আয়না২৪ ডেস্ক
চারদিকে সবুজ অরণ্য। সবুজের মাঝে একটুকরো বসতি। অসংখ্য গাছ, বন্যজন্তু, পাখির সঙ্গে থাকতে হবে সাধারণ মানুষকে। চীনের লিউঝৌ শহরে কৃত্রিমভাবে এমনই অরণ্যনগরী তৈরির পরিকল্পনা করেছে দেশটি। লাগামহীন দূষণ থেকে মানুষকে রক্ষা এবং প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখতে এই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে দেশটির কর্মকর্তারা। তাঁদের ভাষ্য, ২০২০ সালের মধ্যে লিউঝৌ হয়ে উঠবে আক্ষরিক অর্থেই গ্রিন সিটি।
কেননা মারাত্মক দূষণের শিকার এই দেশের দুটি বড় শহর। বেইজিং, সাংহাই ধোঁয়ায় মুখ ঢেকেছে। পরিবেশ বাঁচাতে কোন পথে এগোনো যায় তার জন্য চীনে গবেষণার শেষ নেই। চীনাদের পরিকল্পনার ছাপ এবার দেখা যাবে লিউঝৌ শহরে। যেখানে ৩৪২ একর জায়গা জুড়ে তৈরি করা হচ্ছে অরণ্যনগরী। বনজঙ্গলের মাঝে থাকবে ৭০টি বহুতল ভবন।
এই শহরে বাড়ি, হাসপাতাল, হোস্টেল, স্কুল এবং অফিস থাকবে। লিউঝৌকে চিরসবুজ রাখতে আবাসনের মধ্যে থাকছে ৪০ হাজার বৃক্ষ। আর গোটা এলাকা জুড়ে ১০ লাখ গাছ। দক্ষিণ চীনের লিউঝৌ শহরকে এভাবে সাজাতে ইটালির স্টেফানো বোয়েরি নামে এক সংস্থা কাজ করছে। সংস্থার এক পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বিশ্বে এটাই প্রথম এমন উদ্যোগ। যা প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখতে কাজ করবে।
এই প্রকল্পের পোশাকি নাম গ্রিন সিটি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অরণ্যনগরীর সুফল প্রচুর। নয়া পরিকল্পনায় প্রতি বছর এই শহরে ১০ হাজার টন কার্বন ডাই অক্সাইড এবং ৫৭ টন দূষণ কম হবে। পাশাপাশি প্রচুর গাছ দেবে ৯০০ টন অক্সিজেন। ফলে শহরের তাপমাত্রাও অনেকটা নিয়ন্ত্রিত হবে।
বন্যপ্রাণীদের মুক্তাঞ্চল হতে চলেছে এই বন্যনগরী। পরিবেশবান্ধব শহর গড়ে তুলতে প্রতিটি বাড়ির ছাদে থাকবে সৌরশক্তির ব্যবস্থা। লিউঝৌ সূর্যরশ্মির শক্তিতে আলোকিত হবে। ইটালির মিলানে দুটি আবাসনে এমন ব্যবস্থা আছে। যেখানে পাঁচ একর এলাকায় গাছগাছালির সঙ্গে সহাবস্থান করছে কয়েকশ মানুষ। বেইজিং, সাহাংইয়ের দূষণ রুখতে দুই শহর থেকে প্রায় ২০ লাখ মানুষকে প্রত্যন্ত গ্রামে পাঠানো হয়েছে। ২০২০ সালের মধ্যে এই ভারসাম্য বজায় রাখাই হল এখন চীনের প্রধান লক্ষ্য।