আমতলী প্রতিনিধি
বরগুনার আমতলী উপজেলায় এক আইনজীবীর বাড়ি থেকে মালা আকতার (১৭) নামে এক কলেজছাত্রীর সাত টুকরো লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আমতলী পৌর শহরের হাসপাতাল সড়কের আইনজীবী মাইনুল আহসান তালুকদারের বাড়ির বাথরুমের দুটি ড্রাম থেকে মালার লাশ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় পুলিশ ওই ছাত্রীর কথিত প্রেমিক আলমগীর হোসেন ওরফে পলাশ (৪৮) নামে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে। মালা সম্পর্কেেআলমগীরের মামাতো শ্যালিকা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বরগুনা সদর উপজেলার গুদিঘাটা গ্রামের মন্নান খানের মেয়ে মালা আকতারের সঙ্গে পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ উপজেলার মজিদবাড়িয়া ইউনিয়নের বাসন্ডা গ্রামের আবদুল লতিফ খানের ছেলে আলমগীরের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সপ্তম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় এই সম্পর্ক হয়। মালা পটুয়াখালীর কলাপাড়া মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী।
গত রোববার সন্ধ্যায় মালাকে নিয়ে আলমগীর আমতলী শহরে তার ভাগ্নি জামাই আইনজীবী মাইনুল আহসানের বাসায় বেড়াতে আসে। তিন দিন ধরে তারা এই বাড়িতে অবস্থান করে। মঙ্গলবার মালা পলাশকে বিয়ে করার জন্য চাপ দেয়। কিন্তু আলমগীর এতে রাজি হয়নি। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে ঝগড়াঝাটি হয়।
এক পর্যায়ে মঙ্গলবার দুপুরে আলমগীর মালাকে ধারালো অস্ত্র (বটি) দিয়ে কুপিয়ে হত্যার পর তার মরদেহ মা সাত টুকরো করে করে বাথরুমের ড্রামের মধ্যে ভরে রাখে। এ সময় ওই বাসায় কেউ ছিল না।
খবর পেয়ে বরগুনার পুলিশ সুপার বিজয় বসাক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এদিকে আলমগীর হোসেন ঘটনার সত্যতা পুলিশের কাছে স্বীকার করে জানান, সপ্তম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় মালার সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মালার বাবা-মা ঢাকা থাকেন। মালার লেখাপড়ার খরচও চালান তিনি। গত রোববার বিয়ে করার জন্য মালাকে নিয়ে আমতলী আত্মীয়ের বাসায় বেড়াতে যান। মঙ্গলবার সকালে মালা তাকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। কিছুদিন পরে বিয়ে করার কথা বলে মালাকে আশ্বস্ত করলেও সে তা মানতে চায়নি। এক পর্যায় আলমগীর ক্ষিপ্ত হয়ে ঘরে থাকা ধারালো অস্ত্র (বটি) দিয়ে তাকে কুপিয়ে হত্যা করে। এ সময় বাসায় কেউ ছিল না। মালার দেহ সাত টুকরো করে ওই বাসার বাথরুমের মধ্যে থাকা দুটি ড্রামে ভরে রাখে।
আইনজীবী মাইনুল আহসান বলেন, আলমগীর আমার সম্পর্কে মামা শ্বশুর। গত রোববার আমার বাড়িতে মালাকে নিয়ে তিনি বেড়াতে আসেন। এ সময় তিনি মালাকে তার দ্বিতীয় স্ত্রী বলে পরিচয় দেন। মঙ্গলবার সকালে আমি ও আমার স্ত্রী কর্মস্থলে চলে যাই। এই ফাঁকে সে মালাকে হত্যা করে।
আমতলী থানার ওসি মো. শহিদ উল্লাহ বলেন, খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করেছি।আলমগীরকে আটক করেছি। সে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছে।
এছাড়া আইনজীবী মাইনুলকেও রাত সাড়ে ৮ টার দিকে আটক করা হয়েছে বলে পুলিশ জানায়।