আয়না২৪ প্রতিবেদক
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আটক বরগুনার আমতলীর বাসিন্দা কথিত ব্লগার আসাদ নূরকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ৷ মহানবী হয়রত মুহাম্মদ মুস্তফা (সা.) সম্পর্কে কটুক্তি ও অবমাননাকর মন্তব্য করায় তার বিরুদ্ধে তথ্য প্রযুক্তি আইনে মামলা করা হয়৷ ওই মামলার আরেক আসামি লিমন ফকিরকে আগেই গ্রেপ্তার করা হয়৷
পুলিশ জানায়, আসাদুজ্জামান নূর ওরফে আসাদ নূরকে সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার দিকে শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করে ইমিগ্রেশন পুলিশ৷ নূর নেপালের কাঠমাণ্ডু যাওয়ার জন্য বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পার হওয়ার সময় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ তাঁর বিরুদ্ধে রেড নোটিশ ছিল, এ জন্য নূরকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে মঙ্গলবার বিমানবন্দর থানায় সোপর্দ করা হলে পুলিশ তাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠায়।
অাসাদ নূর ও অপরজনের বিরুদ্ধে বরগুনার আমতলী থানায় চলতি বছরের প্রথম দিকে তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় একটি মামলা হয়৷
আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহীদ উল্লাহ বলেন, ‘মহানবীকে (সা.) নিয়ে কটূক্তি ও ধর্ম অবমাননার অভিযোগে ব্লগার আসাদ নূর ও তাঁর এক সহযোগী লিমন ফকিরের বিরুদ্ধে গত ১১ জানুয়ারি মামলা হয় ৷ মামলার পর লিমন ফকিরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ৷ কিন্তু আসাদ নূর এতোদিন পালিয়ে ছিলেন৷ কিছু দিন ভারতে পালিয়ে থাকার পর দেশে ফিরে তিনি নেপালে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন ৷’
ওসি আরো বলেন, ‘এই মামলায় আসাদ নূর ও লিমন ফকিরের বিরুদ্ধে আগেই আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছি৷ ঢাকায় আইসিটি ট্রাইব্যুনালে এই মামলার বিচারও শুরু হয়েছে৷ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে তাঁদের লেখা, বক্তব্য এবং অন্যান্য তথ্য -প্রমাণ আদালতে দাখিল করেছি।
আসাদ নূরের মামা ফারুক মৃধা বলেন, ‘আসাদ নূরের বাবার বাড়ি গোপালগঞ্জে৷ তার বাবা-মা সিলেটে থাকেন৷ বাবা একজন স্কুল শিক্ষক৷ আমতলীর উত্তর টিয়াখালীতে মামার বাড়িতে তাদের বাড়ি আছে৷ মায়ের সম্পত্তিতেই তারা বাড়ি করেছে৷ শুনেছি সে মহানবীকে কটুক্তি করেছে। কিন্তু আমি নিজের চোখে দেখিনি যে সে কী ধরনের কটুক্তি বা অবমাননা করেছে৷
মামলার বাদী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আমতলী উপজেলার সভাপতি ওমর ফারুক বলেন, ‘আমরা জানুয়ারি মাসে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করার আগেই আসাদ নূর এাঁকা থেকে পালিয়ে যায়৷ তবে তার সহযোগী লিমন ফকিরকে পুলিশ তখনই গ্রেপ্তার করে৷ আমরা মামলার সঙ্গে তাঁর দেওয়া ফেসবুক পোস্ট এবং ইউটিউব থেকে তার ভিডিও ‘ডাউনলোড’ করে জমা দিয়েছি৷ আসাদ ও তার সহযোগী আমাদের প্রিয় রসুল এবং ধর্মকে অবমাননা করেছে৷
তিনি আরও দাবি করেন, ‘‘আসাদ ও লিমন আমতলীতে ব্যবসা-বাণিজ্য করত৷ ব্যবসা করতে করতেই তারা নাস্তিকতায় জাড়িয়ে পড়ে৷ মুখেও আপত্তিকর কথা বলত৷”
আসাদ নূরের একটি ফেসবুক পেজ আছে নিজের নামেই৷ সেখানে তিনি নিজেকে ব্লগার, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ও ইউটিউবার হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন৷ বলেছেন, ‘‘ধর্মান্ধতা দূর করা আমার জীবনের প্রধান লক্ষ্য৷” তবে সেখানেও তাঁর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার কোনো বর্ণনা নেই৷