• Home  / 
  • বিশ্ব  / 

চুক্তিতে কিশোরীদের বিয়ে করতে এসে আটক হলেন ৮ আরব শেখ

সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৭
Spread the love

আয়না২৪ ডেস্ক

 কিশোরীদের চুক্তিতে বিয়ে করতে ভারতে  এসে  আটক হলেন  আরবের ৮ শেখ। এরা সবাই বৃদ্ধ এবং বয়স ৭০ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে।  এদের মধ্যে আবার একজন দৃস্টিপ্রতিবন্ধীও  রয়েছেন। ভারতের হায়দ্রাবাদ থেকে এই আট ‘আরব শেখ’কে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির পুলিশ। অতিথিশালা ও বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ওমানের ৫ জন  এবং ৩ জন কাতারের নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের মধ্যে দুইজনের বয়স ৮০’র ঘরে, হাঁটেন লাঠির সহায়তায়। এদের সঙ্গে আটক করা হয়েছে মুম্বাইয়ের প্রধান কাজী ফরিদ আহমেদ খানকেও।- খবর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
 
এই কাজী হায়দ্রাবাদে চুক্তিভিত্তিক বিয়ে করান, ৫০ হাজার রুপির বিনিময়ে বিয়ের সনদ দেন। গ্রেপ্তারকৃত ওমানের নাগরিকরা হলেন, আল মায়াহ আলি ইসা, আল সালেহি তালিব হুমেইদ আলি, আল ওবাইদানি জুমা শিনুন সুলাইমান, আল সালেহি নাসের খালিফ হামেদ, আল কাশিমি হাসান মাজুল মোহাম্মদ এবং কাতারের নাগরিকরা হলেন ওমার মোহাম্মদ সিরাজ আব্দাল রহমান, হামাদ জাবির ও আল-কুয়ারি ও সাফেলদিন মোহাম্মাদ সালিহ।
এছাড়াও ভুয়া বিয়ে পড়ানোর জন্য সম্প্রতি দুইজন স্থানীয় কাজীকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ফালাকনুমা ও চান্দ্রায়ানগুত্তা এলাকায় বাসা কাম গেস্টহাউজ সিল করে দিয়েছে পুলিশ। ১৭ আগস্ট অপ্রাপ্তবয়স্ক বালিকাকে বিয়ে করা এক ওমান নাগরিককে গ্রেপ্তারের পরেই বড় আকারে এই অভিযান শুরু করে পুলিশ।
 
সম্প্রতি হায়দ্রাবাদ বিমানবন্দরে মধ্যপ্রাচ্য থেকে আসা শেখদের পর্যবেক্ষণ করে ভারতীয় পুলিশ। এমনই আটজন বিভিন্ন বাসা বা গেস্টহাউজে উঠলে তাদের অনুসরণ করে পুলিশ। তখন পুলিশ দেখে, নারীসহ বেশ কয়েকজন দালাল তাদের কাছে মেয়েদের নিয়ে আসে। পর্যাপ্ত তথ্য প্রমাণ হাতে পাওয়ার পরেই গত রাতে পুলিশ অভিযান শুরু করে। বেশ কয়েকটি গেস্ট হাউজে অভিযান চালানোর সময় তারা ২০ জনেরও বেশি অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের ‘সাক্ষাৎকার’ নিচ্ছিলো বলে জানায় পুলিশ কমিশনার মাহেন্দার রেডি।
 
সাউথ জোন পুলিশ চান্দ্রায়ানগুত্তা’র প্রাইভেট গেস্টহাউজে অভিযান চালিয়ে একেবারে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করে ওমানের নাগরিক আল মায়াহি আলি ইসাকে। তার কাছে ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরীকে বিয়ে দেওয়া হচ্ছিলো। 
 
ফালাকনুমা বিভাগের সহকারী কমিশনার অব পুলিশ মোহাম্মদ তাজুদ্দিন আহমেদ বলেন, তারা কিশোরীদের বাছাই করছিলো। দালালরা তাদের দেখানোর জন্য গেস্টহাউজে মেয়েদের নিয়ে আসে। তিনজন দালাল ও তিন কাজীসহ তাদের (৮ জন শেখ) গ্রেপ্তার করা হয়। শেখরা কোন মেয়েকে বিয়ের জন্য বাছাই করলে তাদের অভিভাবকদের ১ লাখ রুপি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় দালালরা, নিজেরা রাখে ২ থেকে ৩ লাখ রুপি। 
 ভারতের হায়দ্রাবাদ ও এর আশপাশ এলাকায় বিদেশি পর্যটকদের স্বল্প সময়ের জন্য চুক্তিতে কিশোরী বা অল্প বয়সী মেয়েদের বিয়ে দেয়ার একটি সংস্কৃতি চালু রয়েছে। আর এই বিয়ের পাত্র হলো আরব, মধ্যপ্রাচ্য থেকে আসা পয়সাওয়ালা শেখ’রা। খায়েশ মিটলে তল্পিতল্পা গুটিয়ে ফিরে যান নিজ দেশে। 
 
অভিযোগ আছে, এসব অপরাধের পিছনে সহায়তা করছে স্থানীয় কাজীরা। বিদেশিদের চাহিদা মেটাতে তারাই মেয়েদের টাকার বিনিময়ে বিয়ে দিচ্ছেন। সেই সঙ্গে টাকার লোভ দেখিয়ে বহু নাবালিকার অভিভাবককে প্রলুব্ধ করছে। এক্ষেত্রে বিয়ে হচ্ছে একটা চুক্তির মাধ্যমে। চার সপ্তাহের সেই চুক্তি মিটতেই স্ত্রীকে তালাকও দিয়ে দেওয়া হচ্ছে।