আয়না ২৪ ডেস্ক
কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে যশোরের শার্শার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে বৈধ ও অবৈধ উভয় পথেই ভারত থেকে গরু আসতে শুরু করেছে।অবৈধপথে বা চোরাচালানের মাধ্যমে কী পরিমাণ গরু আসছে তার হিসাব কারো কাছে না থাকলেও বৈধ পথের একটি হিসাব রয়েছে কাস্টমস ও ভ্যাট অফিসে। এ হিসেবে আগস্টের প্রথম সপ্তাহে এক হাজার ৬৭০টি গরু ও ৩২০টি ছাগল ভারত থেকে এসেছে। এ সংখ্যা দিন যত গড়াবে তত বাড়বে বলে কাস্টমস ও গরু ব্যবসায়ীরা ধারণা করেছেন।
আর কোরবানি উপলক্ষে শার্শা উপজেলায় ৫৪ হাজার পশু হৃষ্টপুষ্ট করা হচ্ছে। এর বিপরীতে উপজেলায় চাহিদা রয়েছে ৫৫ হাজার পশুর। যা চাহিদার তুলনায় বেশি। ভারতীয় গরু ব্যাপকভাবে আসা শুরু হওয়ায় চিন্তিত হয়ে পড়েছে দেশি খামারিরা। তারা ব্যবসায় লোকসানের আশংকা করছেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায় শার্শার ৩৫ কিলো মিটার এলাকাজুড়ে ভারতীয় সীমান্ত। এ সীমান্তের বেশিরভাগ স্থানে কাঁটাতারের বেড়া রয়েছে। তবে যে সব স্থানে বেড়া দেয়া নেই, সেই সব পথে অনায়াসে গরু হেটে বাংলাদেশে চলে আসছে। আর যে পথে কাঁটাতারের বেড়া সেখানে নেয়া হয় ভিন্ন কৌশল। গরু-ছাগল মাঠে চরানোর নাম করে গেট দিয়েই পার করে দেয়া হয়। এ জন্য বিজিবি ও বিএসএফকে দিতে হয় মোটা অংকের টাকা।
অন্য দিকে বৈধ পথে গরু, ছাগল ও ভেড়া আনার জন্য শার্শার কয়েকটি খাটালের অনুমোদন দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গত তিন বছর যাবত ভারতের সিদ্ধান্ত মোতাবেক বিএসএফের কঠোর হস্তক্ষেপে পুটখালী, অগ্রভুলট, দৌলতপুর ও গোগা এই চারটি খাটাল দিয়ে সীমিত সংখ্যক গরু আসত। বর্তমানে এ চিত্র পাল্টে গেছে। এখন প্রতিদিনই বৈধ ও অবৈধ পথে হাজার হাজার গরু আসা শুরু হয়েছে। যা দিন দিন বাড়বে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।
যশোরের নাভারণস্থ পশু শুল্ক করিডোর সূত্রে জানা যায়, গত ১ আগস্ট থেকে ৭ আগস্ট পর্যন্ত এক সপ্তাহে শার্শার বিভিন্ন করিডোর দিয়ে বৈধ প্রক্রিয়ায় এক হাজার ৬৭০টি ভারতীয় গরু ও ৩২০টি ছাগল এসেছে। এ অফিসে দায়িত্বরত কর্মকর্তা কাস্টমস পরিদর্শক সুমা মনি জানান, শার্শা সীমান্তের চারটি পশুহাট পুটখালী, অগ্রভুলট, দৌলতপুর ও গোগা দিয়ে যে পশু আসে নাভারন করিডোরে তার ভ্যাট আদায় করা হয়। হিসাব করে দেখা গেছে, বর্তমানে গড়ে প্রতিদিন ২ শ’ থেকে ২৫০টি ভারতীয় পশু সীমান্ত পার হয়ে এদেশে আসছে। ঈদ সামনে রেখে এ সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে তিনি ধারণা করছেন। এছাড়া সীমান্তের অবৈধ পথে গরু আসার সংখ্যা কারো কাছে নেই। শুধুমাত্র চোরাকারবারীরাই এ হিসাব বলতে পারবেন।
এদিকে, কোরবানি ঈদের আগে পশু আমদানি বেড়ে গেলে বা ভারত থেকে পশু আসা বৃদ্ধি পেলে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন দেশি খামারিরা। তারা যে আশা নিয়ে গরু মোটাতাজাকরণ করেছিলেন সেভাবে পশুর দাম না পাওয়ার আশংকা করছেন। এ কারণে তারা শার্শা সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় পশু আসা প্রতিরোধে বিজিবির কঠোর পদক্ষেপ দাবি করেছেন।
তবে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ জয়দেব কুমার সিংহ বলেন, কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে এ উপজেলায় বাহিরে থেকে কোন পশু আমদানী করা লাগবে না।