আয়না২৪ প্রতিবেদন
চাঁদের আংশিক গ্রহণ ঘটবে আজ। অদ্ভুত আঁধারে ঢেকে যাবে চরাচর। আকাশ মেঘমুক্ত থাকলে বাংলাদেশের আকাশে দেখা যাবে এই মহাজাগতিক দৃশ্য। আবহাওয়া অধিদফতরের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ঢাকায় আজ দিবাগত রাত ১২টা ২০ মিনিটের দিকে ঘটবে আংশিক চন্দ্রগ্রহণ। গ্রহণের সূচনা হবে রাত ৯টা ৪৮ মিনিটে। গ্রহণ মোক্ষ হবে রাত ২ টা ৫২ মিনিটের দিকে।
এছাড়া ময়মনসিংহ বিভাগেও একই সময়ে গ্রহণ দেখা যাবে। চট্টগ্রাম বিভাগে দেখা যাবে রাত ১২টা ১৬ মিনিটের দিকে। সিলেট বিভাগে রাত ১২টা ১৪ মিনিটের দিকে। খুলনা বিভাগে রাত ১২টা ২৪ মিনিটের দিকে। বরিশালে রাত ১২টা ২০ মিনিটের দিকে। রাজশাহীতে রাত ১২টা ২১ মিনিটের দিকে। রংপুর বিভাগে রাত ১২টা ২৫ মিনিটের দিকে আংশিক চন্দ্রগ্রহণ দৃশ্যমান হবে।
চন্দ্র গ্রহণের কেন্দ্রীয় গ্রহণ হবে ভারত মহাসাগরের কোকো দ্বীপের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে। দীর্ঘ সময়ব্যাপী এই গ্রহণ শুধু বাংলাদেশে নয়, দেখা যাবে গোটা এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকার বিভিন্ন জায়গা থেকে। বাংলাদেশ থেকে পরবর্তী পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ দেখা যাবে ২০১৮ সালের ২৭ জুলাই।
মুলত: কক্ষপথ পরিভ্রমনের এক পর্যায়ে চাঁদ পৃথিবীকে মাঝখানে রেখে সূর্যের সঙ্গে এক সমতলে এবং এক সরলরেখায় চলে এলে সূর্যের আলো পৃথিবীতে বাঁধা পড়ে চাঁদে পৌঁছতে পারে না। তখনই ঘটে থাকে চন্দ্রগ্রহণ।
প্রতি পূর্ণিমাতেই চাঁদ পৃথিবীকে মাঝখানে রেখে সূর্যের বিপরীতে অবস্থান করে। কিন্তু প্রতি পূর্ণিমাসে চন্দ্রগ্রহণ ঘটে না। কারণ, চন্দ্রগ্রহণ ঘটতে হলে চাঁদ, সূর্য ও পৃথিবীকে অবশ্যই একই সরলরেখায় ও একই সমতলে থাকতে হবে। চাঁদের কক্ষতল পৃথিবীর কক্ষতলের সঙ্গে গড়ে ৫ ডিগ্রী ৯ মিনিট কোনে থাকে। ফলে প্রতি পূর্ণিমাতেই চাঁদ, সূর্য ও পৃথিবী একই সমতলে থাকলেও একই সরলরেখায় আসতে পারে না। চন্দ্রগ্রহণ ঘটতে হলে চাঁদ, সূর্য ও পৃথিবীকে অবশ্যই একই সরলরেখায় ও একই সমতলে থাকতে হবে।
চন্দ্রগ্রহণ সাধারণত দুই প্রকার, পূর্ণ এবং আংশিক চন্দ্রগ্রহণ। চাঁদ যখন পৃথিবীর প্রচ্ছায়ায় পুরোপুরি অবস্থান করে তখন পূর্ণ গ্রহণ ঘটে এবং যখন চাঁদ যখন পৃথিবীর প্রচ্ছায়ায় সম্পূর্ণ অবস্থান না করে কিছু অংশ উপচ্ছায়ায় থাকে তখন আংশিক গ্রহণ ঘটে। আদিকালে প্রাচীন মানুষরা ভাবতো গ্রহণ হলো দেবতাদের অভিশাপ। বর্তমান সময়েও কুসংস্কার ঘিরে আছে এক শ্রেণীর পশ্চাদপদ মানুষকে।
দেখা যায়, গ্রহণ চলাকালীন সময়ে তারা খাবার গ্রহণ করে না। বাইরে বের হয় না। গর্ভবতী রমনীরা বিবিধ বিধিনিষেধ মেনে চলে। কিন্তু বাস্তবে গ্রহণের সঙ্গে এসবের কোনো সম্পর্ক নেই। এটি প্রকৃতির অমোঘ নিয়মের স্বাভাবিক ঘটনা। জোয়ার-ভাঁটার পরিবর্তন ছাড়া এর অন্য কোন প্রভাব নেই।