আয়না২৪ ডেস্ক
আগামী ২১ আগস্ট পূর্ণ সূর্যগ্রহণ হবে। বাংলাদেশসহ এশিয়ার দেশগুলো থেকে এই গ্রহণ দেখা যাবে না। দেখা যাবে ইউরোপ আমেরিকার অনেক দেশে। এই গ্রহণ দেখার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। পূর্ণ গ্রহণের সময় দিনদুপুরে ‘অন্ধকার’ নেমে আসার ঘটনায় অনেক মানুষের মধ্যে ভয়ের অনুভূতি সৃষ্টি হয়।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, কেবল মানুষ নয়— পশুপাখিরাও সূর্য গ্রহণের সময় অদ্ভুত আচরণ করে। বিভিন্ন সময়ে গবেষকরা পশুপাখিদের এসব আচরণ রেকর্ড করেছেন।
১২৩৯ সালের ৩ জুন হওয়া একটি পুর্ণ সূর্যগ্রহণের বর্ণনায় গবেষকরা বলেছেন, দুপুর বেলা যখন গোটা সূর্য আড়ালে চলে গিয়ে আধার নেমে এলো তখন প্রাণী এবং পাখিদের আচরণ বদলে গেল। তারা আতঙ্কিত হয়ে ছোটাছুটি শুরু করল। বনের পশুপাখিরা লোকালয়ের দিকে ছুটে আসতে লাগলো। পাখিরাও ভয়ে মানুষের বাড়িঘরে ঢুকে পড়ল। সূর্যগ্রহণ শেষ হবার পরেও স্বাভাবিক আচরণ ফিরে পেতে তাদের বেশ সময় লেগে গিয়েছিল। জ্যোতির্বিদ ক্রিস্টোফ ক্ল্যাভিয়াস লিখেছেন, পর্তুগালে ১৫৬০ সালের ২১ আগস্ট একটি পুর্ণ সূর্যগ্রহণের সময় আকাশ জুড়ে তারা ভেসে উঠেছিল। আকাশ থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে পাখিরা এসে মাটিতে আছাড় খেতে লাগলো। কেউ ধরতে গেলেও পাখিগুলো পালাচ্ছিল না। সাম্প্রতিক সময়ের অনেক ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন জ্যোতির্বিদরা। তারা জানিয়েছেন, গ্রহণ শুরু হবার পর গবাদি পশুরা রাত হয়ে গেছে মনে করে ঘরে ফিরে আসা শুরু করে। পাখিরা কলরব করে বাসায় ফিরে আসে। পানির মাছ ও অন্যান্য প্রাণীরাও তখন যে আচরণ করে সেই আচরণ তারা করে থাকে সাধারণত রাতের বেলায়। প্রখ্যাত গ্রহণ বিশেষজ্ঞ পিটার ডেন হারটগ ১৯৯৯ সালে হাঙ্গেরিতে গিয়েছিলেন পুর্ণ সূর্যগ্রহণ পর্যবেক্ষণ করতে। তিনি লক্ষ্য করেন গ্রহণ পূর্ণ হবার পর বাঁদুড়, চামচিকার দল ঝাঁকে ঝাঁকে বের হয়ে এসেছে। চিড়িয়াখানার প্রাণীরা দৌড়াদৌড়ি শুরু করে দেয়। আর কুমিরের দল অজ্ঞাত কারণে চরকির মতো ঘুরতে থাকে!
সূর্য গ্রহণের সময় পশুপাখিদের আচরণ নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে। প্রায় সব গবেষণায় বলা হয়েছে, ভর দুপুরে গ্রহণ হলেও পশুপাখিরা বিভ্রান্ত হয়। ‘পুরোপুরি রাত হয়ে গেছে’ এমনটাও তারা মনে করে না। আবার তখন দিন এটাও ভাবতে পারে না। ফলে আতঙ্কে তারা নানারকম অসংলগ্ন আচরণ করে। সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক।