আয়না২৪ প্রতিবেদন
নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন নিয়ে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে বিএনপি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন দলটি প্রধান খালেদা জিয়া। বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আজ বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমকে এ তথ্য দেন। তিনি বলেন, ‘চেয়ারপারসন ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন। মহাসচিব ও স্থায়ী কমিটির সদস্যরা প্রতিনিধি দলে থাকবেন।’
রিজভী জানান, বিএনপির প্রতিনিধিদলের এই তালিকা আজ দুপুরে বঙ্গভবনে নিয়ে পৌছে দেন দলের সহ দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, মুনির হোসেন ও বেলাল আহমেদ। তালিকা সম্বলিত মহাসচিবের চিঠি নিয়ে বঙ্গভবনে যান তাঁরা। রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব বরাবর ওই চিঠি পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত,সংসদের বাইরে থাকা বিএনপির সঙ্গে আলোচনার মধ্য দিয়েই আগামী ১৮ ডিসেম্বর বিকাল সাড়ে ৪ টায় এ সংলাপ শুরু হবে।
বিএনপির প্রতিনিধি দলের তালিকায় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়াও স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, তরিকুল ইসলাম, আবদুল মঈন খান, মাহবুবুর রহমান, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর নাম রয়েছে বলে জানা গেছে।
বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ফেব্রুয়ারিতে।এরপরই দায়িত্ব নেবে নতুন ইসি। ওই কমিশনের অধীনেই ২০১৯ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
২০১২ সালে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে ‘সার্চ কমিটির’ মাধ্যমে যেভাবে ইসি গঠন করা হয়েছিল, এবারও একই পদক্ষেপ নিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
এর আগে গত ১২ ডিসেম্বর বঙ্গভবন থেকে চিঠি পাঠিয়ে সংলাপের জন্য বিএনপির কাছে ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নাম চাওয়া হয়।
চিঠিতে বলা হয়, “গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদে দেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অনধিক চারজন কমিশনার নিয়োগের বিষয়ে ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে। যেহেতু নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শীঘ্রই উত্তীর্ণ হচ্ছে, সেহেতু বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত গ্রহণ সাপেক্ষে নির্বাচন কমিশন গঠনে মহামান্য রাষ্ট্রপতি আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন। সেই লক্ষ্যে আগামী ১৮ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে ৪টায় বঙ্গভবনে মহামান্য রাষ্ট্রপতি আপনার দলের নেতৃবৃন্দের সাথে মত-বিনিময়ের সানগ্রহ সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন।”
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গত নভেম্বরে এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন ইসি ও সার্চ কমিটি গঠন নিয়ে তার দলের ১৩ দফা প্রস্তাব তুলে ধরেন, যার মূল কথা ছিল ‘সব নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল, অথবা স্বাধীনতার পর প্রথম জাতীয় সংসদ থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময়ে জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেছে এমন সকল রাজনৈতিক দলের’ মতৈক্যর ভিত্তিতে নতুন ইসি গঠন করতে হবে।
রিজভী ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান রুহুল আলম চৌধুরী গত ৬ ডিসেম্বর বঙ্গভবনে গিয়ে খালেদা জিয়ার ওই প্রস্তাবের বিস্তারিত দিয়ে আসেন।
এদিকে আওয়ামী লীগের নেতারা খালেদা জিয়ার ওই অবস্থানের সমালোচনা করেছেন। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “উনার প্রস্তাব উনি দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতিকে বলুক। এটা রাষ্ট্রপতি ভালো বুঝবেন, উনি কী পদক্ষেপ নেবেন। রাষ্ট্রপতি যে পদক্ষেপ নেবেন সেটাই হবে। এখানে আমাদের বলার কিছু নেই।”