আয়না২৪ প্রতিনিধি, বরগুনা
বরগুনার তালতলী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতা মনিরুজ্জামান মিন্টুর বিরুদ্ধে স্থানীয় সাংবাদিককে প্রকাশ্যে পুলিশের সামনে মারধর ও তাঁর ভিডিও ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসময় ওই সাংবাদিককে রক্ষা করতে গেলে মারধরের শিকার হন আরো দুই সাংবাদিককে আজ বুধবার দুপুরে বরগুনার তালতলী উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে এই ঘটনা ঘটে।
উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে এর আগে একজন অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক, তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও তালতলী ভূমি কার্যালয়ের প্রধান সহকারীকে মারধরের অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, আজ বুধবার তালতলী উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন পরিষদের আগামী ১৬ এপ্রিলের নির্বাচন উপলক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বীতাকারী প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দের দিন ছিল। দুপুর পৌনে ১২ টার দিকে তালতলী উপজেলা পরিষদের তৃতীয়তলায় উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে স্থানীয় আওয়ীমলীগ-ছাত্রলীগের একদল নেতা ও কর্মী মিছিল করছিল। মিছিলে উপজেলা যুবলীগ সভাপতি ও তালতলী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন। এসময় বেসরকারি এসএ টিভির বরগুনা প্রতিনিধি নুরুজ্জামার ফারুক মিছিলের দৃশ্য ধারণ করতে গেলে প্রথমে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী তাতে বাধা দেয়। এসময় উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান সেখানে এসে সাংবাদিক নুরুজ্জামানকে গালাগাল ও একপর্যায়ে চড় ও কিল-ঘুষি শুরু করেন। নুরুজ্জামান নিজেকে রক্ষার জন্য দৌড়ে উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের দ্বিতীয় তলায় পুলিশ সদস্যদের সামনে আশ্রয় নিলে উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান দৌড়ে সেখানে যান এবং দ্বিতীয় দফায় সাংবাদিক নুরুজ্জামানকে মারধর করেন। এসময় সেখানে উপস্থিত বরিশালের আঞ্চলিক পত্রিকার স্থানীয় প্রতিনিধি অপর দুই সাংবাদিক মিজানুর রহমান ও খাইরুল ইসলাম সাংবাদিক নুরুজ্জামানকে রক্ষার জন্য এগিয়ে এলে উপজেলা চেয়ারম্যান ওই দুজন সাংবাদিককেও মারধর করেন। একপর্যায়ে এসএ টিভির সাংবাদিক নুরুজ্জামানের হাতে থাকা ভিডিও ক্যামেরাটি চেয়ারম্যান কেড়ে নেন।
সাংবাদিক নুরুজ্জামান অভিযোগ করে বলেন,‘আমি নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দের বিষয়ে সেখানে উৎসব মুখর পরিবেশ বিরাজ করছে সেটা দেখানোর জন্য ওই মিছিলের দৃশ্য ধারণ করছিলাম। এতে কয়েকজন ছাতলীগ নেতা আমাকে তা ধারণ করতে বারণ করে। আমি তাদের বুঝিয়ে বললে তারা চলে যায়। এর কিছুক্ষণ পরেই উপজেলা চেয়ারম্যান সেখানে এসে আমাকে অকথ্য গালাগাল করেন এবং একপর্যায়ে এলোপাথারি চড়-থাপড়, কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। আমি নিজেকে রক্ষার জন্য দৌড়ে ভবনের দোতালায় পুলিশ সদস্যদের কাছে গিয়ে আশ্রয় নিলে চেয়ারম্যান ও তাঁর শ্যালক কামরুল সিকদারসহ ১০-১২ জন সেখানে গিয়ে পুলিশ সদস্যদের সামনে পুনরায় আমাকে মারধর করেন। এসময় আমার দুই সহকর্মী আমাকে রক্ষা করতে এলে তাদেরও মারধর করেন তাঁরা।পরে আমার ভিডিও ক্যামেরাটি ছিনিয়ে নিয়ে যান উপজেলা চেয়ারম্যান।
অভিযোগ প্রসঙ্গে মনিরুজ্জামান মিন্টু বলেন, ‘আমি নুরুজ্জামানকে মারধর করিনি। অন্য লোকজন তাকে মারধর করছিল আমি তাকে রক্ষা করেছি। আর ক্যামেরাটি যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এজন্য সেটি নিয়ে তালতলী থানার এক উপ পরিদর্শেকের কাছে জমা দিয়েছি।’
তালতলী থানার ওসি কমলেশ চন্দ্র হালদার বলেন,আমি ঘটনা শুনেছি। তবে এবিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। ঘটনার সময় আমাদের একজন এসআইসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য সেখানে উপস্থিত ছিল।’