বরিশাল প্রতিনিধি
স্বামীকে আটকে রেখে এক গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সুমন মোল্লাকে সোমবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এর আগে তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
আদালত সূত্র জানায়, সোমবার বিকেলে সুমন মোল্লাকে বরিশাল মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। পরে বিচারক মো. শিহাবুল ইসলামের কাছে ধর্ষণের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন সুমন মোল্লা।
ভুক্তভোগী পরিবার জানায়, বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার বেতাল গ্রামের অটোচালক এক যুবক গত বছরের নভেম্বরে চট্টগ্রামের এক মেয়েকে বিয়ে করেন। সপ্তাহখানেক আগে ওই যুবক স্ত্রীকে নিয়ে বানরীপাড়ার সলিয়াবাকপুর ইউনিয়নের বেতাল গ্রামে তাঁর নানা বাড়িতে বেড়াতে আসেন। এসময় বানারীপাড়া উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সুমন মোল্লা দলবল নিয়ে তাঁর কাছে চাঁদা দাবি করে।
গত শনিবার সন্ধ্যায় ওই যুবক তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ির সামনে ঘুরতে বের হলে ছাত্রলীগ সভাপতি সুমন মোল্লা ও তার সহযোগিরা দুজনকে ধরে নিয়ে একটি বাড়িতে আটকে রেখে প্রথমে তাদের বিয়ের নিবন্ধন (কাবিন) দেখতে চায়। পরে ওই যুবকের স্ত্রীকে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে।
পরে এলাকার লোকজন ও যুবকটির স্বজনেরা বিষয়টি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জানালে চেয়ারম্যান ঘটনাটি বানারীপাড়া থানার পুলিশকে জানান।খবর পেয়ে রোববার সকাল ১১টার দিকে ওই যুবক ও তাঁর স্ত্রীকে উদ্ধার করে। ওইদিন বিকেলেই ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে বানারীপাড়া থানায় সুমন মোল্লাকে প্রধান আসামি করে এবং তার সহযোগী আরো ৪ থেকে ৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলা দায়েরের পর পুলিশ রোববার বিকেলে বরিশাল নগরীতে অভিযান চালিয়ে প্রধান আসামি ছাত্রলীগ নেতা সুমন মোল্লাকে গ্রেপ্তার করে।
বানারীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, আদালতের বিচারক মো. শিহাবুল ইসলামের কাছে ধর্ষণের কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন সুমন মোল্লা। এরপর তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক। এসময় ধর্ষণের শিকার ওই গৃহবধূর স্বামী ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্য নেওয়া হয়। আর গৃহবধূকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়।
এবিষয়ে বরিশাল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আ. রাজ্জাক বলেন, গৃহবধূ ধর্ষণের মামলা দায়ের হওয়ার পর বিষয়টি জেলা ছাত্রলীগ নেতাদের নজরে এলে তাঁরা কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে পরামর্শ করে সুমন মোল্লাকে সংগঠন থেকে বহিস্কার করেছেন।’