আয়না২৪ প্রতিনিধি
পিরোজপুরের জিয়ানগর উপজেলায় ১৬ ডিসেম্বর সকালে বিজয় দিবস উপলক্ষে শোভাযাত্রা হয়েছে যুদ্ধাপরাধের দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছেলে জিয়ানগর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মাসুদ সাঈদীর নেতৃত্বে। ওইদিন সকালে মাসুদ সাঈদীর নেতৃত্বে শোভাযাত্রা শেষে স্থানীয় শহীদ মিনারে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবকও অর্পণ করা হয়।
যুদ্ধাপরাধের দায়ে দণ্ডিত সাঈদীপুত্রের এ কর্মকান্ডে ক্ষুব্ধ হয়েছেন শহীদ বুদ্ধিজীবীদের সন্তানসহ অনেকেই। কেউ কেউ একে স্বাধীনতা দিবসের প্রতি অবমাননার শামিল বলে মন্তব্য করছেন। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় শোভাযাত্রায় সাঈদীপুত্রের অংশগ্রহণের ছবি নিজের ফেসবুক পেইজে তুলে দিয়ে শহীদ আলতাফ মাহমুদের মেয়ে শাওন মাহমুদ লিখেছেন- ‘বিজয়ের ৪৬তম বছরের প্রথম সকাল হতবাক করেছে। রাজাকার পুত্র এবং মুক্তিযোদ্ধাদের একসাথে বিজয় দিবস উদযাপন করছে। আর আমরা দেখছি। কি সুন্দর সকাল হওয়ার কথা ছিল আজ তাই না!!’
তার পোস্টটি দেখে সুরকার আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল মন্তব্য করেন-‘শহীদ বীর আলতাফ মাহামুদের কন্যা কাঁদছে, কেন? সবইতো আগের মতোই আছে!’ সেখানে একজন তাকে প্রশ্ন করেন-‘আগের মতই আছে? পূর্ব পাকিস্তানের মতন? তাহলে ‘বাংলাদেশ’ নামটা হয়েছিল কোন দুঃখে?’
উত্তরে বুলবুল লেখেন- ‘আমি এখন যুদ্ধরত, জিতলে কথা হবে, অনেক।’
শোভাযাত্রায় উপজেলা পরিষদ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, আওয়ামী লীগ, প্রেসক্লাব, মানবাধিকার সংস্থাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা অংশ নেন। মাসুদ সাঈদীর সঙ্গে সেদিন শোভাযাত্রায় ছিলেন জিয়ানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউ্নেও) জাকির হোসেন , উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম মতিউর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. বেলায়েত হোসেন, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম মিজানুল হক, উপজেলা জেপির সভাপতি আসাদুল কবির তালুকদার ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মৃধা মো. মনিরুজ্জামান।
সাইদীপুত্র মাসুদ তাঁর ফেসবুক আইডিতে শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়ার ছবি আপলোড করে লিখেছেন-“মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ জিয়ানগর উপজেলা কমান্ড কাউন্সিলের সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা ও পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠান। পুরস্কার নিচ্ছেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের বর্তমান উপজেলা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব বেলায়েত হোসেন, বর্তমান উপজেলা ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বপন কুমার রায়, সাবেক কমান্ডার মাহবুবুল আলম হাওলাদার (আমার আব্বার মামলার বাদী ও প্রথম স্বাক্ষী), মুক্তিযোদ্ধা খলিলুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা দেলোয়ার ফকির।”
রাজকারপূত্রের হাত থেকে সংবর্ধনা নেয়ায় মুক্তিযোদ্ধাদেরও ভর্ৎসনা করেন অনেকে। পোস্টটিতে অরুনাভ পোদ্দার নামের একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী মন্তব্য করেন- ‘মুক্তিযোদ্ধারা যারা পুরস্কার নিলেন এই ধিকৃত রাজাকার পুত্রের কাছ থেকে তাদের উদ্দেশ্যে…. মেরুদণ্ড খুলে এসে পুরস্কার নিয়েছেন তো? যত সব মেরুদণ্ডহীনের দল। সর্বশেষ মুক্তিযোদ্ধা যিনি আবার সাঈদীর মামলার সাক্ষী ছিলেন!! ধিক্….ধিক্। এত লোভ আপনার।। কাদের মোল্লার ভি চিহ্নের জবাব গণজাগরণ মঞ্চ দিয়েছিল….এই মাসুদ সাঈদীর জবাব কি বাঙালিরা দেবে?”
–