আয়না২৪ প্রতিবেদন
বিশ্ব বরেণ্য চিত্রশিল্পী এসএম সুলতানের ৯৩তম জন্মবার্ষিকী আগামীকাল বৃহস্পতিবার। বরেণ্য এই গুণী শিল্পী ১৯২৪ সালের ১০ আগস্ট নড়াইল শহরের মাছিমদিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। জন্মবার্ষিকী পালন উপলক্ষ্যে জেলা প্রশাসন ও এস এম সুলতান ফাউন্ডেশন নড়াইল এসএম সুলতান স্মৃতি সংগ্রহশালায় বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- শিল্পীর কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ, কোরআন খানি, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল, আলোচনাসভা, চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ। বাঙালি জাতিসত্তার গভীরতম অন্তরভূমিতে যে অমিত শক্তি সুপ্ত ছিল সহস্র বছর ধরে তারই নান্দনিক শৈল্পিক প্রকাশের অন্যতম সূর্যসারথি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চিত্রশিল্পী এস এম সুলতান।
তার বাবার নাম মেছের আলী, মা মাজু বিবি। রাজমিস্ত্রি পিতা মেছের আলীর নান্দনিক সৃষ্টির ঘষামাজার মধ্য দিয়ে ছোট বেলার লাল মিঞার (সুলতান) চিত্রাঙ্কনে সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ হয়। ৭০ বছরের জীবনে তিনি তুলির আঁচড়ে দেশ, মাটি, মাটির গন্ধ আর ঘামেভেজা মেহনতী মানুষের সাথে নিজেকে একাকার করে সৃষ্টি করেছেন পাটকাটা, ধানকাটা, ধানঝাড়া, জলকে চলা, চরদখল, গ্রামের খাল, মৎস শিকার, গ্রামের দুপুর, নদী পারাপার, ধানমাড়াই, জমি কর্ষণে যাত্রা, মাছধরা, নদীর ঘাটে, ধানভানা, গুন টানা, ফসল কাটার ক্ষণে, শরতের গ্রামীণ জীবন, শাপলা তোলার মত বিখ্যাত সব ছবি।
১৯৫০ সালে ইউরোপ সফরের সময় যৌথ প্রদর্শনীতে তার ছবি সমকালনী বিশ্ববিখ্যাত চিত্রশিল্পী পাবলো পিকাসো, ডুফি, সালভেদর দালি, পলক্লী, কনেট, মাতিসের ছবির সঙ্গে প্রদর্শিত হয়। সুলতানই একমাত্র এশীয় শিল্পী যার ছবি এসব শিল্পীদের ছবির সঙ্গে একত্রে প্রদর্শিত হয়েছে।
কালোত্তীর্ণ এই চিত্রশিল্পীকে ১৯৮২ সালে একুশে পদক, ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ সরকারের রেসিডেন্স আটির্ষ্ট হিসেবে স্বীকৃতি, ১৯৮৬ সালে চারুশিল্পী সংসদ সম্মাননা এবং ১৯৯৩ সালে রাষ্টীয়ভাবে স্বাধীনতা পদক প্রদান করা হয়। শিল্পী এসএম সুলতান ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় জেলার বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে ঘুরে যুদ্ধের ছবি আঁকেন।