বরিশাল প্রতিনিধি :
মা ইলিশ নিধন বন্ধে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে রোববার দিবাগ মধ্যরাতে। এবারের নিষেধাজ্ঞার সময়কালে বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় মৎস বিভাগের নেতৃত্বে চলেছে একটানা ২২ দিনের অভিযান। আর এ ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নদীতে মা ইলিশ শিকারের দায়ে বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় ৫৮০ জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি আদায় করা হয়েছে ১৬ লাখ ১৯ হাজার টাকা জরিমানা। অভিযান চালিয়ে গেল ২২ দিনে উদ্ধার করা হয়েছে ১০ মেট্রিকটন ইলিশ ও ৪০ দশমিক ৩১ লাখ মিটার অবৈধ জাল।
বরিশাল বিভাগীয় মৎস কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক আজিজুল হক এই তখ্য দিয়েছেন।
তিনি জানান, গত ১ অক্টোবর থেকে ২২ অক্টোবর রোববার মধ্যরাত পর্যন্ত বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় মৎস অধিদপ্তরের নেতৃত্বে মোট দু্হই জার ৯২ টি অভিযান ও ৯৬৮ টি ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হয়েছে। যার অনুকুলে ৭০৫ টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পাশাপাশি এ পর্যন্ত বেশ কিছু নৌকা ও ট্রলারও জব্দ করা হয়েছে।
প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, চলতি বছর গত বছরের থেকে কয়েকগুণ বেড়েছে অভিযান, ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা , আটক, জেল-জরিমানার পরিমাণ।
গত বছর বরিশাল বিভাগে দণ্ড দেওয়া হয় ২৭৩ জন জেলেকে। এবছর তা বেড়ে দাড়িয়েছে ৫৮০ জনে। পাশাপাশি গত বছরের থেকে এ বছর ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা বেশি জরিমানা এবং ১০ লাখ ৪০ হাজার মিটার অবৈধ জাল ও ৬ মেট্রিকটন বেশি ইলিশ মাছ জব্দ করা হয়েছে।
গত বছরের থেকে এ বছর ২২৬ টি অভিযান ১৩ টি ভ্রাম্যমান আদালত ও ৩৪৫ টি মামলা বেশি দায়ের করা হয়েছে। গত বছর অভিযান হয়েছিলো ১ হাজার ৮৬৬ টি, মোবাইল কোর্ট হয়েছিলো ৯৫৫ টি ও মামলা হয়েছিলো ৩৬০ টি।
অপরদিকে বরিশাল বিভাগের মধ্যে এ বছর সবচেয়ে বেশি ৬৪৮টি অভিযান পরিচালনা করেছে বরিশাল জেলা। যেখানে সবচেয়ে বেশি আটক জেল হয়েছে ৩৩২ জন।
এ বিষয়ে জেলা মৎস্য কার্যালয়ের ইলিশ কিষয়ক কর্মকর্তাবিমল চন্দ্র দাস বলেন, মূলত নদীতে মাছ বেশি থাকায় অসাধু জেলেরা নদীতে ইলিশ শিকারে নামে। নি এবছর মৎস বিভাগ ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সুষ্ঠ ও সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালাতে পারায় আইন অমান্যকারীদের বেশি করে আটক করাও সম্ভব হয়েছে।
আর জেলা মৎস কর্মকর্তা ড. তপন কুমার পাল বলেন, মৎস বিভাগের প্রতিটি সদস্য ও আইন-শৃ্ঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্সগে সমন্বয় করে নদী পাহারা দিয়েছে। জনপ্রতিনিধি থেকে সাধারন মানুষ ইলিশ নিধন বন্ধে সহায়তাও করেছে। জাতীয় মাছ ইলিশ রক্ষায় সর্বোচ্চ নজরদারী রাখা হয়েছে। পাশাপাশি যেখান থেকেই তথ্য পাওয়া গেছে সেখানেই অভিযান চালানো হয়েছে।
তিনি বলেন, অভিযান চালাতে গিয়ে বিভিন্ন সময়ে নানান সমস্যায় পড়লেও আইন অমান্যকারীদের কাউকে ছাড় দেয়া হয়নি। তবে এ সম্পদ রক্ষায় সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। মনে রাখতে হবে জাটকা নিধন বন্ধ ও প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ শিকার বন্ধের কারনে গত কয়েকবছর ধরে দেশে ইলিশের পরিমান বেড়েছে।
মৎস অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক মো. বজলুর রশিদ বিভাগীয় এই অভিযানকে সফল বলে দাবি করে বলেন, আগামী ১ নভেম্বর থেকে জাটকা বিরোধী অভিযান শুরু হচ্ছে যা চলবে ৩০ জুন পর্যন্ত। জাটকা বিরোধী অভিযান যদি সফল হয় তবে আগামীতে ইলিশের পরিমাণ আরো বাড়বে।