আয়না২৪ প্রতিবেদন
ইলিশের প্রজনন মৌসুম সামনে রেখে আজ শনিবার মধ্যরাত থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন বঙ্গোপসাগর ও দেশের সব নদ-নদীতে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে মাছ আহরণ, বিপণন, পরিবহন ও বিক্রির ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। উপকূলের সমুদ্রগামী শত শত ট্রলার ও নৌকা শনিবার দুপুর থেকেই বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা জেলার মৎস্য বন্দরের ঘাটে ফিরে আসতে শুরু করেছে।
মত্স্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের জারি করা আদেশে বলা হয়, ‘প্রটেকশন অ্যান্ড কনজারভেশন অব ফিশ অ্যাক্ট’ ১৯৫০ অনুযায়ী ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম ১ থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন সারা দেশে ইলিশ মাছ আহরণ, পরিবহন, মজুত, বাজারজাতকরণ বা বিক্রি নিষিদ্ধ। সরকারের এই আদেশ অমান্য করে ইলিশ মাছ আহরণ ও বিক্রি করলে এক বছর থেকে সর্বোচ্চ দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড বা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ড দেওয়া হবে।
মৎস্য বিভাগ বলছে, মা ইলিশ রক্ষায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরুর আগে প্রাথমিক প্রস্তুতি হিসেবে মৎস্য বিভাগ ও বিভাগের সংশ্লিষ্ট জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে গঠিত টাক্সফোর্সের সভা করে এই কর্মসূচি সফল করার ব্যাপারে নানা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মাইকিং , ব্যানার, লিফলেট বিতরণ, মৎস্যজীবী সমিতিগুলোর সঙ্গে মতবিনিময়সহ নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে যাতে কেউ বেআইনিভাবে মাছ শিকার না করে এজন্য নানা সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। এছাড়া আগামী ২২ দিন বিভাগের প্রত্যেকটি উপজেলায় কোস্টগার্ড, নৌপুলিশের সমন্বয়ে ভ্রাম্যমান টহল দল নদ-নদীতে সার্বক্ষণিক পাহারায় থাকবে। এছাড়া প্রত্যেক উপজেলায় একজন নির্বাহী মেজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একটি ভ্রাম্যমান আদালত কাজ করবে।
এদিকে নিষেধাজ্ঞা শুরু হওয়ার আগের দিন শনিবার দুপুর থেকেই বরগুনার পাথরঘাটা, পটুয়াখালীর মহিপুর, আলীপুর, বরগুনার নলী বন্দর, কালমেঘায় কয়েক হাজার সমুদ্রগামী ট্রলার ফিরে এসেছে। পাথরঘাটা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরি বলেন, আমাদের দেশের জেলেরা নিষেধাজ্ঞা পালনের ব্যাপারে খুবেই আন্তরিক।
জাটকা সংরক্ষণ, জেলেদের পুনর্বাসন ও গবেষণা প্রকল্পের সাবেক পরিচালক ও জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ইলিশ, সদর দপ্তর) জাহিদ হাবিব আয়না২৪ -কে বলেন, ‘এবার নিষেধাজ্ঞা চলাকালে জেলেরা যাতে দুর্দশায় না পড়েন, সে জন্য উপকূলের ১৪ জেলার ৭৬ উপজেলার ৩ লাখ ৫৬ হাজার ৭২৩ জন ইলিশ ধরা জেলেকে ৪০ কেজি করে ভিজিএফ সহায়তার চাল দেওয়ার জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব কার্ডধারী জেলেরা এই সহায়তা পাবেন। এখনো এই সহায়তার প্রস্তাব অনুমোদন হয়নি। তিনি বলেন, সাগরে যাতে ভিনদেশি কোনো জেলে অনুপ্রবেশ করতে না পারে সেজন্য নৌবাহিনীর সদস্যদের গভীর সাগরে টহলে নামানো হয়েছে।