আয়না২৪ প্রতিনিধি, বরগুনা
বরগুনার তালতলী উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আ.লীগ মনোনীত প্রার্থীদের বাধার কারণে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীরা প্রচার চালাতে পারছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা অভিযোগ করেছেন,তাঁদের প্রচারণায় বাধা, পথসভায় হামলা, নেতা-কর্মীদের মারধর ও হুমকিতে এসব ইউনিয়নে ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
আজ দুপুরে বরগুনা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি প্রার্থীরা এই অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি প্রার্থীরা আরো অভিযোগ করেন, তালতলী থানার পুলিম তাঁদের কোনো প্রকার সহয়াতা করছে না। এতে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হচ্ছে। এজন্য তাঁরা তালতলী থানার ওসির অপসারণ দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে কড়ইবাড়িয়া ইউনিয়নে বিএনপি মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মানসুর আলম অভিযোগ করে বলেন, তিনি নির্বাচনি প্রচার-প্রচারণা চালাতে গিয়ে একাধিকবার আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থীর সমর্থকদের দ্বারা লাঞ্ছিত হয়েছেন। , তাকে নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার জন্য বার বার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
বড়বগী ইউনিয়নে বিএনপি সমর্থিত প্রাথী শহিদুল হক বলেন, তিনি কোনো ধরনের প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারছেন না। তাকে প্রায় অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। তাই তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সার্বিক সহযোগিতা দাবি করেছেন।
নিশাবাড়িয়া ইউনিয়নে বিএনপির প্রার্থী শাহআলম মাস্টারের পক্ষে তাঁর ছেলে ওমর আবদুল্লাহ অভিযোগ করে বলেন, তাদের পোস্টার, ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। চালাতে দেওয়া হচ্ছেনা প্রচার প্রচারণা। আওয়ামীলীগ প্রার্থীর কর্মীরা তাদের কর্মীদের নানাভাবে হুমকি প্রদান করে আসছে। এক্ষেত্রে তালতলী থানার ওসি কোন ধরনের সহযোগিতা করছেন না। এ ব্যাপারে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর আবেদন করেছেন শাহআলম মাস্টার। এজন্য তিনি তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমলেশ চন্দ্রের অপসারণ দাবি করেছেন।
অন্যদিকে পচাকোড়ালিয়া ইউনিয়নে বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী নান্নু খান অভিযোগ করে বলেন, প্রতিপক্ষের হামলায় তার দুই কর্মী আহত হলে ইব্রাহিম খান নামে একজনকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, আওয়ালীলীগ সমর্থক কর্মীরা তাদের প্রচার প্রচারণায় বাধা দিচ্ছে। এমনকি তার নির্বাচনী অফিস তালাবদ্ধ করে রেখেছে আওয়ামীলীগের কর্মীরা।
গত রোববার বরগুনা প্রেসক্লাবে অপর এক সংবাদ সম্মেলনে ছোটবগী ইউনিয়নে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী শেফালী আক্তার অভিযোগ করে বলেন, তালতলী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগ সভাপতি মনিরুজ্জামান মিন্টুর নেতৃত্বে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করা হয়েছে। তিনি ও তার ভাই উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং ছোটবগী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী মো: তৌফিকুজ্জামান তনু কোন ধরনের আইন-কানুন মানছেন না।
এ ব্যাপারে তালতলী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং ছোটবগী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী তৌফিকুজ্জামান তনু বলেন, শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালালে কেউ বাঁধা প্রদান করে না। তিনি পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী শেফালী আক্তারের স্বামী ফরহাদ হোসেন মৃধা নির্বাচনী প্রচারণার নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন। সাধারণ মানুষ এসবের প্রতিবাদ করছে।
তালতলী উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মনিরুজ্জামান মিন্টু এ ব্যাপারে বলেন, তার বিরুদ্ধে বিএনপির প্রার্থীরা যেসব অভিযোগ করছেন তা অসত্য। নির্বাচনে বিপর্যয় দেখে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছেন তাঁরা।
বরগুনার পুলিশ সুপার বিজয় বসাক পিপিএম এ ব্যাপারে বলেন, পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষায় সর্বোচ্চ সজাগ থাকতে। তারপরও কারো বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আগামী ১৬ এপ্রিল তালতলী উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে ভোট গ্রহণ হবে।