আয়না২৪ প্রতিনিধি
আজ বুধবার (২১ মার্চ) আন্তর্জাতিক বন দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হবে। ‘জলবায়ু পরিবর্তন রোধে বন’- এই স্লোগান ধারণ করে বিশ্বের অন্য দেশের মত বাংলাদেশেও দিবসটি উদযাপন করা হচ্ছে। দিবসটি উপলক্ষে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। উদ্ভিদ তথা বনভূমি হ’ল পৃথিবীর প্রাণ। পৃথিবীকে বাসযোগ্য রাখতে হলে পৃথিবীর বনভূমি রক্ষা করা ছাড়া কোনো গতি নেই। এ সত্যকে সামনে রেখে প্রতি বছর ২১ মার্চ সারা পৃথিবীতে পালিত হয় ‘বিশ্ব বন দিবস।
পরিবেশবাদীরা মনে করেন ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপ, শিল্পায়ন, কৃষি সম্প্রসারণ ও নগরায়নের ফলে বিশ্বব্যাপী বন ও বনভূমি হ্রাস পাচ্ছে। পৃথিবীতে জীবের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য বন অপরিহার্য। একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের প্রাকৃতিক ভারসাম্য সঠিক ভাবে বজায় রাখতে হলে ৩০ শতাংশ বনভূমি থাকা আবশ্যক। অথচ সারা পৃথিবীর মানুষ আজ বিভিন্ন ভাবে বনভূমি ধ্বংসের যজ্ঞে মেতেছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে বাংলাদেশসহ পৃথিবীব্যাপী বনভূমির পরিমাণ কমে আসছে। কমছে গাছ-গাছালির সংখ্যা। বিপন্ন হচ্ছে জীবজন্তু ও বন্যপ্রাণি। ক্ষয়িষ্ণু পরিবেশের প্রভাবে বিপন্ন হচ্ছে বন। এমন বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে বন সংরক্ষণের আহবান জানিয়ে দিবসটি পালিত হচ্ছে।
পথিবীতে প্রতিবছর গড়ে প্রায় এক শতাংশ ক্রান্তীয় বনভূমি ধ্বংস হচ্ছে মানুষের হাতে। বিগত ৭০ বছরে পৃথিবীর মোট ক্রান্তীয় বনভূমির প্রায় ৫০ শতাংশ উজাড় হয়ে গেছে। স্যাটেলাইট চিত্রে অপসৃত বনভূমির যে চিত্র পাওয়া যাচ্ছে তা বিশ্লেষণ করে বলা হচ্ছে যে, প্রতি বছর পৃথিবী থেকে পৌনে দুই কোটি থেকে দুই কোটি হেক্টর বনভূমি মানুষের ‘লোভ নামের’ প্রয়োজনের বলী হয়ে হারিয়ে যাচ্ছে চিরতরে। এর ফলে শুধু বনভূমিই নয়, এর সাথে বনে বসবাসকারী হাজার হাজার প্রজাতীর কোটি কোটি জীব-জন্তুর জীবন হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। আবাসস্থল হারিয়ে এদের অনেকেই ধীরে ধীরে পৃথিবী থেকে চিরতরে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউট বন সংরক্ষণ ও পরিবেশ বিপর্যয় রোধে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে চট্টগ্রামে ইনস্টিটিউট কার্যালয়ে গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করেছে।
১৯৯২ সালে ‘রিও ঘোষণা’য় বন সৃজন ও রক্ষার্থে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পরে ২০১২ সালে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সভায় বন ও বনভূমির নিরাপত্তা রক্ষার্থে ২১ মার্চকে বিশ্ব বন দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।