৈরী পরিবেশের প্রতিবাদ করেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের সুতা কারখানার একদল শ্রমজীবী নারী। সেই মিছিলে চলে সরকার লেঠেল বাহিনীর দমন-পীড়ন। নানা ঘটনার পরে ১৯০৮ সালে জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ও রাজনীতিবিদ ক্লারা জেটকিনের নেতৃত্বে প্রথম নারী সম্মেলন করা হয়। ক্লারা ছিলেন জার্মান রাজনীতিবিদ; জার্মান কমিউনিস্ট পার্টির স্থপতিদের একজন। এরপর ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন। ১৭টি দেশ থেকে ১০০ জন নারী প্রতিনিধি এতে যোগ দিয়েছিলেন। সিদ্ধান্ত হয়ঃ ১৯১১ খ্রিস্টাব্দ থেকে নারীদের সম-অধিকার দিবস হিসেবে দিনটি পালিত হবে। দিবসটি পালনে এগিয়ে আসে বিভিন্ন দেশের সমাজতন্ত্রীরা। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৫ সাল থেকে জাতিসংঘ দিনটি নারী দিবস হিসেবে পালন করছে। তখন থেকেই বিভিন্ন দেশে নারীর সংগ্রামের ইতিহাসকে স্মরণ করে দিবসটি পালন শুরু হয়। অতঃপর ১৯৭৫ সালে খ্রিস্টাব্দে ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। দিবসটি পালনের জন্য বিভিন্ন রাষ্ট্রকে আহ্বান জানায় জাতিসংঘ। এরপর থেকে সারা পৃথিবী জুড়েই পালিত হচ্ছে দিনটি নারীর সমঅধিকার আদায়ের প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করার অভীপ্সা নিয়ে।
নারী দিবসের কর্মসূচি
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে সরকারের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন নারী সংগঠন ও বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা র্যালী, মানববন্ধন, সমাবেশ ও আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। নারী দিবসের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে নারী সংগঠন ও মানবাধিকার কর্মীরা। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে সকাল ১০টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ দিবসটি উপলক্ষে বিকেলে আলোচনার আয়োজন করবে। আমরাই পারি পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ জোট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানে বক্তারা নারী অধিকার আদায়ের ঘটনা পরম্পরা স্মরণ করে বলেন, সমাজে সমঅধিকার আদায়ের দাবিটি আজও উপেক্ষিত।