আয়না২৪ নিজস্ব প্রতিবেদন
সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং এর জগতে ফেসবুক এখন অনেক জনপ্রিয়। বর্তমানে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ১.৭ বিলিয়নের উপরে।
লন্ডন-ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা যুক্তরাষ্ট্রে পাঁচ কোটিরও বেশি ফেসবুক ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহার করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছে। এই অভিযোগ উঠার পর এবিষয়ে অনেকেই প্রশ্ন করতে শুরু করেছেন।
সিএ নিয়ে সমালোচনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের জনপ্রিয়তা নিয়েও হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে। শুরু হয়েছে হ্যাশট্যাগ ডিলিটফেসবুক আন্দোলন।
তাছারা মতভিন্নতাসহ নানা কারণে বাংলাদেশে অনেকের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট সাময়িকভাবে বন্ধ হচ্ছে।
প্রতিদিন অসংখ্য ছবি ফেসবুকে আপলোড হয় এবং প্রায় অধিকাংশ সক্রিয় ফেসবুক ইউজারই বিভিন্ন এ্যাপলিকেশন, গেমস এবং কুইজ ব্যবহার করেন। এসব তথ্যের উপর ভিত্তি করে বিজ্ঞাপনদাতারা এই মাধ্যমটিতে আসেন তাদের পন্য বা সেবার প্রচার চালাতে। ব্যক্তিগত তথ্যের উপর বিচার বিশ্লেষণ চালিয়ে তারা ফেসবুক ব্যবহাকারীদের টার্গেট করে বিজ্ঞাপন প্রচার করেন। এর মাধ্যমে বিজ্ঞাপনদাতা ও ফেসবুক উভয়েই অর্থ আয় করে থাকে।
কিন্তু বড় প্রশ্ন হচ্ছে- ফেসবুক কি ধরনের তথ্য শেয়ার করে থাকে, কাদের সাথে করে এবং ফেসবুক যাতে সেটা করতে না পারে সেজন্যে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের নিজেদের কি করার আছে?
আপনি দেখতে হলিউডের কোন তারকার মতো? জানতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন।
মনে রাখবেন এধরনের একটি কুইজে ক্লিক করলেই কিন্তু আপনার ব্যক্তিগত তথ্য ওই লিঙ্কের লোকেরা দেখে ফেলতে পারেন।
বলা হয়ে থাকে, ফেসবুকের এমন একটি কুইজ যার শিরোনাম ছিলো ‘দিস ইজ ইয়্যুর ডিজিটাল লাইফ’ সেখান থেকে ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা লাখ লাখ মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করেছে।
এধরনের অনেক কুইজে আশ্বস্ত করার চেষ্টা চলে যে সেখানে ক্লিক করলেও আপনার ব্যক্তিগত তথ্য নিরাপদ থাকবে।
কিন্তু ড. বের্নাল মনে করেন বহু মানুষ যে ফেসবুক ছেড়ে চলে যাবে সেরকমটা হওয়ার সম্ভাবনা কম। “বিশেষ করে যারা মনে করেন ফেসবুক তাদের জীবনেরই অংশ, তারা ফেসবুকে থেকেই যাবেন,” বলেন তিনি।
কিভাবে আমার ফেসবুক নিরাপদ রাখতে পারি
১। একাধিক অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধ, একই ব্যবহারকারীর একাধিক অ্যাকাউন্ট খোলা আগেও নিষিদ্ধ ছিল। তবে খুব একটা কড়াকড়ি ছিল না। এখন এ বিষয়ে ফেসবুক খুব কঠোর নিয়ম মেনে চলছে। ফলে একাধিক অ্যাকাউন্ট খোলার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে আমাদের।
২। ব্যবহারকারীদের বিনামূল্যে টেক্সট মেসেজ নোটিফিকেশন সুবিধা প্রদান করছে ফেসবুক। যখন কোনো কম্পিউটার অথবা মোবাইল থেকে আপনার অ্যাকাউন্টে ঢোকা হবে তখন টেক্সট মেসেজ নোটিফিকেশন আপনার কাছে যাবে। এরপর বুঝতে পারবেন কে আপনার অ্যাকাউন্টে লগইন করছে।
৩।অনেক সময় অপ্রয়োজনীয় কিছু বিষয় চলে আসে যেমন- see who have visited your profile। এই ধরনের কোনকিছুতে আপনি ক্লিক করবেন না। এতে ক্লিক করলে আপনার প্রোফাইল এ আপনাআপনি তাদের কিছু মেসেজ যুক্ত হয়ে যাবে। এগুলকে সবসময় এড়িয়ে চলুন।
৪। আপনার অ্যাকাউন্ট এর নিরাপত্তার জন্য অনেক শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে পারেন। small letter, Capital letter এবং নাম্বার মিলে আপনি আপনার পাসওয়ার্ড তৈরি করতে পারেন। সবচেয়ে ভাল হয় যদি !@#৳% এই গুলো পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। আপনি অন্তত ১০-১৫ অক্ষরের মধ্যে পাসওয়ার্ড দিতে পারেন।
৫। আপনার পিসির জন্য কিলগার অথবা রিমোট অ্যাকসেস ট্রোজান [জঅঞ] খুবই বিপজ্জনক। এগুলোর হাত থেকে বাঁচার জন্য সঠিক অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করুন।
৬। সাইবার ক্যাফে বা কোনো বন্ধুর কম্পিউটারে ফেইসবুক লগ ইনের সময় কখনো ‘কিপ মি লগড ইন’ বা ‘সেভ পাসওয়ার্ড’-এ ক্লিক করা যাবে না। # আপনার বন্ধুরা ফেসবুক ডিক্রিপটর সফটওয়্যার ইনস্টল করে থাকতে পারে, যা আপনার ফেসবুক লগ ইনের সব তথ্য স্টোর করবে। তাই এই সফটওয়্যারের বিষয়ে আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে। কারণ আপনার বন্ধুরা এবং সাইবার ক্যাফে কখনো আপনাকে তা জানাবে না।
৭। একাধিক সাইটের জন্য একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা যাবে না। যেমন ফেসবুক, টুইটার ও গুগল অ্যাকাউন্টের জন্য ভিন্ন ভিন্ন পাসওয়ার্ড রাখতে হবে। একই পাসওয়ার্ড হলে কেউ আপনার যে কোনো একটি অ্যাকাউন্টে ঢুকতে পারলে সেই পাসওয়ার্ড দিয়ে অন্যগুলোতেও ঢুকতে পারবে। থার্ড পার্টি অ্যাপ নিয়ে সাবধান: আপনার ডিভাইস বা ফেইসবুকের ছাড়া অন্য কারও তৈরি অ্যাপ ব্যবহার করে ব্যক্তিগত তথ্যে প্রবেশ ঠিক হবে না।
৮। আপনি যখন কোন স্ট্যাটাস দিবেন অথবা মেসেজ আদান প্রদান করবেন তখন অবশ্যই ভাষার দিকে একটু বেশি নজর দিবেন। কারন কেউ যদি আপনার নামে রিপোর্ট করে তো আপনার খবর আছে। আপনার অ্যাকাউন্টটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।
৯। প্রতিদিন ২০ টির বেশি ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠানো যাবে না। যদি আপনি বেশি করে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠান তাহলে আপনার অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
১০। মনে রাখবেন পর্ণগ্রাফির কারণে আপনার অ্যাকাউন্ট ব্যান্ড হয়ে যেতে পারে। এ ধরণের অবৈধ কাজ করলে কোন প্রকার নোটিশ ছাড়াই আপনাকে ব্যান্ড করে দেবে ফেসবুক।
এ বিষয়গুলোর প্রতি লক্ষ্য রেখে ফেসবুক ব্যবহার করলে আপনার প্রিয় অ্যাকাউন্টটি বন্ধ হওয়ার সম্ভবনা থাকবে না। আপনি অনেক আনন্দের সাথে কোন ভয় ছাড়াই ব্যবহার করতে পারবেন ফেসবুক।
কিছু দিনের মধ্যেই আমরা ফেসবুক এর খুঁটিনাটি নিয়ে ২য় পর্ব তৈরি করবো। আমরা আশা করি আপনারা আমাদের সাথেই থাকবেন। আর হা এই পোস্ট টি বেশি বেশি শেয়ার করুন আপনার বন্ধুদের সাথে, আপনার একটি মাত্র ক্লিক এ সেও তার ফেসবুক নিরাপদ রাখতে পারে। ধন্যবাদ।